বি এম হান্নান, চাঁদপুর : চাঁদপুরসহ দেশের ৫টি অঞ্চলে চলছে ইলিশের অভয়াশ্রম সংরক্ষণ মৌসুম। মার্চ-এপ্রিল দু’মাসের অভয়াশ্রম মৌসুমে ইলিশ নিধন রোধে নদীতে সব ধরনের জাল ফেলা বন্ধ করেছে সরকার। অভয়াশ্রম কর্মসূচীর ১০ দিন পার হলেও এখনো সরকারের প্রতিশ্রুত খাদ্য সহায়তা পায়নি চাঁদপুরের ৪১ হাজার জেলে। ফলে তারা নিদারুণ কষ্টে জীবন নির্বাহ করছেন। যদিও একশ্রেণির অসাধু জেলে বসে নেই। তারা অবাধে চালাচ্ছে জাটকা নিধন। তাদের অভিমত, ‘কি করমু বলেন, সরকারও দিচ্ছে না, আমরাই বা খামু কি? তাই বাধ্য হয়েই সুযোগ বুঝে নদীতে নেমে পড়ছি।’
যদিও জেলা মৎস্য র্কমকর্তা মো. সফিকুর রহমান জানিয়েছেন, খাদ্য সহায়তা হিসেবে গত বছরের তুলনায় এবছর চাল দ্বিগুণ বরাদ্দ চেয়ে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। একারনেই হয়তোবা একটু দেরী হচ্ছে। তবে চাল ও উপকরন বরাদ্দ পাওয়া মাত্রই আমরা জেলেদের হাতে তুলে দিব। চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর ও দোকানঘর এলাকার জেলে খোরশেদ আলম, সিরাজ মিয়া ও শাহ আলম জানান, সরকারি সহায়তা যথা সময়ে না পেলে তারা ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ে। তাই দ্রুত বরাদ্দকৃত চাল ও বিকল্প কর্মসংস্থানের উপকরণ দেয়ার জোর দাবি জানায় তারা।
এদিকে ইলিশ রক্ষায় গতকাল বৃহস্পতিবার চাঁদপুরে ‘জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহে’র উদ্ভোধন করা হয়েছে। এতে ইলিশের পোনা জাটকা রক্ষায় ২৪ ঘন্টা অভিযান চালানোর পাশাপাশি নিধনকারীদের কঠোর হস্তে দমন করার সিন্ধান্ত নেয়া হয়। এসময় জেলা প্রশাসক মো. আব্দুস সবুর মন্ডল, পুলিশ সুপার শামসুন্নাহারসহ কোষ্টগার্ড, নৌ-পুলিশ ও মৎস্য বিভাগের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, প্রেসক্লাবের সভাপতি বি এম হান্নানসহ জাটকা সংরক্ষণের সাথে সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
এসময় জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জানান, সরকারের জাটকা সংরক্ষণ কার্যক্রম বাস্তবায়নে আমরা সর্বাতœক চেষ্টা করছি। ইতোমধ্যে আমরা অবৈধ মাছ শিকারের অপরাধে অর্ধশতাধিক জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ও জরিমানা করেছি। এছাড়াও অবৈধ কারেন্ট জাল আটক ও জাটকা জব্দ করে গরীব-দুস্থদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১ মার্চ থেকে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীর ১শ’ কিলোমিটার এলাকাসহ দেশের ৫টি অঞ্চলে ইলিশ সংরক্ষণে ‘অভয়াশ্রম কর্মসূচি’ চলছে। আগামি ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত এ কার্যক্রম চলবে। এ দু’মাস অভয়াশ্রম এলাকায় কেউ মাছ শিকার করলে তার বিরুদ্ধে জেল জরিমানার বিধান করেছে সরকার।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন