সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

খ্রিষ্টান নয় বলে তুরস্ক কখনো ইইউ-র সদস্য হতে পারবে না : এরদোগান

ইউরোপীয় ইউনিয়ন একটি ক্রুসেডার জোট

| প্রকাশের সময় : ৪ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

আরটি : তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান বলেছেন, তার দেশ কখনোই ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্যপদ লাভ করতে পারবে না, কারণ তুরস্ক খ্রিষ্টান দেশ নয়। রোববার আংকারায় এক সমাবেশে সমর্থকদের উদ্দেশে বক্তৃতাকালে এরদোগান এ কথা বলেন। হুররিয়েত সংবাদপত্রে এরদোগানকে উদ্বৃত করে বলে, ইইউ তুরস্ককে সদস্যপদ দিচ্ছে না, কারণ এটি হচ্ছে পোপের কথা মেনে চলা ক্রুসেডার জোট।
১৯৮৭ সালে সদস্যপদের জন্য আবেদন করার পর থেকে তুরস্ক ইইউ-র অন্তর্ভুক্ত হওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু মানবাধিকার নিয়ে উদ্বেগ, সাইপ্রাস ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে মতানৈক্যের কারণে সদস্যপদ লাভের আলোচনা বারবার থেমে গেছে। সমাবেশে এরদোগান দাবি করেন যে মার্চে পোপের সাথে ইইউ প্রতিনিধিদের বৈঠক প্রমাণ করে যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন মৌলিকভাবে একটি খ্রিষ্টান সংগঠন।
এরদোগান তুরস্ক ও ইউরোপের মধ্যে ১৯৬৩ সালে স্বাক্ষরিত আংকারা চুক্তির কথা উল্লেখ করে বলেন, ইইউ দেশগুলোর সকল নেতা পোপের কাছে গিয়েছিলেন এবং নতঃমস্তকে তার কথা শুনেছেন। সমাবেশের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা এখন বুঝতে পারছেন তো কেন তারা ৫৪ বছর ধরে তুরস্ককে ইইউ-র সদস্য করেনি?
তিনি বলেন, পরিস্থিতি এখন স্পষ্ট, এটি হচ্ছে ক্রুসেডারদের একটি জোট। তিনি বলেন, ১৬ এপ্রিল হবে এটা মূল্যায়নের দিন।
এরদোগান যে বৈঠকের কথা উল্লেখ করেছেন তা ২৪ মার্চ অনুষ্ঠিত হয় যেদিন ইইউ-র ২৭টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা ভ্যাটিক্যানে পোপ ফ্রান্সিসের সাথে সাক্ষাৎ করেন। এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় ১৯৫৭ সালে স্বাক্ষরিত রোম চুক্তির ৬০ বছর পূর্তির ঠিক পূর্ব মুহূর্তে। বেলজিয়াম, ফ্রান্স, ইতালি, লুক্সেমবুর্গ, পশ্চিম জার্মানি ও নেদারল্যান্ডসসহ ৬টি দেশ এ চুক্তির মধ্য দিয়ে ইউরোপীয় অর্থনৈতিক সম্প্রদায় (ইইসি) প্রতিষ্ঠা করে যা ১৯৯১ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের জন্ম দেয়।
এরদোগান বলেন, ইইউ সম্পর্কে আমি যা বলছি ঠিক বলছি। তারা একটি বিরোধে আমাদের সাথে ১৪ বছর ধরে মিথ্যা কথা বলছে। তারা এখনো মিথ্যা বলে চলেছে।
তুরস্কে আসন্ন রেফারেন্ডাম নিয়ে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে তুরস্ক ও ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। এরদোগান তার ক্ষমতাসীন একেপি দলের সাথে বর্তমানে এ গণভোটে ‘হ্যাঁ’র পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন যা তুরস্কের প্রেসিডেন্টকে ডিক্রি জারি, জরুরি আইন ঘোষণা, মন্ত্রী ও রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তা নিয়োগ এবং পার্লামেন্ট ভেঙে দেয়ার ক্ষমতা দেবে।
এ পদক্ষেপের সমালোচকরা বলছেন, এ ভোটে জয়ী হলে দেশে ভারসাম্য ব্যবস্থা বিলুপ্ত হবে। এরদোগান এ গণভোটে জয়লাভের জন্য বিদেশে বসবাসরত ৫৫ লাখ তুর্কি নাগরিকের সমর্থনের উপর বিপুলভাবে নির্ভরশীল।
এদিকে তুরস্কের সাংবিধানিক গণভোট সমর্থন করে আয়োজিত কয়েকটি রাজনৈতিক সমাবেশ করতে না দেয়ায় তুরস্ক জার্মানি ও নেদারল্যান্ডের সাথে বাগযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে। এরদোগান দু’দেশকেই নাজিবাদের দায়ে অভিযুক্ত করেছেন। ইইউ-র প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক এরদোগানের মন্তব্যকে সম্পূর্ণরূপে বাস্তবতা বহির্ভূত বলে বর্ণনা করেছেন।
মার্চে এক অ্যাংলো-তুর্কি সম্মেলনে এরদোগান বলেন, এপ্রিলে গণভোট অনুষ্ঠানের পর তুরস্ক ইইউ-র সাথে তার সম্পর্ক পর্যালোচনা করবে।
রাষ্ট্র পরিচালিত বার্তাসংস্থা আনাদলু এরদোগানকে উদ্ধৃত করে বলে, আপনারা (ব্রিটেন) ব্রেক্সিটের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ১৬ এপ্রিলের পর ভিন্ন কিছু ঘটবে।
এরদোগান বলেন, ১৬ এপ্রিল আমাদের গণভোট আছে। তার পর আমরা ইইউ-র সাথে আলোচনার ব্যাপারে ব্রেক্সিট-সদৃশ গণভোট আয়োজন করব। জাতি যে সিদ্ধান্ত দেবে আমরা তা মেনে নেব।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন