চট্টগ্রাম ব্যুরো : নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী এলাকায় নেংটা ফকিরের ‘আস্তানায়’ জোড়া খুনের মামলায় কথিত এক জেএমবি জঙ্গির বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়া হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) পুলিশের নগর গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) এসআই সন্তোষ চাকমা গতকাল (সোমবার) চট্টগ্রামের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে এই অভিযোগপত্র জমা দেন।
চাঞ্চল্যকর এ জোড়া খুন মামলায় জেএমবি সদস্য সুজন ওরফে বাবুকে (২৮) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। বাবু ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুর থানার হরিণদিয়া মাদরাসাপাড়া গ্রামের মোমিনুল ইসলামের পুত্র। ঘটনার দিন বায়েজিদ এলাকা থেকে আটক আবদুল মান্নান ওরফে মনাকে (৪০) মামলার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয়ার সুপারিশ করেছেন আইও। আইও সন্তোষ চাকমা বলেন, খুনের ঘটনায় জেএমবি সদস্য সুজন ওরফে বাবুর অংশগ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীও দিয়েছেন।
গত বছর ৪ সেপ্টেম্বর দুপুরে বায়েজিদ থানার শেরশাহ বাংলাবাজারের পূর্বাচল এলাকায় ‘নেংটা মামু’ নামে পরিচিত ফকির রহমত উল্লাহর (৬০) আস্তানায় ঢুকে তাকে এবং তার খাদেম মো: আব্দুল কাদেরকে (৩০) গলা কেটে হত্যা করা হয়। স্থানীয়রা ধাওয়া করলে হাতবোমা ফাটিয়ে ছুরি হাতে পালিয়ে যায় খুনি। খুনি একটি বাইসাইকেল ও তার গায়ের গেঞ্জি ফেলে যায়। স্থানীয় একটি সিসিটিভির ফুটেজে তার ছবিও পাওয়া যায়। এ ঘটনায় কাদেরের ভাই নুরুল ইসলাম বাদি হয়ে পরদিন অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে বায়েজিদ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
এক মাস পর ৫ অক্টোবর নগরীর কর্ণফুলী থানার খোয়াজনগর এলাকা থেকে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল মোজাহেদিন বাংলাদেশ- জেএমবির সামরিক শাখার প্রধান মো: জাবেদসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ। নগরীর সদরঘাট এলাকার ২৩ সেপ্টেম্বরের ৩ খুনসহ ছিনতাইয়ের একটি ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। তাদের মধ্যে এক জেএমবি সদস্য ফকিরের আস্তানায় খুনের ঘটনায় সুজন ওরফে বাবুর জড়িত থাকার বিষয়ে পুলিশকে তথ্য দেয়। পরে বাবুও পুলিশের কাছে জোড়া খুনের দায় স্বীকার করে। বাবু জানায়, কথিত ওই ফকির সবসময় নেংটা থাকতেন এবং তার আস্তানায় অবৈধ কর্মকা- চলত। এ কারণে সে তাকে হত্যা করে। আর ওই দৃশ্য দেখে ফেলায় তার খাদেমকেও হত্যা করে। বাবুর বিরুদ্ধে নগরীর আকবর শাহ ও কর্ণফুলী এবং ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর থানায় মোট পাঁচটি মামলা আছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
এসআই সন্তোষ চাকমা জানান, ফকিরের আস্তানায় জোড়া খুনের ঘটনার সময় বোমা বিস্ফোরণ ঘটানোর পর হত্যা মামলার সঙ্গে বিস্ফোরক আইনের ধারা সংযুক্ত করা হয়। তিনি বলেন, দ-বিধির ৩২৪, ৩২৬ ও ৩০২ ধারায় হত্যার ঘটনার পাশাপাশি বিস্ফোরক আইনের ৩ ও ৩ (ক) ধারায় আলাদা আলাদা অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছে। অভিযোগপত্রে ছয় পুলিশ সদস্য, চিকিৎসক, বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ ও স্থানীয় এলাকাবাসীসহ মোট ২৫ জনকে মামলার সাক্ষী করা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন