মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইসলামী জীবন

ইসলামী কর্মতৎপরতা

| প্রকাশের সময় : ২৩ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

পীর সাহেব চরমোনাই
সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে গ্রিক দেবীর মূর্তি অপসারণের লক্ষ্যে করণীয় নির্ধারণে গত ১৫ এপ্রিল বেলা ১১টায় দেশের উলামায়ে কেরামের সাথে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। মতবিনিময় সভায় উলামায়ে কেরাম বলেন, ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশে চারুকলা ইনস্টিটিউটে গরুর গোশতের তেহারি পাকের অপরাধে বাবুর্চিকে মারধরের ঘটনাকে কোনোভাবেই ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। সভাপতির বক্তব্যে পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, গণভবনে উলামাদের সাথে মতবিনিময়কালে গ্রিক মূর্তি অপসারণে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রæতি ২০ এপিলের মধ্যে বাস্তবায়ন না করলে ২১ এপ্রিল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জাতীয় মহাসমাবেশ থেকে এমন কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে যে আন্দোলনের মাধ্যমে মূর্তি অপসারণ হবে এবং প্রধান বিচারপতির এসকে সিনহারও অপসারণ হবে। পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, মূর্তির সংস্কৃতি ইসলামবিরোধী সংস্কৃতি। মূর্তি ও ইসলাম সাংঘর্ষিক। ইসলাম এসেছে মূর্তি ধ্বংস করতে। যারা মূর্তির সংস্কৃৃতি লালন করে তারা ঈমানদার হতে পারে না। ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশে প্রধান বিচারপতি মূর্তি স্থাপন করে নিরপক্ষেতা হারিয়েছেন। তিনি বলেন, মূর্তি সংখ্যালঘু স¤প্রদায়ের প্রতীক। হিন্দু স¤প্রদায় তাদের মন্দিরে মূর্তি স্থাপন করে পূজাঁ করুক এতে কারো আপত্তি নেই। কেননা সুপ্রিমকোর্ট হিন্দু বা সংখ্যালঘুদের কোর্ট নয়। এটা দলমত নির্বিশেষে সকলের কোর্ট এবং বিচারপতি সকল স¤প্রদায়ের বিচারপতি। কাজেই প্রধান বিচারপতি মূর্তি স্থাপনের মাধ্যমে তার নিরপেক্ষতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে বিচারপতির চেয়ারে থাকার অধিকার হারিয়েছেন। পীর সাহেব ২১ এপিলের জাতীয় মহাসমাবেশ সফলে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
রবিবার বেলা ১১টা থেকে পুরানা পল্টনস্থ আইএবি মিলনায়তনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর এক মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। মতবিনিময় সভায় অংশ নেন ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম, ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের আমির ড. মাওলানা ঈসা শাহেদী, খেলাফত আন্দোলনের নায়েবে আমির মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক মাওলানা এটিএম হেমায়েত উদ্দিন, আলহাজ আমিনুল ইসলাম, দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, প্রকৌশলী আশরাফুল আলম, ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হুসাইন, কেএম আতিকুর রহমান, মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, মাওলানা এবিএম জাকারিয়া, মুফতি হেমায়েতুল্লাহ, মুফতি কেফায়েতল্লাহ কাশফী, মাওলানা আতাউর রহমান আরেফী, মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাকী, আলহাজ আব্দুর রহমান, জামিয়া সাঈদিয়া ভাটারার মুহাদ্দিস মুফতি জোবায়ের আশরাফ, বাহরুল ঊলূম ঢাকার মুহাদ্দিস মুফতি সাঈদ আহমাদ, মাওলানা নাযীর আহমদ শিবলী, বিশিষ্ট আলেম মাওলানা মাজহারুল ইসলাম রাশেদী, জামিয়া ফজলুল উলুম হাসনাবাদের মুহতামিম মুফতি ইজহারুল ইসলাম, মাওলানা আশরাফ আলী নূরী।
মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করীম বলেন, প্রধানমন্ত্রী মূর্তি স্থাপন জানেন না বলে জানিয়েছেন, কিন্তু আমার প্রশ্ন প্রধান বিচারপতি নিয়োগও জানেন কিনা? আসলে দেশ এখন দিল্লির প্রেসক্রিপসনে চলছে। এজন্যই চারুকলায় গরুর গোশত পাক হয়েছে এজন্য মুসলমান বাবুর্চিকে মারধর করা হয়েছে। এটা কোনো স্বাভাবিক ঘটনা নয় এযেন অশুভ ইংগিত। দেশ কোন দিকে যাচ্ছে। ২০ এপিলের মধ্যে মূর্তি না সরালে প্রধান বিচারপতিকে সরানোর আন্দোলনও গড়ে উঠবে।
ড. ঈসা শাহেদী বলেন, মসজিদের নগরী এখন মূর্তির নগরীতে রূপ নিয়েছে। গ্রিক মূর্তি হিন্দুরাও পছন্দ করেন না। প্রধানমন্ত্রীরও পছন্দ নয়, তারপরও মূর্তি থাকবে? অবিলম্বে মূর্তি অপসারণ করতে হবে অন্যথায় সর্বত্র আন্দোলন গড়ে উঠবে। সিলেবাস সংশোধনে যেভাবে আন্দোলন গড়ে উঠেছিল মূর্তি সরাতেও পীর সাহেব চরমোনাই’র নেতৃত্বে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, কওমী সনদের স্বীকৃতি ও মূর্তি বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণায় আশা ও নিরাশার ইংগিত আছে। এই ঘোষণার ফলে বাতিল ও তাগুতি শক্তিগুলোর মাথা খারাপ হয়ে গেছে। মূর্তি ন্যায়বিচারের প্রতীক হতে পারে না।
অধ্যাপক এটিএম হেমায়েত উদ্দিন বলেন, জাতীয় ঈদগাহ’র পাশে গ্রিক দেবীর মূর্তি স্থাপন করে মুসল্লিদের নামাজ বিনষ্ট করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামিন রাসূলে কারীম (সা.)-কে দুনিয়ায় পাঠিয়েছেন সত্য দীন তথা ইসলাম দিয়ে, যেন সকল মতাদর্শের উপর ইসলামকে বিজয় করা যায়। যুগে যুগে নবী ও রাসূলগণ এসেছেন মূর্তিকে ভেঙে দিয়ে মানুষকে শিরকমুক্ত করার জন্য।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন