বিশেষ সংবাদদাতা : গুলশানের হলি আর্টিজানের সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় যে কোনো দিন চার্জশিট দেয়া হবে। লংগদুতে পাহাড়িদের বাড়ি-ঘরে হামলা ও পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় জড়িতদের ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্ত করে গ্রেফতার করা হবে। আমরা এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিচ্ছি যাতে করে এই ধরনের দুঃসাহস আর কেউ না দেখাতে পারে। গতকাল রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে সাংকাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
রাঙামাটির ঘটনা প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে বা এই ধরনের ঘটনা ঘটানোর দুঃসাহস যেন কেউ দেখাতে না পারে, সে জন্য সরকার অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করবে।
মন্ত্রী আরো বলেন, লংগদুর পাহাড়িদের বাড়িতে আগুন দেয়ার ঘটনায় তিনশজনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। এদের মধ্যে ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদেরও গ্রেফতারের প্রক্রিয়া চলছে। এ ঘটনা সক্রিয়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
গত বছরের ১ জুলাই রাতে রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজার বেকারি রেস্তোরায় জঙ্গিরা হামলা চালিয়ে ২ জন পুলিশ ছাড়াও জিম্মি ২০ দেশি-বিদেশিকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। ২০ জিম্মির মধ্যে ১৭ জনই ছিলেন বিদেশি। পরদিন ভোরে সেনা বাহিনীর অভিযানে ৫ জঙ্গিও নিহত হয়। হামলার প্রায় এক বছর হয়ে গেছে, চার্জশিটের বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, হলি আর্টিজানের চার্জশিট খুব শিগগিরই দিয়ে দেব। যেটা আমরা সঠিকভাবে পেয়েছি তথ্য প্রমাণের মাধ্যমে সেটা করার জন্য একটু সময় নিয়েছি। এটা অলমোস্ট রেডি, এটা যে কোনো দিন হয়তো চার্জশীট দিয়ে দেবে আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী। চার্জশিট দেয়ার পরে এটার যথাযোগ্য বিচার হবে। বিচার বিভাগ যথা সম্ভব তাড়াতাড়ি বিচারটা করবে, সেটা আমরা সবাই আশা করছি।
রোজায় নিরাপত্তা নিশ্চিতে নানা ধরণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ব্যবসায়ী এবং সাধারণ মানুষ যেন কোনো ধরনের নিরাপত্তাহীনতা বোধ না করে সেজন্য নিরাপত্তা বাহিনী ব্যবস্থা নিয়েছে। বড় বড় মার্কেটের পাশে নিরাপত্তা বাহিনী এবং মার্কেটের মধ্যে সাদা পোশাকে নিরাপত্তা বাহিনী থাকেন। ঢাকা শহরের পাশাপাশি জেলা শহরেও পুলিশ কাজ করছে। এ ছাড়া আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে শপিংমলসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। কোনো অঘটন যেন না ঘটে, সে জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সজাগ রয়েছে। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
শুক্রবার নারায়ণগঞ্জের একটি জলাশয় থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধারের এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই জায়গায় যে ধরনের অস্ত্র আসছে আপনারা সবাই দেখেছেন, এসএমজি, গ্রেনেড, পিস্তল, বেশ কিছু ডিভাইস পাওয়া গেছে। এগুলো নিশ্চয়ই কোন ধ্বংস কিংবা কোন ষড়যন্ত্রের একটা প্রচেষ্টা চলছিল, সেটা আমরা মনে করছি। আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, আমরা মনে করছি ওই জায়গায় আরও কিছু থাকতে পারে। সেজন্য আমরা গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে ওই জায়গার পানি সেচ যন্ত্রের মাধ্যমে সরিয়ে সেই জায়গায় আরও পাব (অস্ত্র) বলে আশা করছি, গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে সেই রকমই। কীভাবে অস্ত্রগুলো আমাদের দেশে আসছে, কীভাবে এবং কারা এর সাথে সম্পৃক্ত তা পূর্ণাঙ্গ তদন্তের পরই জানানো হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন