শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

রাষ্ট্রধর্ম নিয়ে রিটের চূড়ান্ত শুনানি ২৭ মার্চ

প্রকাশের সময় : ১ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম Ñ সংবিধানে এ ঘোষণার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিটের চূড়ান্ত শুনানির জন্য আগামী ২৭ মার্চ দিন নির্ধারণ করেছেন হাইকোর্ট। গতকাল সোমবার বিচারপতি নাঈমা হায়দারের নেত্বত্বে তিন সদস্যর বেঞ্চ এ দিন নির্ধারণ করেন।
বেঞ্চের অপর সদস্যরা হলেন বিচারপতি কাজী রেজাউল হক ও বিচারপতি আশরাফুল কামাল। রিটকারীর পক্ষে ছিলেন জগলুল হায়দার আফ্রিক ও রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। পরে জগলুল হায়দার আফ্রিক বলেন, প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংক্রান্ত রুলের শুনানির জন্য বৃহত্তর বেঞ্চ ২৭ মার্চ দিন নির্ধারণ করেছেন। ১২ জন সিনিয়র আইনজীবীকে অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। তাঁদের মধ্যে কয়েকজনকে শুধু শুনবেন আদালত। মামলার বিবরণে জানা যায়, সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম অন্তর্ভুক্তির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৮৮ সালে হাইকোর্টে রিট করা হয়। এর পর থেকেই আবেদনটি হাইকোর্টে বিচারাধীন ছিল। পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের পরিবর্তন আনা হয়। কিন্তু রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের বিষয়টি বহাল থাকে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ফয়েজ আহমেদ রিটটি শুনানির জন্য হাইকোর্টে ২০১১ সালের জুন মাসে সম্পূরক আবেদন করেন। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ ওই বছরের ১১ জুন রুল জারি করেন। রুলে সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম অন্তর্ভুক্তির বিধান কেন অসাংবিধানিক ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। একই সঙ্গে সিনিয়র ১২ আইনজীবীকে অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। রুল জারি এবং রিট দায়েরের দীর্ঘদিন পর মামলাটি চূড়ান্ত শুনানির জন্য হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চে আসে। সাবেক প্রেসিডেন্ট এইচএম এরশাদের শাসনামলে ১৯৮৮ সালের ৫ জুন চতুর্থ জাতীয় সংসদে অষ্টম সংশোধনী পাস করা হয়। ওই সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে অনুচ্ছেদ ২ক যুক্ত হয়। এতে বলা হয়,‘প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, তবে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ অন্যান্য ধর্ম পালনে রাষ্ট্র সমমর্যাদা ও সম অধিকার নিশ্চিত করিবেন। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট এরশাদ ৯ জুন এতে অনুমোদন দেন। এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ওই বছরের আগস্ট মাসে ‘স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধ কমিটির’ পক্ষে সাবেক প্রধান বিচারপতি কামাল উদ্দিন হোসেন, কবি সুফিয়া কামাল, অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীসহ ১৫ বিশিষ্ট নাগরিক রিট আবেদন করেন। তাদের অনেকেই মারা গেছেন।
২০০৯ সালে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় এসে সংবিধান সংশোধনে সংসদীয় কমিটি রাষ্ট্রধর্ম রাখার সুপারিশ করে। পরবর্তীকালে ওই সুপারিশ অনুযায়ী সংবিধানে আনা হয় পঞ্চদশ সংশোধনী। এই সংশোধনীতে রাষ্ট্রধর্ম রাখার বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে একটি সম্পূরক আবেদন দাখিল করে রিটকারী পক্ষ। পঞ্চম সংশোধনী মামলার রায়ের আলোকে ১৯৭২ সালের সংবিধানের চার মূলনীতি জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও গণতন্ত্র সংবিধানে ফিরে এসেছে। আদি সংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ পুনর্বহাল হয়েছে। এটির সঙ্গে একটি নির্দিষ্ট ধর্মকে রাষ্ট্রধর্ম অব্যাহত রাখা হলে তা হবে সাংঘর্ষিক এবং পঞ্চম সংশোধনীর মামলার রায়ের পরিপন্থী।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন