শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

হতাশায় উত্তরাঞ্চলের হাজার হাজার পোল্ট্রি খামারি

পাইকারী বাজারে ডিমের দাম অস্বাভাবিক কম

| প্রকাশের সময় : ৯ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম


মহসিন রাজু , বগুড়া থেকে ঃ পাইকারি পর্যায়ে ডিমের দাম অস্বাভাবিক ভাবে কমে যাওয়ায় যাওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছে বগুড়া সহ উত্তরাঞ্চলের হাজার হাজার উৎপাদক খামারী। লোকসান গুনতে গুনতে হতাশ খামারীরা বিভিন্ন স্থানে রাস্তায় ডিম ভেঙ্গে এবং সড়ক অবরোধের মাধ্যমে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষনের প্রয়াস নিলেও পোল্ট্রি খামার মালিক সমিতির নেতারা বলছেন, দাম কমে যাওয়ার এই সমস্যাটির সমাধান আসলে আন্দোলনের মাধ্যমে হবেনা। এজন্য সরকারের তিক্ষণ নজরদারীর পাশাপাশি সামাজিক দৃষ্টি ভঙ্গিরও পরিবর্তণ ঘটাতে হবে ।
খুচরা পর্যায়ে ডিমের দাম প্রায় অপরিবর্তিত থাকলেও উৎপাদক খামারী পর্যায়ে সম্প্রতি ডিমের দাম এতটাই কমে গেছে যে প্রতিটি ডিমের বিপরীতে লোকসান গুনতে হচ্ছে ২টাকা হারে বলে ইনকিলাবকে জানিয়েছেন, বগুড়া পোল্ট্রি খামার ওনার্স এসোসিয়েশন এর সাধারণ সম্পাদক মুখতার হোসেন মুক্তার। গত কদিনে বগুড়া – নওগাঁ Ñ জয়পুরহাট ও গাইবান্ধা জেলার পোল্ট্রি সেক্টরের জড়িত ব্যাক্তিদের সাথে যোগাযোগ করে পাওয়া তথ্যে জানা যায়, বর্তমানে একটি ডিমের উৎপাদন ও তা’ পাইকারী পর্যায়ে বিক্রি পর্যন্ত খামারীদের খরচ পড়ে ৬ টাকা, অথচ এই মুহূর্তে পাইকারী পর্যায়ে উৎপাদক খামারীরা একটি ডিমের দাম পাচ্ছে মাত্র ৪ টাকা ।
খামারীরা জানিয়েছেন তীব্র গরমের জন্যই ডিমের দাম কমে গেছে। কারণ গরমের সময় অবিক্রিত ডিম দ্রæত নষ্ট হয়ে যায়। তাছাড়া ডিমের উৎপাদন উৎপাদক খামারীদের হাতে নিয়ন্ত্রনের কোন সুযোগ নাই। প্রতিদিনের ডিম পাড়া বা উৎপাদনের বিষয়টি নির্ভর করে ডিম পাড়া মুরগির উপর। তবে উন্নত দেশ গুলোতে কোটি কোটি পিস ডিম প্রিজারভেশনের ব্যবস্থা থাকায় সেগুলো দীর্ঘ সময় সংরক্ষণ করা যায় বিধায় সেখানে দামের উঠানামার সমস্যা তৈরী হয়না।
পোল্ট্রি খামারীদের সুত্রে আরো জানা গেছে, বর্তমানে পোল্ট্রি সেক্টর থেকে ৮ হাজার মেঃটন আমিষ বাজারে সরবরাহ হচ্ছে। প্রানীজ আমিষের মধ্যে এখন পোল্ট্রিতে উৎপাদিত ব্রয়লার মুরগী এবং ডিম গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। বর্তমানে ১ কেজি গরুর গোশত মফস্বলের হাটবাজারে ৪শ৮০ টাকা এবং খাসির গোশত ৭/৮ শ’ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও ১ কেজি ব্রয়লার মুরগি ১ শ’ থেকে ১শ৫০ টাকায় পাওয়া যায়। খুচরা বাজারে ডিমের হালি ২৫ টাকা থেকে ৩৬ টাকায় ওঠানামা। ১ পিস ডিম ৭/১০ টাকায় পাওয়া গেলেও এখন মধ্যম ব্রান্ডের ১ শলা সিক্রেট কিনতেও ভোক্তাকে খরচ করতে হয় ১১ টাকা। দুঃখ করে খামারীরা বলেন , খাওয়া দাওয়ার ক্ষেত্রে সামাজিক দৃষ্টি ভংগীর বদল ঘটাতে হবে।
খামারীরা জানিয়েছেন, ডিমের পাইকারি বাজারে সিন্ডিকেট আছে , ব্রয়লার এর ব্চ্চাা উৎপাদকদের সিন্ডিকেট আছে। আছে পোল্ট্রি ফিডের ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট। তাদের হাতে পর্যাপ্ত অর্থ আছে এবং সংখায়ও তারা কম। ফলে তারা তাদের পক্ষে সিন্ডিকেট করা সহজ হয়। একদিন বয়সী একটি ব্রয়লার চিকের (বাচ্চা ) উৎপাদন খরচ ২৮ টাকা হওয়ায় ২০১৩ সালে সরকার এর বিক্রয় মুল্য ৩৫ টাকা নির্ধারণ করে দেয়। সরকারের এই যৌক্তিক সিদ্ধান্ত পোল্ট্রি খামারীদের উন্নয়নে সহায়ক হলেও ব্রয়লার চিক (বাচ্চা ) উৎপাদক সিন্ডিকেট সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে একটি রিট করে সিদ্ধান্তটি স্থগিত হয়ে যায়। ফলে সুযোগ বুঝে সিন্ডিকেট এখন ব্রয়লার চিকের মুল্য নির্ধারণ করে দিয়েছে ৮৮ টাকায়। ফলে ৮৮ টাকায় কেনা ১ দিনের বাচ্চাকে ১ কেজি ওজনে রুপান্তর করে তা’ বাজারে কত টাকায় বিক্রি করা সম্ভব ? প্রশ্ন উৎপাদক খামারীদের।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন