স্টাফ রিপোর্টার : জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর আপিল নিয়ে প্রধান বিচারপতির পর অ্যাটর্নি জেনারেলও ‘বিএনপি-জামায়াতের সুরে’ কথা বলছেন বলে মন্তব্য করেছেন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম। তিনি বলেন, বিএনপির ভাষা এবং আমাদের অ্যাটর্নি জেনারেলের ভাষা একই, তিনি আর রিজভী একই সুরে কথা বলছেন।
প্রধান বিচারপতি সম্পর্কে খাদ্যমন্ত্রীর শনিবারের বক্তব্যের পর গতকাল রোববার অ্যাটর্নি জেনারেল তার প্রতিক্রিয়া জানান। অ্যাটর্নি জেনারেলের বক্তব্য আসার পর খাদ্যমন্ত্রী কামরুল সচিবালয়ে তার দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
কামরুল ইসলাম বলেন, বিচারপতিরা প্রকাশ্য আদালতে বলেন, প্রসিকিউটরা রাজনীতি করছেন। তখন ১৬ কোটি মানুষের একজন হিসেবে, একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমি কি রিঅ্যাকশন দিতে পারব না? আমি তো প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে কথা বলছি না। রায় ঘোষণার আগে আমাকে যেভাবে সংক্ষুব্ধ করেছেন, রিঅ্যাকশন দেয়ার স্বাধীনতা কি আমার নেই? এখানে সংবিধানকে লংঘন করা, আদালত অবমাননা করাÑ এসব কথা বলার তো কোনো অর্থই হয় না।
প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহাকে বাদ দিয়ে নতুন বেঞ্চ গঠন করে মীর কাসেমের আপিলের পুনঃশুনানির দাবি মন্ত্রী কামরুল তোলার পর অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বিচার নিয়ে বিতর্কিত বক্তব্য না দেয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতি সম্পর্কে মন্ত্রীদের বক্তব্য অসাংবিধানিক।
কামরুল বলেন, জামায়াত যে অভিযোগ করেছে, বিএনপি যে অভিযোগ করেছে, তাদের আন্তর্জাতিক লবিস্ট গ্রুপ যে সুরে কথা বলছে, একই সুরে কথা বলেছেন প্রধান বিচারপতি। প্রকারান্তরে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে, সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেন তিনি। এই মামলার রায় কী হবে, তা প্রধান বিচারপতির প্রকাশ্যে আদালতে বক্তব্যের মধ্য দিয়ে আমরা অনুধাবন করতে পেরেছি।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠনের সময় আইন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা কামরুল নিজেকে একটা পক্ষ দাবি করে বলেন, আমি কিন্তু আদালত অবমাননাকর কোনো কথা বলিনি, সংবিধান লংঘন করিনি। আমি বলিনি যে, আদালত বায়াসড হয়ে এ কথাগুলো বলেছে। আমরা সবাই রায়ের আগের মন্তব্যগুলোতে উদ্বিগ্ন হয়েছি যে, কী হতে যাচ্ছে?
মন্ত্রীর পদে থেকে এ ধরনের মন্তব্য করা যায় কি নাÑ এ প্রশ্নে কামরুল বলেন, আরে, আমি তো মানুষ। মন্ত্রী কি আকাশের জীব? নাকি অন্য গ্রহের জীব? আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। আমি এই মামলার বাদি, ১৬ কোটি মানুষই এই মামলার বাদি।
‘বিচারাধীন বিষয় নিয়ে কোনো কথা বলা সমীচীন নয়’Ñ স্বীকার করে কামরুল আরো বলেন, কিন্তু বিচারাধীন বিষয় নিয়ে বিচার চলাকালীন কেউ কোনো পক্ষকে এরকমভাবে হার্ট বা কষ্ট দিতে পারেন না। কষ্ট দিয়েছেন বলেই আমার মুখ দিয়ে এ রকম কথা বের হয়েছে। জনমনের সংশয় দূর করার জন্য এই আপিল জানিয়েছি। আদালত অবমাননার জন্য নয়। যখন দেখি প্রকাশ্য আদালতে প্রসিকিউটরদের একেবারে ধুয়ে ফেলেছে এবং আদালত একপর্যায়ে এমন কথাও বলেছে প্রসিকিউটরা মামলার নামে রাজনীতি করছে। তার মানে রাষ্ট্র বা সরকার রাজনীতি করছে তা বোঝা যাচ্ছে। তখন কি আমি সংক্ষুব্ধ হব না? উদ্বিগ্ন হব না? আমার কোনো রিঅ্যাকশন থাকবে না?
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, এখনও প্রত্যাশা করি রায়টা ঠিক হোক। মীর কাসেম আলীকে ছেড়ে দিলে কলিজাটা ফেটে যাবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন