মুহাম্মদ মনজুর হোসেন খান
\ শেষ কিস্তি \
আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-যে কোনো ব্যক্তি তালবিয়া পাঠ করলেই তাকে সুসংবাদ দেওয়া হয় এবং যে কোনো ব্যক্তি তাকবীর বললেই তাকে সুসংবাদ দেওয়া হয়। জিজ্ঞাসা করা হল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! জান্নাতের (সুসংবাদ দেওয়া হয়)? তিনি বললেন, হ্যাঁ।-তবারানী আউসাত, হাদীস :৭৯৪৩; মাজমাউয যাওয়ায়েদ, হাদীস : ৫৩৭১। আবু হুরায়রা রা. বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে কোনো ব্যক্তি তালবিয়া পাঠ করে, সে দিনই (সূর্যাস্তের সাথে সাথে) তার গুনাহ মাফ হয়ে যায়।-শুয়াবুল ঈমান বায়হাকী, হাদীস : ৪০২৯
বাইতুল্লাহ তাওয়াফের ফযীলত : ইবনে উমর রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি-যে ব্যক্তি যথাযথভাবে সাতবার বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করে এবং দুই রাকাত সালাত আদায় করে তার একটি গোলাম আযাদ করার সমান সওয়াব হয়। তাওয়াফের প্রতি কদমে আল্লাহ তার একটি করে গুনাহ মাফ করেন, একটি করে নেকী লেখেন এবং দশটি মর্যাদা বৃদ্ধি করেন। -মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ৪৪৬২; সুনানে তিরমিযী, হাদীস : ৯৫৯; সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস : ২৭৫৩; মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস : ১৮৪২; মুসনাদে আবু ইয়ালা, হাদীস : ৫৬৮৮; মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হাদীস : ১২৮০৬
মুহাম্মাদ ইবনুল মুনকাদির তার পিতা হতে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাললাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-যে ব্যক্তি সাতবার বায়তুল্লাহর তাওয়াফ করবে, তাতে কোনো ধরনের অনর্থক কাজ করবে না, তবে তার একটি গোলাম আযাদ করার সমপরিমাণ সওয়াব হবে। -মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হাদীস : ১২৮০৭; তবারানী, হাদীস : ৮৪৫; মাজমাউয যাওয়ায়েদ, হাদীস : ৫৫০৪। ইবনে আববাস রা. বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-আল্লাহ তাআলা বায়তুল্লাহর হজ্বকারীদের উপর প্রতিদিন একশত বিশটি রহমত নাযিল করেন, তার ষাটটি তাওয়াফকারীদের জন্য, চল্লিশটি মুসল্লীদের জন্য এবং বিশটি দর্শকদের জন্য।-শুয়াবুল ঈমান বায়হাকী, হাদীস : ৪০৫১; তারগীব ১৭৮৬
হাজরে আসওয়াদ ও রূকনে ইয়ামানী স্পর্শ করার ফযীলত : ইবনে ওমর রা. বর্ণনা করেন-আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, হাজরে আসওয়াদ ও রূকনে ইয়ামানীর স্পর্শ পাপসমূহকে মুছে দেয়।-সুনানে তিরমিযী, হাদীস : ৯৫৯; মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ৫৭০১; সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস : ২৭২৯; মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস : ১৮৪২। ইবনে আববাস রা. হতে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাললাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- অবশ্যই আল্লাহ তাআলা কেয়ামতের দিন হাজরে আসওয়াদকে উঠাবেন। তার দুটি চোখ থাকবে, যা দিয়ে সে দেখতে পাবে। একটি জিহবা বা মুখ থাকবে, যা দিয়ে সে কথা বলবে এবং যারা তাকে যথার্থভাবে স্পর্শ করেছে তাদের পক্ষে সাক্ষ্য দেবে। -সুনানে তিরমিযী, হাদীস : ৯৬১; মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ২২১৫; সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ৩৭০৪; সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস : ২৭২৫; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস : ২৯৪৪; মুসতাদরাকে হাকিম, হাদীস : ১৭২৩। ইবনে আববাস রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাললাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, হাজরে আসওয়াদ হল জান্নাতের পাথর, তা দুধের চাইতেও বেশি সাদা ছিল, কিন্তু আদমসন্তানের গুনাহ একে কালো করে দিয়েছে। -সুনানে তিরমিযী, হাদীস : ৮৭৭; সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস : ২৭৩০; সুনানে নাসায়ী, হাদীস : ২৯২৫। অন্য বর্ণনায় রয়েছে, হাজরে আসওয়াদ বরকের চাইতে সাদা ছিল, কিন্তু শিরকপন্থীদের পাপ তাকে কালো বানিয়ে ফেলেছে। -মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ২৭৯৫; শুয়াবুল ঈমান, বায়হাকী, হাদীস : ৪০৩৪। আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি-হাজরে আসওয়াদ ও মাকামে ইবারাহীমী জান্নাতের দুটি ইয়াকুত পাথর। এ দুটির জ্যোতি আল্লাহ তাআলা নিস্প্রভ করে দিয়েছেন। তিনি যদি এ দুটির জ্যোতি নিস্প্রভ না করতেন, তাহলে তা পূর্ব-পশ্চিমের মাঝে যা কিছু আছে সব আলোকিত করে দিতো। -মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ৭০০০; সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ৩৭১০; সুনানে তিরমিযী, হাদীস : ৮৭৮; সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস : ২৭৩২; মুসতাদরাকে হাকিম, হাদীস : ১৭০২
লেখক : প্রাবন্ধিক ও কলামিস্ট
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন