নারায়ণগঞ্জ থেকে স্টাফ রিপোর্টার : বন্দরে জীবিকানির্বাহ করতে পিতা-মাতার সঙ্গে ইটভাটায় কাজে এসে ক্লিনে পড়ে অগ্নিদগ্ধ হয়ে এক শিশু শ্রমিকের করুণ মৃত্যু হয়েছে। ওই শিশুর লাশ সোনারগাঁও উপজেলা এলাকায় নদীর পারে গোপনে দাফন করে ইট-ভাটার মালিক যুবলীগ নেতা মাসুম আহম্মেদ ও তার ভাতিজা রাসেল। উপজেলার হালুয়াপাড়া আড্ডা এলাকায় অবৈধভাবে গড়ে উঠা এইচআরবি নামের ইটভাটায় গত ২৭ ফেব্রুয়ারি সকালে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে নিহত শিশু সুমাইয়া (১১) পিতা-মাতাকে আটক করে রেখেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও থানা যুবলীগের নেতা হওয়ায় নিহত শিশুর পিতা-মাতাকে উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয়েছে। এ মর্মান্তিক ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়লে গণমাধ্যম কর্মীদের ইটভাটায় প্রবেশপথে বাধা ও ফিরিয়ে দেয় মাসুমের লালিত সন্ত্রাসীরা। অনুসন্ধানে জানা যায়, কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম উপজেলার আব্দুল্লাহপুর গ্রামের আল-আমিন ও তার স্ত্রী ছালেহা এবং শিশু কন্যা সুমাইয়াকে নিয়ে জীবনের তাগিদে বন্দর থানা যুবলীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মাসুম আহম্মেদের নিজ গ্রামে হালুয়াপাড়া আড্ডা এলাকায় অবৈধভাবে গড়ে উঠা এইচআরবি নামের ইটভাটায় শ্রমিক হিসেবে কাজ নেয়। প্রতিদিনের ন্যায় গত ২৭ শে ফেব্রুয়ারি ভোরে পিতা-মাতার সঙ্গে মেয়েও কাজে যোগদান করে। কাজে যোগদান করার ৩ ঘণ্টা পর পিতা-মাতার অজান্তে ইট পোড়ানোর ক্লিনে পড়ে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যায়। শিশু শ্রমিক আগুনে পুড়ে মারা যাওয়ার খবর শুনে মাসুম ও তার ভাতিজা রাসেল ইটভাটায় এসে নিহত শিশুর লাশ গুম করে তার পিতা-মাতাকে আটক করে কান্নাকাটি না করার জন্য ভয়ভীতি দেখায়। পরে ওই রাতেই গোপনে ব্রহ্মপূত্র নদের পার সোনারগাঁ উপজেলা ইমানের কান্দি এলাকায় নিয়ে লাশ দাফন করে। ইটভাটার আগুনে পুড়ে শিশু মারা যাওয়ার ঘটনা গত দুইদিন ধরে এলাবাসীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। এ খবর সংবাদকর্মীদের কানে গেলে তারা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। ঘটনাস্থলের প্রবেশপথে বাধা প্রদান করে মাসুমের ভাতিজা রাসেল ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা। এ ঘটনায় ইটভাটার মালিক মাসুম আহম্মেদ মোবাইল ফোনে আলাপ করলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, নিহত শিশুর পিতা-মাতার সঙ্গে আপোষ মীমাংসা করা হয়েছে। বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কালাম সাংবাদিকদের জানান, ইটভাটার ক্লিনে পড়ে শিশুর মৃত্যু হয়েছে শুনে ঘটনাস্থলে গতকাল বিকালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সত্যতা পেয়েছেন। এ ঘটনায় কেউ অভিযোগ দিতে থানায় আসেনি। তবে আসলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন