বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিল হলে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা হুঙ্কার দিবে -ওলামা লীগ ও অন্য নেতৃবৃন্দ

বর্তমান প্রধান বিচারপতির আমলে ২৮ বছর পর মামলা সচল হলো কিভাবে

প্রকাশের সময় : ৭ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধান থেকে বাতিল করার লক্ষ্যে রিটের নামে চক্রান্তে নেমেছে হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান ঐক্য পরিষদ। গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে রাষ্ট্রধর্ম বাতিলের রিট খরিজ করা হয়েছিল। তাহলে বর্তমান বিচারপতির আমলে ২৮ বছর পর এ মামলা সচল হলো কীভাবে? এটা এ দেশে সাম্প্রদায়িকতা ধ্বংসের চক্রান্ত। রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিল করলে এ দেশের ইসলামী জনতা হুংকার দিয়ে উঠবে। সরকার এ বিষয়ে সতর্ক না হলে সরকারের বিরুদ্ধে জনরোষ সৃষ্টি হবে। আওয়ামী ওলামা লীগ ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের নেতৃবৃন্দ গতকাল পৃথক পৃথক সভায় এসব কথা বলেছেন।
বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম দেশ বাংলাদেশের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। ২৮ বছর পর রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দিতে মামলা পুনরুজ্জীবিত করা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যমূলক ও গভীর ষড়যন্ত্রমূলক। সরকার ও মুসলমানদের মুখোমুখি করতেই ২৮ বছর আগের মামলা সচল করেছে সাম্প্রদায়িকরা। জাতির স্বপ্ন পুরুষ, সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, শহীদ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান (র.)কে জাতির পিতা হিসেবে অস্বীকারকারীরাই বাংলাদেশের সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দেওয়ার চক্রান্ত করছে। তারা দেশ থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দিতে ১৯৮৮ সালে সাম্প্রদায়িক সংগঠন হিন্দু-বৌদ্ধ-খিস্টান ঐক্য পরিষদের জন্ম দেয়। বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ আয়োজিত সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। তারা বলেন, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দিলে ইসলামী জনতা হুংকার দিয়ে উঠবে।
বক্তারা বলেন, যেখানে গত বছর সেপ্টেম্বরে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিলে উগ্র হিন্দু সমেন্দ্র নাথ গোস্বামীর রিট খারিজ হলো, সেখানে ২৮ বছর আগের মামলা বর্তমান প্রধান বিচারপতির আমলে কীভাবে সচল হলো তা গভীর রহস্যজনক।
বক্তারা বলেন, সাম্প্রদায়িক সংগঠন হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ইচ্ছানুযায়ী রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দেয়ার গভীর ও ভয়াবহ ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন চলছে। এটা সরকারের বিরুদ্ধেও গভীর ষড়যন্ত্র। যদি এ রায় রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের বিপক্ষে যায় তাহলে এ দেশের মুসলমান মেনে নিবে না। বরং এটা সরকারের সমর্থনে হচ্ছে বলে সরকারের বিরুদ্ধে সেন্টিমেন্ট তৈরি করা হবে। সরকারবিরোধী ও দেশপ্রেমিক মুসলমান ও ইসলামবিরোধী যেকোন সিদ্ধান্তে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ক্ষেপে উঠবে; এটা এবং এর বিরুদ্ধে অবস্থান নিবে। জামায়াত ও হেফাজতরাও ইস্যু পাবে। দেশ আবারো অস্থিতিশীল হয়ে উঠবে। তাই অবিলম্বে এই রিট খারিজ করা দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানরা আশা করে।
বক্তারা আরো বলেন, পাশাপাশি এ দেশে অব্যাহতভাবে সাম্প্রদায়িক উস্কানিদাতা সাম্প্রদায়িক সংগঠন যারা এ দেশে গরু জবাইয়ের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিচ্ছে এবং বাঙালি জাতির পিতা, শহীদ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান (র.)কে সাম্প্রদায়িক বলছে, প্রধানমন্ত্রীর ব্লাউজ নিয়ে অশালীন বক্তব্য দিয়ে সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প ছড়াচ্ছে, মন্ত্রী-এমপি কর্তৃক হিন্দু জমি দখলের মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে সেই হিন্দু-বৌদ্ধ-খিস্টান ঐক্য পরিষদকে এ দেশে নিষিদ্ধ করতে হবে। এ বিষয়ে সরকার দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে জনরোষ সৃষ্টি হবে।
প্রধান অতিথি স্থানীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মুহম্মদ সোহরাব উদ্দীন তার বক্তব্যে বলেন, সাম্প্রদায়িকতা সৃষ্টিকারীদের বিষয়ে সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলে জানানোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় ওলামা লীগের আয়োজিত সভায় বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী ওলামা লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাও. নূর মুহম্মদ আহাদ আলী, অনুষ্ঠানে প্রধান অথিতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মুহম্মদ সোহরাব উদ্দীন সাহেব, বিশেষ অতিথি উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুহম্মদ মোতায়েহ হোসেন স্বপন। এতে উপস্থিত ছিলেন ওলামা লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সভাপতি হাফিজ মাও. মুহম্মদ আব্দুস সাত্তার, সাধারণ সম্পাদক কাজী মাওলানা মুহম্মদ আবুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী, হাফিজ মোস্তফা চৌ. নূরুল ইসলাম হেলালী, হাফিজ মাও. মুহম্মদ সোলাইমান, উপজেলা সাধারণ সম্পাদক মাও. নজরুল ইসলাম জজ মিয়া, সভাপতিত্ব করেন মাও. মুহম্মদ আব্দুল মান্নান প্রমুখ।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম
দেশে নানাবিধ সমস্যা বিরাজ করছে, একদিকে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে, অপরদিকে দীন ও ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। মুসলিম দেশ বাংলাদেশে মুসলমানদের ধর্ম ইসলাম মুসলমানদের জন্য হালাল, এ জন্য অন্য কাউকে ভক্ষণ করার জন্য কেউ কোনো দিন আহ্বান জানায়নি। মুসলমানদের এ ধর্মীয় অধিকারের বিরুদ্ধে কথা বলার অধিকার কারো নেই। তথাকথিত হিন্দু, বৌদ্ধ, খৃষ্টান ঐক্য পরিষদ নামে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ধ্বংস করতে ধর্মীয় স্বার্থে এই ধরনের উস্কানিদাতাদের ব্যাপারে সরকারকে সময়মত সঠিক পদক্ষেপ নিতে হবে। গতকাল জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা মিলনায়তনে কিশোরগঞ্জ ও মৌলবীবাজার জেলা থেকে আগত সাক্ষাৎকারীদের উদ্দেশে প্রধান আলোচকের বক্তব্যে আল্লামা কাসেমী একথা বলেন।
সভাপতির বক্তব্যে দলের অন্যতম সহ-সভাপতি মাও. আব্দুর রব ইউসুফী বলেন, ডা. কালিদাস বৈদ্য তার পুস্তকে পবিত্র কুরআনের অপব্যাখ্যা ও স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস বিকৃতি এবং স্বাধীনতার স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যাপারে অপমানজনক ও ইতিহাস বিকৃত মন্তব্য করেছেন। তার এ লিখনির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। তিনি বলেছেন, ৩০ লক্ষ হিন্দু আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামে নিহত হয়েছেন। তাহলে এত মুসলমান স্বাধীনতার জন্য জীবন উৎসর্গ করলো, তারা গেলো কোথায়? এ ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট বক্তব্য আশা উচিত।
অনুষ্ঠানে বিশেষ আলোচক হিসাবে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সহ-সভাপতি মাও. জোনায়েদ আল হাবীব, যুগ্ম মহাসচিব মাও. নাজমুল হাসান, মাও. ফজলুল করীম কাসেমী, অর্থ সম্পাদক মুফতী মুনীর হোসাইন, সাক্ষাৎকারীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, মৌলভী বাজারের হযরত শায়েখ মাও. লুতফুর রহমান হামিদী র. এর দৌহিত্র মাও. নূরে আলম হামিদী, কিশোরগঞ্জের মাও. আনোয়ার শাহ সাহেরেবর সাহেবজাদা মাও. আনজার শাহ তানঈম।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
Abdullah Al Mahin ৭ মার্চ, ২০১৬, ১০:২৮ এএম says : 0
হে আল্লাহ আপ‌নি হযরত উম‌রের মত একজন শাষক বাংলার জ‌মি‌নে প্র‌তি‌ষ্ঠিত ক‌রে দিন বাংলার জ‌মি‌নে ইসলাম আজ নির্যা‌তিত
Total Reply(0)
MD Rohane ৭ মার্চ, ২০১৬, ১১:০৩ এএম says : 0
মুসলমান বেচে থাকবে আর ইসলাম থাকবে না এটা কি করে সম্ভব ।
Total Reply(0)
Jakir Hossain ৭ মার্চ, ২০১৬, ১১:৩৫ এএম says : 0
Islam ey thakbe. nastik ra na.
Total Reply(0)
Md Khalil ৭ মার্চ, ২০১৬, ১১:৩৬ এএম says : 0
এমন দুঃসাহস করবেননা ।
Total Reply(0)
সিয়াম ৭ মার্চ, ২০১৬, ১১:৩৭ এএম says : 0
ওলামা লীগকে ধন্যবাদ।
Total Reply(0)
Tania ৭ মার্চ, ২০১৬, ১১:৩৭ এএম says : 0
রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দিলে ইসলামী জনতা হুংকার দিয়ে উঠবে।
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন