ইনকিলাব ডেস্ক : কাতারের সঙ্গে সাত মুসলিম দেশের সম্পর্কোচ্ছেদের ঘোষণার পরে উপসাগরীয় অঞ্চলের রাজনীতিতে সংকট দেখা দিয়েছে। রাজনীতির পাশাপাশি এর অর্থনৈতিক প্রভাবও স্পষ্ট হয়ে উঠছে। সংকট নিরসনে এগিয়ে এসেছে তুরস্ক। চলমান উত্তেজনা প্রশসনে সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। তুর্কি প্রেসিডেন্টের দফতর এক বিবৃতিতে জানায়, গত সোমবার উপসাগরীয় সংকট সমাধান ও উত্তেজনা প্রশমনে প্রেসিডেন্ট এরদোগান বেশ কয়েকজন বিশ্বনেতার সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। এ তালিকায় আছেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি, রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন, কুয়েতের আমির শেখ জাবের আল আহমাদ আল সাবাহ এবং সউদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সউদ। এসময় এরদোগান সংকট নিরসনে আলোচনায় বসার ওপর জোর দেন। আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এবং উত্তেজনা প্রশমনে কূটনৈতিক উদ্যোগ নিতে সব পক্ষকে আহ্বান জানান। এর আগে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, চলমান সংকটের মাত্রা কমিয়ে আনতে তুরস্ক উদ্যোগ নিতে প্রস্তুত আছে। তিনি জানান, উপসাগরীয় দেশগুলোকে ঐক্যবদ্ধ দেখতে চায় তুর্কি প্রশাসন। তুর্কি উপপ্রধানমন্ত্রী নুমান কুর্তুলমুস বলেন, চলমান সংকট নিরসনে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট এরদোগান। তিনি এ অঞ্চলকে শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল দেখতে চান। গত সোমবার সউদি প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রথম দোহার সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা আসে। এরপর এ তালিকায় যুক্ত হয় মিসর, বাহরাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, লিবিয়া, ইয়েমেন এবং মাল্লীপ। দেশটির বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ সমর্থন ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নষ্টের অভিযোগ তোলা হয়। সউদি আরব ছেড়ে যেতে কাতারের কূটনীতিকদের ৪৮ ঘণ্টা ও সাধারণ নাগরিকদের ১৪ দিন সময় বেঁধে দেয়া হয়। সউদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্স কাতারে সব ধরনের ফ্লাইট পরিচালনা বন্ধের ঘোষণা দেয়। দুবাইভিত্তিক এমিরেটস, ফ্লাইদুবাই ও আবুধাবিভিত্তিক ইতিহাদ এয়ারলাইন্স আজ থেকে কাতারে ফ্লাইট পরিচালনা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। কাতার সরকার সে দেশের বিরুদ্ধে এমন পদক্ষেপকে মিথ্যা প্রচারণার ফসল ও অযৌক্তিক বলে অভিহিত করেছে। বিমান যোগাযোগ ছিন্নের পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে কাতার এয়ারওয়েজ সউদি আরবসহ কয়েকটি দেশে ফ্লাইট পরিচালনা বন্ধের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে। সউদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মিসর কাতারভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল-জাজিরার স¤প্রচার বন্ধ করে দিয়েছে। সউদি কর্তৃপক্ষ রিয়াদে আল জাজিরার কার্যালয়ে তালা দিয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকার আল জাজিরার সহযোগী চ্যানেল বেইন স্পোর্টসের স¤প্রচারও বন্ধ করে দিয়েছে। বিভিন্ন সময় মিসর, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইনে সরকারবিরোধী আন্দোলনকারীদের প্রতি কাতারের পরোক্ষ সমর্থন মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর এ সিদ্ধান্তের পেছনে ভূমিকা রেখেছে। বিশেষত কাতারভিত্তিক চ্যানেল আল জাজিরায় ভিন্ন মতাবলম্বী রাজনীতিকদের সংবাদ প্রকাশ রিয়াদ থেকে কায়রো পর্যন্ত বিভিন্ন রাজধানীতে ক্ষমতাসীনদের গাত্রদাহের কারণ ছিল। সাত দেশের একসঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদের এ ঘটনা আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে কাতারের সম্মানহানির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এর ফলে সে দেশে ২০২২ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজনের প্রস্তুতি ব্যাহত হতে পারে। আল-জাজিরা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন