স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকা মহানগরের মধ্যে বসবাসরত ভাড়াটিয়াদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহের যে উদ্যোগ পুলিশ গ্রহণ করেছে তা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও অন্যায় মনে মন্তব্য করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের প্রফেসর ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, এই উদ্যোগ নাগরিকদের জন্যে অপমানজনক। বাংলাদেশের সংবিধানে স্পষ্টভাবে বলা আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, রাষ্ট্রের নাগরিকদের গোপনীয়তার অধিকার একটি মৌলিক মানবাধিকার। গতকাল বুধবার দেশের একটি অনলাইনে একান্ত সাক্ষাৎকারে আসিফ নজরুল এই সব কথা বলেন। ওই অনলাইনকে তিনি বলেন, আমি মনে করি, পুলিশের অতীত ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, হয়রানি, ঘুষ বাণিজ্য থেকে শুরু করে নানা অপকর্মের সঙ্গে তারা জড়িত। আর তাই পুলিশ রাষ্ট্রের সাধারণ মানুষের এসব তথ্য সংগ্রহ করে তা হয়রানির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে পারে এর যথেষ্ট যৌক্তিকতা রয়েছে। পুলিশের যদি কোন তথ্য সংগ্রহের দরকার হয় তাহলে তারা নির্দিষ্ট ব্যক্তির কাছ থেকে তথ্য নিতে পারে। সেক্ষেত্রে সকলের তথ্য কেন নেবে?
আসিফ নজরুল বলেন, পুলিশের এই তথ্য সংগ্রহের উদ্যোগ রাষ্ট্রের সংবিধান লঙ্ঘনের সামিল। এটা নাগরিকদের জন্য অপমানজনক। আসলে এটা রাষ্ট্রকে নয় রাষ্ট্রের সরকারকে নিরাপদ রাখারই একটি উদ্যোগ।
যারা সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত, এই উদ্যোগ তাদের জন্যে কোন নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকারি ও বিরোধী দলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করারই একটা প্রক্রিয়া এটা। এর ফলে বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীরা মারাত্মক হয়রানির শিকার হবে।
এর আগে গত সোমবার সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, এই তথ্য আমরা নগরবাসীর নিরাপত্তা বিধানের জন্য সংগ্রহ করছি। এগুলো সম্পূর্ণ সুরক্ষিত ও সংরক্ষিত থাকবে। অন্য কেউ ব্যবহার করতে পারবে না।
উল্লেখ্য, গত বছরের নভেম্বরে বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়াদের তথ্য সংগ্রহের এই কাজ শুরু করে ঢাকা মহানগর পুলিশ। ঢাকা মহানগরে বাড়ির মালিকদের মাধ্যমে ভাড়াটিয়াদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহের বিষয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে নগরবাসীর কাছ থেকে।
এই তথ্য সংগ্রহের জন্যে ঢাকা মহানগর পুলিশের লোগো সম্বলিত এক পৃষ্ঠার একটি ফরম পূরণ করতে দেওয়া হচ্ছে। সেখানে ভাড়াটিয়ার ছবির পাশাপাশি তাদের জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, পাসপোর্ট নম্বর, ফোন নম্বর, জন্ম তারিখসহ বাসার বাসিন্দা এবং গৃহকর্মী ও ড্রাইভারের তথ্য চাওয়া হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন