ইনকিলাব ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলীয় মনোনয়ণ প্রত্যাশী ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় এলে জিহাদি দমনে আমেরিকা যে আরও কঠোর হবে তার ইঙ্গিত আগেও একাধিকবার দিয়েছেন। তবে এবার তিনি যে কথা বললেন তা রীতিমত চমকে ওঠার মতো। ক্ষমতায় এলে আইএস জিহাদিদের স্ত্রী ও সন্তানদেরও খুন করার নির্দেশ দেবেন বলে অকপটে জানালেন ট্রাম্প। কোন মানবতাবাদে জিহাদিদের নিরপরাধ স্ত্রী ও সন্তানদের খুন করা হবে সে বিষয়ে অবশ্য নিজের মতো করে ব্যাখ্যা দিয়েছেন চরম উগ্র মানসিকতাসম্পন্ন এই হঠাৎ উদীয়মান উগ্রপন্থি রাজনীতিক ডোনাল্ড ট্রাম্প।
গত রোববার ফ্লোরিডায় সিবিসি’র ফেস দ্য নেশন অনুষ্ঠানে ট্রাম্প বলেন, নরম-সরম আইনে কখনও আইএস জিহাদির মতো শক্তিশালী জিহাদি গোষ্ঠীর সঙ্গে লড়াই করে জেতা যাবে না। ওরা যেভাবে অত্যাচার চালায়, ওদের বিরুদ্ধেও একইভাবে অত্যাচার চালাতে হবে। জিহাদিদের কোনো নির্দিষ্ট নিয়ম নেই, ওরা যা ইচ্ছা তাই করতে পারে। সেখানে আমরা যদি কোমল আইনের নমনীতায় বাঁধা থাকি তাহলে কোনো দিনও আইএস নির্মূল করা যাবে না। আইএস জঙ্গিরা কী ভাবে মাথা কেটে মানুষ খুন করে, বন্ধ বাক্সে জীবন্ত মানুষ পুরে সমুদ্রে ভাসিয়ে দেয়, সেসব কথা নিজের বক্তব্যে বারবার তুলে ধরেন ট্রাম্প। এ কারণে ক্ষমতায় এলে মার্কিন আইন আরও কঠোর করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। বর্তমান মার্কিন আইন কোনো কাজের নয় বলেও দাবি করেন ট্রাম্প।
এছাড়া মার্কিন জেলে বন্দিদের জেরায় তিনি ওয়াটারবোর্ডিং পদ্ধতি ফিরিয়ে আনতে চান বলেও জানিয়েছেন ট্রাম্প। এই পদ্ধতিতে জলে ডুবে যাওয়ার মতো অনুভূতি হয়। বীভৎস এই জেরার পদ্ধতিকে অমানবিক আখ্যা দিয়ে ২০০৯ সালে তা বাতিল করে দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। প্রেসিডেন্ট হলে ওয়াটারবোর্ডিংসহ আরও বেশকিছু কঠিন জেরা পদ্ধতি ফিরিয়ে আনা হবে বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন এই রিপাবলিকান মনোনয়ন প্রত্যাশী।
নিউইয়র্কের সাবেক মেয়র মাইকেল ব্লুমবার্গ নির্বাচনী দৌড় থেকে সরে যাবার ঘোষণা দিয়েছেন। আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ার চিন্তা করেছিলেন তিনি। অভিবাসন ও মুসলিম ইস্যুতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের অবস্থানের কঠোর সমালোচনা করেন তিনি। এক প্রতিবেদনে তিনি লেখেন, ট্রাম্প আসলে বিভক্তকারী প্রচরাণায় নেমেছেন। মানুষের সংস্কার আর শঙ্কাকে আক্রমণ করছেন তিনি। টেড ক্রুজ সম্পর্কে ব্লুমবার্গ লেখেন, ক্রুজও অনেক কট্টর অবস্থান নিয়েছেন, তবে ট্রাম্পের মতো তার অবস্থানগুলো এতটা আক্রমণাত্মক নয়।
খবরে বলা হয়, গত সোমবার নিজের ওয়েবসাইটে ‘যে ঝুঁকি আমি নেব না’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য প্রকাশ করে মাইকেল ব্লুমবার্গ বলেন, নির্বাচনে অনৈতিক প্রচারণায় আমি বিব্রত। তিনি রিপাবলিকান নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ডেমোক্রেট নেতা বার্নি স্যান্ডার্সের রীতিবিরুদ্ধ প্রচারণার বিষয়ে উদ্বিগ্ন। এছাড়া আমি নির্বাচনে অংশ নিলে ভোট প্রকৃতই বিভক্ত হয়ে পড়বে। আর যদি এমন হয়, নির্বাচনে কোনো প্রার্থীই প্রেসিডেন্ট হওয়ার মতো ভোট পেলেন না, তাহলে পরিস্থিতি আরো জটিল হয়ে পড়বে। এক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দায়িত্ব পড়বে কংগ্রেসের ওপর। প্রতিবেদনে তিনি লেখেন, আমি নির্বাচনে অংশ নিলে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প বা টেড ক্রুজ ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। কাজেই এ ঝুঁকি আমি নিতে পারি না। এপি, বিবিসি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন