নারায়ণগঞ্জ থেকে স্টাফ রিপোর্টার : র্যাবের সাবেক কর্মকর্তা এমএম রানা এবং আরিফ হোসেনের পক্ষে সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে সাত খুন মামলায় এডভোকেট চন্দন কুমার সরকারের জামাতা ও এই মামলার বাদী বিজয় কুমার পালের সাক্ষ্যদান শেষ হয়েছে।
বেলা ১১টায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। প্রথমে এমএম রানার পক্ষে এডভোকেট ফরহাদ আব্বাস তাকে জেরা করেন। পরে আরিফ হোসেনের পক্ষে এডভোকেট রঞ্জিত রায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। দু’জনেই সংক্ষিপ্ত আকারে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। দুই আইনজীবীরই প্রশ্ন ছিল বাদী তাদের ক্লাইন্টকে আগে থেকে চিনতো কিনা। বাদী নিজে মামলার এজাহারে তাদের নাম দিয়েছেন কিনা? জবাবে বিজয় কুমার পাল না সূচক জবাব দেন এবং বলেন পুলিশের তদন্তে তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। এ দু’জনের পক্ষে সাক্ষ্যগ্রহণের পর নূর হোসেন এবং তারেক সাইদের আইনজীবীরা আদালতকে জানান তারা এই মামলায় উচ্চ আদালতে একটি কোয়াশম্যান্ট পিটিশন করেছেন। আজ ওই পিটিশনের নিষ্পত্তি হবে। তাই বিকাল পর্যন্ত তারা সময় চান। তখন আদালত বিকাল ৩টা পর্যন্ত তাদেরকে সময় দেন। বিকালে পুনরায় আদালত বসলে তারা হাইকোর্টের কোন আদেশ দেখাতে ব্যর্থ হন এবং জানান হাইকোর্টের বেঞ্চ নাকি এই মামলার শুনানিতে বিব্রত হয়েছে। তাই বিষয়টি প্রধান বিচারপতির কাছে যাবে। এ কথা বলে তারা আবারও সময় চান। কিন্তু এবার আর আদালত তাদের সময় মঞ্জুর না করে বিজয় কুমার পালের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করেন। ফলে নূর হোসেন আর তারেক সাইদের পক্ষের আইনজীবীরা আর এই বাদীকে জেরা করার সুযোগ পাচ্ছেন না বলে সরকার পক্ষের আইনজীবী পিপি এডভোকেট ওয়াজেদ আলী খোকন জানান ।
এদিকে গতকাল সাত খুন মামলার শুনানি শেষে এই মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট সাখাওয়াৎ হোসেন খান জানান, মোট ৩৫ জন আসামীর মাঝে ৩৩ জনের পক্ষেই বিজয় কুমার পালের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। বাকি দুইজনের আইনজীবীরা অসৎ উদ্দেশ্যে এই মামলার বিচার কাজ বিলম্বিত করার অপচেষ্টা শুরু করেছিলেন। তবে আদালত তাদেরকে আর কোন সুযোগ দিচ্ছে না। আগামী ১৪ মার্চ এই মামলায় অন্যান্য সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হবে। গতকাল (সোমবার) সকাল সাড়ে ৯টায় কঠোর নিরাপত্তায় গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেন ও র্যাবের চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা তারেক সাইদসহ ২৩ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, তার বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন ও গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম এবং আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার ও তার গাড়িচালক ইব্রাহীম অপহৃত হন। পরে ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ছয়জনের ও ১ মে একজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন