স্টাফ রিপোর্টার : ‘অবসরের পর রায় লেখা সংবিধান পরিপন্থী’ প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার এমন মন্তব্য নিয়ে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ।
সম্প্রতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা প্রধান বিচারপতি হিসেবে বর্ষপূর্তি উপলক্ষে এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘অবসরের পর রায় লেখা সংবিধান পরিপন্থী। এই মন্তব্যের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে নিজ কার্যালয়ে গতকাল দুপুরে সাংবাদিকদের অ্যাটর্নি জেনারেল বলেছেন, ‘অবসরে যাওয়া বিচারপতিদের রায় লেখা প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেটা তার নিজস্ব বক্তব্য। আমি ব্যক্তিগতভাবে প্রধান বিচারপতির ওই বক্তব্যের সঙ্গে একমত নই।’
প্রধান বিচারপতির ওই বক্তব্য নিয়ে ‘উদ্দেশ্যমূলকভাবে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করা হচ্ছে’ বলেও অভিযোগ করেন অ্যাটর্নি জেনারেল। তত্ত্বাবধায়ক সরকার-সংক্রান্ত সংবিধানের ১৩তম সংশোধনীর বিষয়ে সাবেক বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের রায় প্রসঙ্গে মাহবুবে আলম বলেন, ‘খাইরুল হক অন্য পাঁচ বিচারপতির পক্ষে রায় লিখেছেন।’ এছাড়া ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার-সংক্রান্ত মামলার লিখিত রায় পরিবর্তন করা হয়েছে তাও সত্য নয়’ জানান তিনি।
‘বিচারপতি অবসরে যাওয়ার পর রায় লেখা অবৈধ তা সংবিধানে নেই, রুলসও নেই’ বলে জানিয়েছেন সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ। ‘তবে অবসরে যাওয়ার পর রায় লেখার জন্য বিচারপতিদের ‘সময় নির্ধারণ’ করে দেওয়া যেতে পারে। তবে সে সময় যেন দীর্ঘ না হয়।
ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেন, ‘বিচারক যখন রায় ঘোষণা করেন, তখন রায় বিচারপতি থাকতে ঘোষণা করেন। তখন যা রায় দেওয়া হয়, সেটাই রায়। অ্যাডমিনেস্ট্রেটিভ (প্রশাসনিক) কারণে সে দিনই রায় লেখা সম্ভব হয় না।’ ‘প্রধান বিচারপতি বোধ হয় অ্যাডমিনেস্ট্রেটিভ দৃষ্টিকোণ থেকে ওই কথা বলেছেন। কিন্তু একে যদি এভাবে বলা হয় যে, অবসরে যাওয়ার পর রায় লেখা হলে তা হবে ‘সংবিধান পরিপন্থী’ বিষয়টি এমন নয়। রায় ঘোষণার পর তা লেখার জন্য একটু সময় দিতেই হবে। কারণ আইনজীবীদের দেওয়া বিভিন্ন ডকুমেন্ট পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বিচারকদের রায় লিখতে হয়’ বলে জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, ‘প্রধান বিচারপতির বক্তব্য অনুসারে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী অবৈধ বা অসাংবিধানিক তা বলা যাবে না। শুধু রায়ের ভিত্তিতে সংশোধন হয়নি। সংসদে বিল আকারে তা গেছে ও অধিকাংশ সংসদ সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে তা পাস হয়েছে। ঢালাওভাবে প্রধান বিচারপতির এমন বক্তব্যের সঙ্গে একমত প্রকাশের সুযোগ নেই। এমনকি প্রধান বিচারপতির বক্তব্য কোনো ব্যক্তি পর্যায়ে নেওয়ারও সুযোগ নেই।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন