স্টাফ রিপোর্টার : দশম জাতীয় সংসদের ষোড়শ (বাজেট) অধিবেশন শেষ হয়েছে। গতকাল (বৃহস্পতিবার) রাতে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশন সমাপ্তি সংক্রান্ত প্রেসিডেন্টের আদেশটি পড়ে শোনান। অধিবেশনে বাজেটের পাশাপাশি জনগুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন ইস্যুতে সরব ছিলেন এমপিরা। সাম্প্রতিক সময়ের সব থেকে আলোচিত এই অধিবেশন গত ৩০ মে শুরু হয়। ১ জুন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জাতীয় সংসদে ‘উন্নয়নের মহাসড়কে বাংলাদেশ, সময় এখন আমাদের’ শীর্ষক ৪ লাখ ২৬৬ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট উত্থাপন করেন। প্রস্তাবিত বাজেটের উপর সাধারণ আলোচনা গত ৭ জুন থেকে শুরু হয়। গত ২৮ জুন সংসদ নেতা ও প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে সাধারণ আলোচনা শেষ হয়।
প্রায় সোয়া ৫৭ ঘন্টা ১৪ মিনিটের এই আলোচনায় সরকারী দলের ১৬৫ জন ও বিরোধী দলের ৪২ জন সদস্য অংশ নেন। ওই দিন সংসদে অর্থবিল-২০১৭ পাস হয়। যে বিলে কর-সংক্রান্ত বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ওই বিলে ব্যাংকের সঞ্চয়ী হিসেবে আবগারি শুল্ক কমানো হয়। একইসঙ্গে নতুন মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট/মূসক) আইন কার্যকর আগামী ২ বছরের জন্য স্থগিত করা হয়। এরপর ২৯ জুন নির্দ্দিষ্টকরণ বিল পাসের মাধ্যমে সংসদ কর্তৃক অনুমোদিত ৫ লাখ ৩৫ হাজার ২১৪ কোটি ১৫ লাখ ৯২ হাজার টাকার মধ্যে সংসদের ওপর দায় ১৬৪ কোটি ৫৩ লাখ ৭৩ হাজার ১৮৩ টাকা। এই টাকা অনুমোদনের জন্য কোন ভোটের প্রয়োজন হয় না। সরাসরি সংসদ এই টাকা অনুমোদন করে। অবশিষ্ট ৩৭০ কোটি ৬৭ লাখ ৬৮ হাজার ৪০৯ টাকা ভোটের মাধ্যমে সংসদে গৃহীত হয়।
প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে আলোচনায় সরকার ও বিরোধী দলের সদস্যরা নানা ইস্যুতে সরকার ও অর্থমন্ত্রীর কঠোর সমালোচনা করেন। তারা নানা দাবির কথাও তুলে ধরেন। বাজেট পাসের আগে নতুন ভ্যাট আরোপ বন্ধ, ব্যাংক আমানতের উপর আফগারি শুল্ক কমানোসহ বেশী কিছু দাবি গ্রহণ করা হয়। এই অধিবেশনে বাজেটের পাশাপাশি সারাদেশের বন্যা পরিস্থিতি, চালসহ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, অর্থ পাচার এবং রাজধানীর যানজট, জলজট, চিকুনগুনিয়া রোগের আক্রমণসহ নানা ইস্যুতে অনির্ধারিত আলোচনা হয়েছে। তবে সংসদ অধিবেশন সব থেকে উত্তপ্ত হয়েছে, সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে উচ্চ আদালতের দেওয়া রায় নিয়ে। গত ৯ জুলাই সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় সার্বভৌম সংসদের মর্যদা অক্ষুন্ন রাখার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন সরকার ও বিরোধী দলের সদস্যরা।
আলোচিত এই অধিবেশনে সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ বিলসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিল পাস হয়েছে। এই অধিবেশনে ১৫টি সরকারি বিল পাওয়া যায়। যারমধ্যে ৭টি বিল পাস হয়েছে। অন্যগুলো বিবেচনাধীন রয়েছে। এছাড়া কার্যপ্রণালী বিধির ৭১ বিধিতে ১৯০টি নোটিশ পাওয়া যায়। এরমধ্যে ১২টি নোটিশ গৃহীত হয়। গৃহীত নোটিশের মধ্যে ৭টি নোটিশের ওপর আলোচনা হয়। এছাড়াও ৭১(ক) বিধিতে সংসদ সদস্যদের উত্থাপিত ৫৭ নোটিশ নিয়ে দু’মিনিট করে আলোচনা হয়। অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত দিনগুলোতে মোট ১৬৯টি প্রশ্ন পাওয়া যায়। এরমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৭০টি প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। এছাড়া বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীদের জন্য ২ হাজার ৮০৯টি প্রশ্ন পাওয়া যায়। এরমধ্যে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা এক হাজার ৯৩৮টি প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। এছাড়া বিভিন্ন ইস্যুতে মন্ত্রীরা ৩০০ বিধিতে কয়েকটি বিবৃতি দিয়েছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন