মোবায়েদুর রহমান : বাংলাদেশের শিক্ষিত, সচেতন এবং দেশপ্রেমিক মানুষ গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ করছেন, ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি আবার তার সাম্প্রদায়িক দাঁত দেখাতে শুরু করেছে। এবার তারা দাঁত দেখাচ্ছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির রোল মডেল বাংলাদেশকে। তারা শুধু সাম্প্রদায়িক উসকানিই দিচ্ছে না, বরং বাংলাদেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে ঠা-া করারও হুমকি দিচ্ছে। আরো দুর্ভাগ্যের বিষয় এই যে, বাংলাদেশে অবস্থানকারী এবং বাংলাদেশে বসতকারী একটি সাম্প্রদায়িক প্রতিষ্ঠান ঢাকা এবং পৃথিবীর অন্য কোনো কোনো দেশের রাজধানীতে বসে এমন সব উসকানিমূলক কথাবার্তা বলছে যেগুলো সাম্প্রদায়িকতার অগ্নিতে ঘৃতাহুতির সমান। এমন একটি উসকানিমূলক পরিস্থিতিতে দেশের প্রধান বিরোধী দল হিসেবে বিএনপির ভূমিকা অত্যন্ত হতাশাব্যঞ্জক এবং ন্যক্কারজনক বলে মানুষ মনে করছেন। দেশের অন্যতম বৃহৎ এবং জনপ্রিয় দল হিসেবে জনগণ প্রত্যাশা করেছিলেন যে, ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি এবং বাংলাদেশে তাদের অন্ধ অনুসারীদের উসকানিমূলক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার স্বার্থে এবং বৃহত্তর জনগণের অনুভূতির দিকে তাকিয়ে বিএনপি এ ব্যাপারে শক্ত অবস্থান গ্রহণ করবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়, এসব বিষয়ে বিএনপি রহস্যময় নীরবতা জনসাধারণের কাছে দুর্বোধ্য মনে হওয়ায় তাদের মনে ক্ষোভ পুঞ্জীভূত হচ্ছে।
পশ্চিম বঙ্গ বিজেপি সভাপতি
গত ৫ মার্চ বাংলাদেশের একটি বাংলা সহযোগীর রিপোর্ট মোতাবেক পশ্চিম বঙ্গের বিজেপি সভাপতি ও সাবেক আরএসএস নেতা দিলীপ ঘোষ গত বৃহস্পতিবার বীরভূম জেলার সিউড়িতে রীতিমতো হুমকির সুরে বলেছেন, যেসব নেতা, অভিনেতা, লেখক, গায়ক, শিক্ষাবিদ উগ্রপন্থা এবং সন্ত্রাসবাদকে মদত দেবে তাদের ধরে এনে লাথি মেরে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়া হবে।
সেইসঙ্গে বিজেপি নেতার সদম্ভ ঘোষণা, বোমার বদলে বুলেট দিয়ে পাকিস্তানকে ঠা-া করে দেয়া হয়েছে। প্রয়োজনে বাংলাদেশকেও ঠা-া করে দেয়া হবে। অন্যদিকে তার হুঁশিয়ারি, পাকিস্তান জিন্দাবাদ স্লোগান দিলেই তাদের মু-ু কেটে কবর দিয়ে দেয়া হবে। ২৮ শতাংশ মুসলিম অধ্যুষিত বীরভূম জেলার জেলা শাসকের সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে এসে বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ সাংবাদিকদের বলেছেন, এই সরকার চুপ করে থাকবে না। এখন মোদি সরকার রয়েছে। উগ্রপন্থি বা জঙ্গি যেই হোক না কেন তাদের উড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। আগে নিরাপত্তা রক্ষী সংঘর্ষে মারা গেলে আমরা শোক জানাতাম। কিন্তু এখন পাল্টা আঘাত হানা হচ্ছে। তিনি আরও বলেছেন, যারা পাকিস্তান জিন্দাবাদ স্লোগান দেবে তাদের ওপর থেকে ৬ ইঞ্চি কেটে ফেলা হবে। আর তারপর ৬ ফুট নিচে নামিয়ে দেয়া হবে। মনে রাখতে হবে, এখন দিন পাল্টেছে।
পশ্চিম বঙ্গে কে বা কারা সন্ত্রাসী কর্মকা- করছে, কারা ভিনদেশের নামে স্লোগান দিচ্ছে সেগুলো পশ্চিম বঙ্গ তথা ভারতের একান্তই অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। কিন্তু সেগুলোর সাথে বাংলাদেশকে জড়ানো হচ্ছে কেন? তার ভাষায়, যেসব গায়ক-অভিনেতা অর্থাৎ সাংস্কৃতিক নেতাকর্মী ও রাজনৈতিক নেতাকর্মী সন্ত্রাসবাদকে মদদ দিচ্ছে তাদের লাথি মেরে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। তাদের বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে কেন? তারা পশ্চিম বঙ্গ তথা ভারতের মানুষ। তাদের লাথি মেরে ভারতের ওই ২৯টি প্রদেশের যে কোনোটিতে পাঠানো যেতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশে কেন? বাংলাদেশের কোনো অধিবাসী কি পশ্চিম বঙ্গ গিয়ে সশস্ত্র সন্ত্রাসী তৎপরতা চালাচ্ছে? আমরা সাধারণ মানুষ যতদূর জানি, দিলীপ বাবুর এই অভিযোগের কোনোই ভিত্তি নাই। পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, পশ্চিম বঙ্গে মোট জনগোষ্ঠীর ২৮ শতাংশই মুসলমান। তারা কোনো সন্ত্রাসী কাজ করেছেন কিনা সেটা আমরা কিছুই জানি না। মনে হচ্ছে, বিজেপি মুসলমান এবং বাংলাদেশকে সমার্থক করে ফেলেছে। তাদের এই অপচেষ্টার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকারের কঠোর প্রতিবাদ জানানো উচিত ছিল। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ এই ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেনি। সরকার বা শাসক দলের এই নীরবতা অবলম্বনের কারণটি দুর্বোধ্য। অনুরূপভাবে প্রধান বিরোধী দল বিএনপিও এ ব্যাপারে মুখে তালা দিয়ে রেখেছে। বিএনপির ঘোষণাপত্র অনুযায়ী দলটি ইসলামী মূল্যবোধ এবং বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদে বিশ^াসী একটি রাজনৈতিক সংগঠন। তাদের এই দুর্বোধ্যতায় জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হবে। বাবু দিলীপ ঘোষ বারবার পাকিস্তান জিন্দাবাদ স্লোগানের কথা তুলেছেন। এই স্লোগানের সাথে বাংলাদেশের কী সম্পর্ক রয়েছে? বাংলাদেশ থেকে কোনো লোক পশ্চিম বঙ্গে গিয়ে তো আর পাকিস্তান জিন্দাবাদ স্লোগান দিচ্ছে না। দিয়ে থাকলে সেটা পশ্চিম বঙ্গ বা ভারতের অন্য কোনো প্রদেশের লোক এসে দিচ্ছে। নিজেদের দোষ অন্যের কাঁধে চাপানোর প্রবণতা একটি গর্হিত অপরাধ।
কাচের ঘরে বসে অন্যের
ঘরে ঢিল কেন?
বিজেপি নেতারা মনে হয় বুঝতে পারছেন না যে, তারা কাচের ঘরে বাস করছেন। আর কাচের ঘরে বাস করে তারা অন্যের ঘরে ঢিল ছুঁড়ছেন। অন্যেরা যদি এখন তার ঘরে ঢিল ছোঁড়ে তাহলে তাদের ঘর চুরমার হয়ে যাবে। যে দেশের সমাজ বর্ণবাদের অগ্রহণযোগ্য শ্রেণীতে বিভক্ত, যে দেশে ধর্ম নিরপেক্ষতার কথা বলা হলেও মুসলমানদের বিরুদ্ধে সব সময় সাম্প্রদায়িক হলাহল উদগীরণ করা হয়, সেই দেশে অসাম্প্রদায়িকতা ও সন্ত্রাসবাদ-বিরোধিতার উপদেশ শোভা পায় না। এই সেদিনও যে দেশে গো-মাংস ভক্ষণের কারণে দুই ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়, যে দেশে গো-হত্যার অভিযোগে এই সেদিনও মানুষকে এলাকাছাড়া করা হয়, সেই দেশে অসাম্প্রদায়িকতার ললিত বাণী শোভা পায় না। অবাক লাগে তখন, যখন দেখি এই দেশে বাস করেও হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতারা বাংলাদেশের মানুষকে গরু জবাই না করার নসিহত দেন। আরো অবাক লাগে তখন, যখন দেখি আমেরিকায় বসে ঐক্য পরিষদের নেতারা বাংলাদেশে গরু কোরবানি নিষিদ্ধ করার দাবি জানান।
বিজেপির এসব সাম্প্রদায়িক কার্যকলাপে জনগণ মোটেও বিস্মিত হয়নি। কারণ তারা দেখেছে, কীভাবে এ দেশের মুসলমানরা ৬৪ সালের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় নিজেদের জীবন বিসর্জন দিয়ে তাদের হিন্দু ভাইদের বাঁচিয়েছে। তারা যদি সাম্প্রদায়িকতার ব্যাপারে এত পরিষ্কারই হয় তাহলে তারা সেদিন একটি মার্কিন প্রতিনিধিদলকে ভারতে আগমনে ভিসা দেয়নি কেন? উল্লেখ করা যেতে পারে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কমিশন অন ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম নামের একটি সংস্থা ভারত সফর করতে চেয়েছিল। প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ভারতে ধর্মীয় স্বাধীনতা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ এবং তা নিয়ে আলোচনার জন্য অনেক দিন আগেই এ সফরের পরিকল্পনা করা হয়েছিল।
প্রতিষ্ঠানটির প্রধান মি. জর্জ বলেন, ভারতের বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়, নাগরিক সংগঠন এবং বেসরকারি সংস্থাগুলোর প্রতিবেদন থেকে আভাস পাওয়া যায় যে, গত দুই বছরে দেশটিতে ধর্মীয় স্বাধীনতার পরিবেশের অবনতি হয়েছে।
ভারতীয় সাম্প্রদায়িকতা বহুধা বিস্তৃত
এই মার্কিন প্রতিষ্ঠানটি সঠিক কথাই বলেছে। নির্বাচনের আগে বিজেপি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার অনেক মুখরোচক বাণী কপচিয়েছিল। কিন্তু কয়লার কালো রং যায় না ধুলে। বিজেপির অবস্থাও তাই। নির্বাচনে বিপুল জয়লাভের কিছুদিন পরেই তারা স্বরূপে আত্মপ্রকাশ করে। তাদের সাম্প্রদায়িকতা শুধু ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, সমাজের বিভিন্ন স্তরে সেটি দৃঢ়ভাবে প্রোথিত। বর্ণবাদ ভারতীয় শ্রেণীবিভক্তিকে প্রকট করে তুলেছে। ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, কায়স্থ এবং শূদ্র নামক চতুর্বর্ণে ভারতীয় সমাজ বিভক্ত। ধর্মভিত্তিক বর্ণবাদের বাইরেও রয়েছে অস্পৃশ্য সমাজ। এদের মধ্যে রয়েছে হরিজন এবং দলিত। জাত-পাতের এই বিভক্তি ভারতীয় সমাজকে রাজনৈতিকভাবেও মাঝে মাঝে তীব্রভাবে নাড়া দেয়। এই তো কয়েক দিন আগেই দলিত সম্প্রদায় জাঠদের পশ্চাদপদতার বিরুদ্ধে অগ্রসর সমাজের নাগরিক হওয়ার আন্দোলন শেষ হলো। এই আন্দোলনে বেশ কয়েকটি প্রাণ ঝরে গেছে। সরকার তাদের দাবি আংশিকভাবে মেনে নেওয়ায় আন্দোলন সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে।
বাংলাদেশেও হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ব্যানারে সম্প্রদায়বিশেষের একটি সংগঠন দেশে ক্রমাগত এমন সব উসকানিমূলক বক্তৃতা-বিবৃতি দিচ্ছে, যেগুলো দেশে বিরাজমান সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের কারণ হতে পারে। দক্ষিণপন্থী কোনো সংগঠন নয়, আওয়ামী লীগেরই একটি অঙ্গসংগঠন হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ নামক সংগঠন নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে।
গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ওলামা লীগের সভাপতি পীরজাদা পীর আখতার হোসেন বুখারী, কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ক্বাজী মাওলানা আবুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী, সহ সভাপতি হাফেজ মাওলানা আব্দুস সাত্তার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাবীবুল্লাহ রূপগঞ্জী ও দফতর সম্পাদক মাওলানা শওকত আলী শেখ এ দাবি জানান।
বিবৃতিতে ওলামা লীগ নেতারা বলেন, হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্র ভারত বিশ্বের শীর্ষ গরুর গোশত রপ্তানিকারক দেশ। সাম্প্রদায়িক সংগঠন হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ কর্তৃক সেখানে গরু গোশত ব্যবসা বন্ধ করার কথা না বলে এদেশে গরু জবাই নিষিদ্ধের কথা বলা মানে চরম সাম্প্রদায়িক উসকানি দেয়া। ওলামা লীগের বিবৃতি মতে, এ সাম্প্রদায়িক সংগঠন ধর্মের নামে মুসলমানদের ধর্মীয় অধিকার হরণে লিপ্ত। তারা কট্টর মুসলিমবিদ্বেষী। তারা দেশে পরিকল্পিতভাবে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ও ভারতের আরএসএস, শিবসেনা, বজরংয়ের মতো জঙ্গি সংগঠনগুলোর মতবাদ ছড়াতে এ দেশীয় মৌলবাদী হিন্দু সংগঠনগুলোর পৃষ্ঠপোষকতা করছে।
নিউ ইয়র্কেও একই দাবি
এই দাবি শুধু ঢাকা তথা বাংলাদেশেই সীমাবদ্ধ রাখা হচ্ছে না। সুদূর আমেরিকার নিউ ইয়র্কেও সেটি ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে অবিলম্বে আইন করে গরু জবাই বন্ধের দাবি জানিয়েছে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ যুক্তরাষ্ট্র শাখা। শুক্রবার সংগঠনটির পক্ষ থেকে নিউ ইয়র্কে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানানো হয়। এছাড়া দাবি করা হয় যে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নজির বিহীন নিপীড়ন চলছে এবং তাদের বেদখল হয়ে যাওয়া সম্পত্তির মধ্যে চার ভাগের তিন ভাগ দখল করে নিয়েছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। জ্যাকসন হাইটসের একটি রেস্তোরাঁয় আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয় যে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু ও আদিবাসীদের অস্তিত্ব এখন সংকটাপন্ন। সংখ্যালঘুদের জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত করা হচ্ছে বলেও তারা অভিযোগ করেন।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা খুব ভালো আছেন
হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ সাম্প্রতিক কালে কয়েকটি বিষয় নিয়ে বাড়াবাড়ি করছে। এ দেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন এবং তাদের প্রতি অবিচারের যেসব কথা বলা হচ্ছে সেগুলো অতিরঞ্জিত। ভারতের পশ্চিম বঙ্গ এবং অবশিষ্ট ভারতে বসবাসকারী মুসলমানদের তুলনায় বাংলাদেশে বসবাসকারী হিন্দু ভাইয়েরা অনেক ভালো আছেন। পশ্চিমবঙ্গের জনসংখ্যার ২৮ শতাংশ সংখ্যালঘু মুসলমান। সারা ভারতে মুসলিম জনসংখ্যা ২০১১ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ১৪.০২ শতাংশ। পক্ষান্তরে বাংলাদেশে ২০১২ সালে হিন্দু জনসংখ্যা মোট জনসংখ্যার ৮.৫ শতাংশ।
হিন্দু ভাইয়েরা বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ৮.৫ শতাংশ হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং চাকরি-বাকরির ক্ষেত্রে অত্যন্ত ভালো আছেন এবং সুখে আছেন। আমরা বাংলাদেশের মুসলমানরা হিন্দু ভাইদের এই উন্নততর সামাজিক এবং অর্থনৈতিক অবস্থানের কারণে খুশি এবং গর্বিত। পক্ষান্তরে ভারতীয় জনসংখ্যার ১৪.০২ শতাংশ এবং পশ্চিম বঙ্গের জনসংখ্যার ২৮ শতাংশ হওয়া সত্ত্বেও মুসলমানরা বিশাল ভারতে সামাজিক অর্থনৈতিক ও চাকরি-বাকরির ক্ষেত্রে উপেক্ষিত ও বঞ্চিত। ভিনদেশের মানুষ হওয়ার কারণে আমরা এই বিষয়টি নিয়ে হৈচৈ করছি না। তবে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ যদি তাদের কন্ঠ কিছুটা নামিয়ে আনেন তাহলে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় সেটি সহায়ক হবে। অন্যথায় এই শান্ত সামাজিক ও সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতিতে ঢিল ছোঁড়ার জন্য তারাই দায়ী হবেন।
বিএনপির ভূমিকা
বিএনপি নিজেদের জনগণের দল বলে দাবি করে। ওপরে যেসব বিষয় আলোচনা করা হলো সেসব বিষয় জনস্বার্থের বিষয়। কিন্তু বিএনপি জনগণের স্বার্থসংশ্লিষ্ট এসব বিষয় নিয়ে এক কঠোর নীরবতা পালন করছে। এটি চরম বিভ্রান্তিকর। জনগণ এ ব্যাপারে বিএনপির নিকট থেকে ইতিবাচক ভূমিকা চায়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন