শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

দু’সন্তানসহ স্বামীর মৃত্যু অতঃপর মারা গেলেন গৃহবধূ সুমাইয়াও

উত্তরায় গ্যাস লাইনে বিস্ফোরণ

প্রকাশের সময় : ৭ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : দুই সন্তান ও স্বামীর পর এবার না ফেরার দেশে চলে গেলেন উত্তরায় গ্যাস লাইনের আগুনে দগ্ধ গৃহবধূ সুমাইয়া আক্তারও। অগ্নিদগ্ধ ৫ জনের মধ্যে পরিবারটিতে এখন শুধু বেঁচে রইলো জারিফ বিন নেওয়াজ (১১)। শরীরে ৬ শতাংশেরও বেশি দগ্ধ হওয়া জারিফ চিকিৎসাধীন রয়েছে মোহাম্মদপুর সিটি হাসপাতালে। চিকিৎসকরা বলেছেন, জারিফ আশঙ্কামুক্ত হলেও বাবা-মা ও দুই ভাইকে হারানোর শোক কাটিয়ে উঠতে পারবে কিনা সেখানেই বড় শঙ্কা।
ঘটনার পর গত ৯ দিন ধরে সুমাইয়াকে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন চিকিৎসকরা। মোহাম্মদপুর সাত মসজিদ রোডের সিটি হাসপাতালের আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন গত ২ দিন ধরে। কিন্তু চিকিৎসক ও স্বজনদের সব চেষ্টা ব্যর্থ হলে গতকাল বিকেল সাড়ে ৩টায় মারা যান সুমাইয়া। হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের চিকিৎসক রাশেদ মাহমুদ সাংবাদিকদের জানান সুমাইয়া ক্লিনিকালি ডেড ছিলো। হার্ট ছাড়া শরীরের অন্য অংশ ঠিকমতো কাজ করছিলো না। তাকে বাঁচানোর সব রকম চেষ্টা ছিলো চিকিৎসকদের। কিন্তু সব চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে সুমাইয়া দুপুরে মারা যায়। মৃত্যুর পর তার লাইফ সাপোর্ট খুলে নেয়া হয়।
নিহতের মামাতো ভাই আবু সুফিয়ান বলেন, মনকে কোনভাবেই বুঝাতে পারছি না। আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেলো পুরো পরিবার। বেছে থাকা একমাত্র ছেলে মাকে ফিরে পাওয়ার আশা থাকলেও সে আশাও শেষ হয়ে গেছে। সুমাইয়াকে বরিশালের বাড়িতে দাফন করার কথা রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ভোরে উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টরের ৩ নম্বর রোডের এক বাড়ির সপ্তম তলার ফ্ল্যাটে লিকেজ হওয়া গ্যাস লাইন থেকে আগুন লাগে। এতে দগ্ধ হন সুমাইয়া, তার স্বামী ও তিন সন্তান। চার জনের মধ্যে দেড় বছরের জায়ান বিন শাহনেওয়াজ ও শাহালিন বিন শাহনেওয়াজ (১৫) ওইদিনই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যায়। পরদিন মৃত্যু হয় সুমাইয়ার স্বামী মো. শাহনেওয়াজের (৫০), যিনি ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের মেইনটেইনেন্স ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। মেজ ছেলে জারিফ বিন নেওয়াজকেও (১১) মায়ের সঙ্গে সিটি হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। রোববার সকালের দিকে তাকে বাসায় নিয়ে যাওয়া হয় বলে তার মামা আবু সুফিয়ান জানান।
জারিফের চাচা কামরুল হাসান জানান, আগামী বছরই শাহনেওয়াজের সপরিবারে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমানোর কথা ছিল। গত ২০ ফেব্রুয়ারি উত্তরার ওই ফ্ল্যাটে পরিবার নিয়ে উঠেছিলেন তিনি। নতুন বাসায় ওঠার পর শাহনেওয়াজ গ্যাসের গন্ধ পেয়ে বাড়িওয়ালাকে বিষয়টি জানালেও তিনি গুরুত্ব দেননি ।
এদিকে গ্যাস সংযোগ বিস্ফোরণে একই পরিবারের ৪ জনের এ মর্মান্তিক মৃত্যুর জন্য বাড়ির মালিককে দায়ী করে উত্তরা পশ্চিম থানায় নিহত প্রকৌশলী শাহনেওয়াজের ভাই কামরুলের অভিযোগ করলেও গ্যাসলাইন বিস্ফোরণে দায়ী মালিকের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ। এমনকি এ বিষয়ে কোন মামলাও নেয়নি। পুলিশ পুরো ঘটনা ধামাচাপা দেয়।
ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা বলেছিলো, ওই বাসার গ্যাসের চুলা বা লাইনে সমস্যা ছিল। এর ফলে গ্যাস বের হয়ে রান্নাঘর থেকে পুরো ফ্ল্যাটে ছড়িয়ে যায় এবং সকালে চুলা জ্বালাতে গিয়ে অগ্নিকা- ঘটে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (2)
Abu Nasir ৭ মার্চ, ২০১৬, ১১:৪৭ এএম says : 0
so sad
Total Reply(0)
Jarin ৭ মার্চ, ২০১৬, ১১:৪৭ এএম says : 0
Khub karap lagca! Allha amader maf karun
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন