শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

দুই মন্ত্রীকে সুপ্রিম কোর্টে তলব

প্রধান বিচারপতি ও বিচারাধীন মামলা নিয়ে বিরূপ মন্তব্য

প্রকাশের সময় : ৯ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:৪৪ পিএম, ৮ মার্চ, ২০১৬

স্টাফ রিপোর্টার : প্রধান বিচারপতি ও বিচারাধীন বিষয় নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করায় খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হককে সুপ্রিম কোর্টে তলব করেছেন আপিল বিভাগ। গতকাল মঙ্গলবার মীর কাসেমের চূড়ান্ত রায় ঘোষণার আগে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহা নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের নয় সদস্যের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।  আগামী ১৫ মার্চ সকাল নয়টায় ওই দুই মন্ত্রীকে আপিল বিভাগে সশরীরে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের বক্তব্যের বিষয়ে ১৪ মার্চ ব্যাখ্যা দিতে বলেছেন আপিল বিভাগ। বেঞ্চের অপর আট সদস্য হলেন- বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞা, বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি  মির্জা হোসেইন হায়দার, বিচারপতি মো. নিজামুল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ বজলুর রহমান। আদালতে আসন গ্রহণের পর নয়টা ৫ মিনিটে আদেশের আগে প্রধান বিচারপতি বলেন, দেশের সর্বোচ্চ আদালত নিয়ে অশুভ ও অবমাননাকর বক্তব্যে সর্বোচ্চ আদালতের বিচারকরা স্তম্ভিত, যা বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় নগ্ন হস্তক্ষেপ বলে আমরা মনে করি। আদালতে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র আইনজীবীরা। তাদের মধ্যে ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, এডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন। এ ছাড়াও এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
গত ৫ মার্চ (শনিবার) দুই মন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি ও সুপ্রিম কোর্টের বিরুদ্ধে চরম অবমাননাকর বক্তব্য দিয়েছেন, যা বিচার প্রশাসনে হস্তক্ষেপের শামিল বিবেচনা করে কারণ দর্শাতে নোটিস দিয়েছেন আপিল বিভাগ। ওই বক্তব্যের কারণে তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার কার্যক্রম কেন শুরু করা হবে না- তা জানতে চাওয়া হয়েছে নোটিসে। একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি আয়োজিত এক গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান বিচারপতিকে বাদ দিয়ে নতুন বেঞ্চ গঠন করে মীর কাসেমের আপিলের পুনঃশুনানির দাবি তোলেন খাদ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, আপিলের শুনানিতে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন দলের কাজ নিয়ে প্রধান বিচারপতির অসন্তোষ প্রকাশের মধ্য দিয়ে ‘রায়েরই ইঙ্গিত’ মিলছে। এই মামলার রায় কী হবে, তা প্রধান বিচারপতির প্রকাশ্যে আদালতে বক্তব্যের মধ্য দিয়ে আমরা অনুধাবন করতে পেরেছি। তার বক্তব্যের মধ্যে এটা অনুধাবন করেছি, এই মামলায় আর মৃত্যুদ-ের রায় দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হকও প্রধান বিচারপতির মন্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানান বলে গণমাধ্যমের খবর। তাদের ওই বক্তব্য তুমুল আলোচনার জন্ম দেয়।   
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, ওই বক্তব্যকে ‘ঔদ্ধত্যপূর্ণ’ আখ্যায়িত করে বলেন, এটা বিচার বিভাগের ওপর হস্তক্ষেপ। একই সঙ্গে প্রধান বিচারপতি ও বিচারাধীন মামলার বিষয়ে বিরূপ মন্তব্য করায় দুই মন্ত্রীর অপসারণ দাবি করেছেন সমিতির সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন। তিনি বলেন, এই বক্তব্য মীর কাসেম আলীর মামলার ব্যাপারে নয়, এটা সর্বোচ্চ আদালতে ন্যায় বিচারের ক্ষেত্রে আঘাত স্বরূপ। বিচার প্রার্থীরা আজ হতাশ এই বক্তব্যে। আমরা মনে করি, যেহেতু সংবিধান অনুযারী  বিচার  বিভাগ স্বাধীন এবং প্রধান বিচারপতিও বার বার একথাটি উচ্চারণ করে যাচ্ছেন সেক্ষেত্রে এরূপ ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য বিচার বিভাগকে সম্পূর্ণভাবে অবজ্ঞা ও অবমাননার শামিল। এ ধরনের মন্তব্য এড়ানোর পাশাপাশি সবাইকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, বিতর্কিত বক্তব্যে যুদ্ধাপরাধের বিচারই প্রশ্নবিদ্ধ হবে। আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের মতো বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমদও বলেন, বিচারাধীন বিষয় নিয়ে কারও মন্তব্য করা উচিত নয়।  
এদিকে দুই মন্ত্রী বিচারাধীন বিষয়ে মন্তব্য ও প্রধান বিচারপতিকে বাদ দিয়ে মীর কাসেম আলীর মামলা নতুন করে শুনানির দাবি করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিরক্ত হয়েছেন। মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে গত সোমবার প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে তাঁর মত প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিচারাধীন মামলার বিষয়ে কথা বলা তাঁদের কাজ নয়। তিনি এ কথাও বলেছেন, মীর কাসেমের মামলার রায়সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে চলমান বিতর্কের ব্যাপারে দুই মন্ত্রী যা বলেছেন, তা সরকারের বক্তব্য নয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (2)
Neyamat Ullah ৯ মার্চ, ২০১৬, ১১:৩৭ এএম says : 0
egolo sob ........................
Total Reply(0)
তামিম ৯ মার্চ, ২০১৬, ৪:২৭ পিএম says : 0
সব কিছু একটা লিমিট থাকা দরকার।
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন