শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বিএনপি ঘুরে দাঁড়াতে পারবে তো?

প্রকাশের সময় : ১৪ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টালিন সরকার : তোয়াজ-তোষামোদ পছন্দ করলেও কেউই গঠনমূলক সমালোচনা সহ্য করেন না। অথচ গঠনমূলক সমালোচনা ‘ভুল শুধরে’ নেয়ার সুযোগ সৃষ্টি করে। সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলো গঠনমূলক সমালোচনা সহ্য করেন না। যার কারণে ইনকিলাব সম্পাদকের নির্দেশনা-পরামর্শ ‘ইসলাম ধর্ম’ ছাড়া কিছু কিছু বিষয়ে নীরব থাকাই শ্রেয়। কিন্তু বিবেক বলেতো কথা আছে! যারা হালুয়া-রুটি খেয়ে এবং আগামীতে ক্ষমতার উচ্ছিষ্টের প্রত্যাশায় হিল্লী-দিল্লী ও বড় দুই দলের কাছে ‘বিবেক বন্ধক’ রেখেছেন তাদের কথা ভিন্ন। সাধারণ মানুষ হিসেবে সব সময় নীরব থাকা যন্ত্রণাদায়ক। দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল বিএনপি’র কাউন্সিল নিয়ে তোড়জোড় চলছে। কেন্দ্র থেকে শুরু করে শেকড় পর্যায়ের নেতারা বলছেন ৬ষ্ঠ কাউন্সিলের মাধ্যমে বিএনপি ঘুরে দাঁড়াবে। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন সত্যিই কি বিএনপি ঘুরে দাঁড়াতে পারবো?
বিএনপির সাবেক এমপি শরফুজ্জামান জাহাঙ্গীর ফোনে ‘রাজনীতির’ খবর জানতে চাইলেন। অতঃপর বললেন, আশপাশে থাকলে চলে আসুন আপনাকে বহুদিন দেখিনা। শনিবার দুপুরে সেগুনবাগিচায় রিপোর্টার্স ইউনিটিতে খেয়ে কয়েকশ’ গজ দূরে পল্টনে ওই নেতার অফিসে ঢুঁ মারতেই চোখে পড়লো এলাহী কা-। বিএনপির কাউন্সিল উপলক্ষে প্রচার-প্রকাশনা শাখার দায়িত্বপ্রাপ্তরা মহাব্যস্ত। রুমে ঢুকতেই সাংবাদিক নেতা নজরুল গবেষক সাবেক সহকর্মী প্রতিষ্ঠিত এক কবি’র দরাজ গলা; এই দেখ কে এসেছে! একজন উঠে চেয়ারে জায়গা করে দিতেই কবি ভাইয়ের হাঁকডাক; কে আছিস দ্রুত চা নিয়ে আয়! ওই সিনিয়র ভাই বললেন, সন্ধ্যায় এলে নোমান (আবদুল্লাহ আল নোমান) ভাইকে পেতে। চা এলো। একে একে সকলেই বিদায় হয়ে গেলেন। যারা বের হয়ে গেছেন চায়ে চুুমুক দিতেই তাদের একজন ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিলেন। বিএনপি সমর্থিত শত নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব ওই কবির কানের কাছে গিয়ে ফিস ফিস করে জানতে চাইলেন, ‘....ভাই, চেয়ারপার্সন ও ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের বাণী নেয়া হয়েছে। এখানে কি ‘ভাইয়ার’ বাণী যাবে? নিজের লেখার প্রুফ দেখা এবং অতিথির সঙ্গে গল্পে ব্যস্ত সাংবাদিক নেতা জবাব দিচ্ছেন না। অতঃপর ‘...ভাই, ভাইয়ার বাণী কি এ বইয়ে যাবে’ এমন ভাবে ‘ভাইয়া ভাইয়া’ বলছেন যেন কেউ শুনে ফেললে বিপদ হবে। আর শুধু ভাইয়া ভাইয়া বলছেন ওই ভাইয়ার নাম উচ্চারণ করছেন না। সাবেক সহকর্মী বললেন, অবশ্যই যাবে। .......। অবস্থা এমন যে সুদূর ল-নে থাকা তারেক রহমানের নাম বলা যেন বেয়াদবী। এখানে তার নাম উচ্চারণ করলে তিনি ল-ন থেকে শুনে অসম্মানবোধ করবেন। সেই ভয়েই তারেকের নাম উচ্চারণ না করে ‘ভাইয়া’ নামের পরিচিত করে তোলা হয়েছে। তোষামোদকারীদের খপ্পরে কি পড়ে গেছে বিএনপি? বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতো বরেণ্য নেতার নাম ধরে ‘মুজিব ভাই, মুজিব ভাই’ বলতেন দলের নেতারা। অথচ বিএনপিতে...! তারেক ভাই সম্বোধনের কারণে তিনি কি কখনো অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন, নাকি দলের কাউকে শাস্তি দিয়েছেন? না হলে এতো তোষামোদ কেন? পত্রিকায় খবর বের হয়েছে আসন্ন কাউন্সিলে দলের চেয়ারপার্সন ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যানের ক্ষমতা সমান করা হচ্ছে। সংগঠন পরিচালনার ক্ষেত্রে বাড়তি ক্ষমতা ভোগ করবেন সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান। আর মহাসচিবের ক্ষমতা কমাতে অতিরিক্ত মহাসচিব পদ সৃষ্টির চেষ্টা চলছে। সত্যিই যদি এমন হয়, তাহলে বিএনপি কি ঘুরে দাঁড়াতে পারবে? এখনো বিএনপি দাঁড়িয়ে রয়েছে বেগম খালেদা জিয়ার ইমেজের ওপর। দলের এই ভঙ্গুর অবস্থায় দলের অনেক সুবিধাবাদী নেতা এপাশ ওপাশ করলেও সারাদেশের নেতাকর্মীরা বেগম খালেদা জিয়ার দিকে তাকিয়ে। অথচ তার ক্ষমতা খর্ব করে অন্যের ক্ষমতা বৃদ্ধির আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হলে বিএনপির পরীক্ষিত নেতারা কি কাজকর্মে উৎসাহ পাবে? দলটির এক নেতা দুঃখ করে বললেন, অবস্থা এমন পর্যায়ে গেছে যে লন্ডনে অবস্থানরত তারেক রহমান তথা ভাইয়াকে খুশি করতে সুবিধাবাদীদের মধ্যে প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেছে। দলকে কিভাবে সুসংগঠিত করে সামনে জনগণের ভোটের অধিকার আদায় করা যায় সেদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই।
বিএনপি জাতীয় কাউন্সিল ১৯ মার্চ। দেশের মানুষকে বিপদের মুখে ফেলে নেতারা যখন ভারতে পালাতে ব্যস্ত তখন ‘আমি মেজর জিয়া বলছি---’ স্বাধীনতার ঘোষণা ৭ কোটি মানুষের মধ্যে অভয়বাণীর কাজ করে। ঘুরে দাঁড়ায় দেশের লড়াকু মুক্তিযোদ্ধারা। অতঃপর ’৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে সব রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের মাধ্যমে জনগণের মৌলিক অধিকারসমূহ হরণ করে একদলীয় বাকশাল কায়েম করা হয়। অবরুদ্ধ গণতন্ত্রকে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে মুক্তি দিয়ে বহুদলীয় গণতন্ত্রের পুনঃপ্রবর্তন করেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ১৯ দফা কর্মসূচির মাধ্যমে বিএনপি প্রতিষ্ঠা করে। সে বিএনপির একি হাল! বহুদলীয় গণতন্ত্র চর্চায় প্রতিষ্ঠিত বিএনপিতে জাতীয়তাবাদী ও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসীদের মহামিলন ঘটানো হয়। যদিও গঠনতন্ত্রের ঘোষণা অনুযায়ী বিএনপি নির্বাচনমুখী পেটি বুর্জোয়া গণতান্ত্রিক দল। সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগও তাই। এ ধরনের দল গণতন্ত্রের চর্চা ও অনুশীলন, আইনের শাসন তথা সুশাসন কায়েমের ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আদর্শবাদী-নীতিবান ক্যারিয়ার রাজনীতিবিদদের নেতৃত্বে এমন দলে দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে সঙ্গে দেশপ্রেমিক জাতীয় বুর্জোয়াদের সমাবেশ ঘটে। বিএনপিতেও তাই ঘটেছে।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারীর নির্বাচনের পরের মাসে ইনকিলাবের ওপর দিয়ে বয়ে যায় সুনামী। সরকারের রক্তচক্ষু থেকে বাঁচতে রাজনীতি নিয়ে লেখালেখিকে ‘ছুটি’ দিতে হয়। সম্পাদকের আদেশে চার দফায় দেশের বিভিন্ন জেলায় গ্রাম-বাংলার মানুষের দুঃখ-দুর্দশা, নদী পাড়ের মানুষের জীবন চিত্র দেখতে বের হই। দেশের ৩০/৩৫টি জেলা ঘুরে বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষের সঙ্গে কথা বলে মনে হয়েছে সাধারণ মানুষ বিএনপির আন্দোলনে সক্রিয় ছিল। যার জন্য হামলা-মামলা, পুলিশী জুুলুম-নির্যাতন, গ্রেফতারসহ চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে মানুষ। গ্রাম-গঞ্জের যারা জাতীয়তাবাদী ও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী তারা যেন ‘হাসতে’ ভুলে গেছে। কোটি কোটি মানুষ তাকিয়ে রয়েছে বিএনপির দিকে। দলটি কি সিদ্ধান্ত নেয় তা জানার জন্য উদগ্রীব। বিএনপি কি সেই উদগ্রীব মানুষগুলোর উদ্বেগ উৎকন্ঠা দূর করে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে জাতীয় কাউন্সিলের মাধ্যমে?
দেশের ক্ষমতাকেন্দ্রিক বড় দুটি দলের পরিচালনা পদ্ধতি ‘করপোরেট হাউসের’ মতো। অনেকটাই ব্যক্তি মালিকানাধীন পারিবারিক সম্পত্তি। একক ব্যক্তির ইমেজের ওপর নির্ভর করে পরিচালিত হয় দল। বিএনপি-আওয়ামী লীগ দু’দলেই নেতা বানানো হয় সুপার ইম্পোজিশনের মাধ্যমে। সভাপতি বা চেয়ারপারসনের ইচ্ছায় নেতা পদ পান আবার অনিচ্ছায় পদ হারান। বেগম খালেদা জিয়ার ইমেজের ওপর ভর করে দল পরিচালিত হলেও তারেক রহমান দীর্ঘদিন থেকে দলে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন। তারেকের মস্তিষ্ক প্রসূত ‘তৃণমূল সংলাপ’ ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল নেতাকর্মীদের মধ্যে। দলের তরুণদের মধ্যে তাকে নিয়ে আগ্রহ, উৎসাহ-উন্মাদনা রয়েছে। হয়তো তিনিই আগামী দিনে বিএনপির মূল নেতৃত্ব দেবেন। কিন্তু তোষামোদকারীরা তাকে নিয়ে একি শুরু করেছেন? এটা ঠিক দলের অভ্যন্তরে আওয়ামী লীগের মতো বিএনপিতেও গণতন্ত্রের কোনো চর্চা নেই; চর্চার সুযোগ নেই। সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় কারও ন্যূনতম কোনো ভূমিকা রাখারই সুযোগ নেই। তারপরও বিএনপি সিলেটে গণতান্ত্রিক ভাবে জেলা কমিটি গঠন করে দৃষ্টান্ত দেখিয়েছে। অন্যান্য জেলায় সেটা হচ্ছে না কেন? খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অধিকাংশ জেলা-উপজেলা পর্যায়ে কোথাও সাংগঠনিক কর্মসূচি এবং কাউন্সিল বা সম্মেলনের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচন করা হয়নি। অধিকাংশ কমিটি হয়েছে ঢাকায় বসে। যারা ঢাকার ‘পাইকারদের’ ম্যানেজ করতে পেরেছেন তারাই হয়েছেন জেলার, থানার ‘নেতা’। জুলুম-নির্যাতন সহ্যকারীরা হয়েছে উপেক্ষিত। কেনা-বেচার এসব কমিটির পদ-পদবিধারীরা বেগম জিয়ার ডাকে পালিত ৯২ দিনের অবরোধে কোথায় ছিলেন? কেউ সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করে চলেছেন; কেউ বিদেশে পালিয়েছিলেন। কমিটি গঠনের আগে কেউ সরাসরি কেন্দ্রের পাইকারদের দ্বারস্থ হয়েছেন কেউবা দালাল ধরে কেন্দ্রের কিছু নেতাকে ম্যানেজ করে পদ-পদবি বাগিয়ে নিয়েছেন। যার জন্য ইতোমধ্যেই ক্ষোভ-অসন্তোষ শুরু হয়ে গেছে। বেগম জিয়ার ডাকে সাড়া দিয়ে পথে নেমে সারাদেশের হাজার হাজার কর্মী জেলে গেছেন, মামলা, মোকদ্দমা হলো লাখো নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে, আসামি করা হয় নামে-বেনামে অসংখ্য নেতাকর্মী-সংগঠককে। জেল-জুলুম-নির্যাতন সহ্য করা নিবেদিতপ্রাণ এসব নেতা-কর্মীর ক্ষোভ পকেট কমিটির বিরুদ্ধে, ক্ষোভ পদ-পদবি বেচা-কেনার বিরুদ্ধে।
আসন্ন জাতীয় কাউন্সিলের আগেই বেগম খালেদা জিয়া চেয়ারপার্সন ও তারেক রহমান সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। কাউন্সিলের আগে মা-ছেলের আগাম নির্বাচিত হওয়া নিয়ে নানান জনে নানা কথা বলছেন। কিন্তু নেতাকর্মীদের জন্য আনন্দের খবর হলো বিগত দিনগুলোতে নেতাকর্মীদের কর্মকা- মূল্যায়ন করতেই কাউন্সিলের পর সময় নিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করার চিন্তাভাবনা হচ্ছে।
বিএনপি বিপ্লবী দলও নয়; আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলামও নয়। জাতীয়তাবাদী ও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী দল। ক্ষমতাকেন্দ্রিক রাজনীতি চর্চায় অভ্যস্ত। ক্ষমতার রাজনীতিতে পক্ষ-প্রতিপক্ষ এবং ভোটের হিসেব থাকে। জাতীয়তাবাদ, ইসলামী মূল্যবোধ ও ভোটের রাজনীতিতে দলটি কি কৌশলী ভূমিকা নিয়েছে? জাতীয়তাবাদের মূলমন্ত্রই হলো দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় স্বার্থগুলোতে সর্বাগ্রে প্রাধান্য দেয়া। অথচ সীমান্ত হত্যা, তিস্তার পানি, ট্রানজিট, দিল্লীর প্রতি সরকারের নতজানু মানসিকতায়সহ জাতীয় ইস্যুগুলোতে নীরবতা পালন করছে। উল্টো দিল্লী তোয়াজ নীতি গ্রহণ করেছে। ভোটের জন্য প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগ ‘ভোট সংরক্ষণের মহাপরিকল্পনা’ বাস্তবায়ন করছে। সংখ্যালঘুদের ভোট নিশ্চিত করতে তারা তাদের সর্বাগ্রে সুবিধা দিচ্ছে। কি প্রশাসন কি অন্যত্র সর্বত্র সংখ্যালঘুদের অগ্রাধিকার দিয়েছে শুধু ভোট ব্যাংক রক্ষার জন্য। পাশাপাশি ইসলামিক ফাউ-েশন, মসজিদ মিশন প্রকল্প এবং রাজনৈতিক আচরণের মাধ্যমে ইসলামী মনোভাবাপন্ন ভোটারদের নৌকায় তোলার চেষ্টা করছে। অথচ বিএনপি? বলা হয়ে থাকে জাতীয়তাবাদী ও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসীরা সবাই বিএনপিকে ভোট দেয়। বিশেষ করে আলেম-ওলামা, মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষক, পীর-মাশায়েখরা আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ বিএনপিকে ভোট দিতে অভ্যস্ত। কিন্তু তাদের সঙ্গে যোগাযোগ এবং তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি নিয়ে বিএনপি কি কখনো কর্মসূচি দিয়েছে? প্রচারণা রয়েছে মাদ্রাসার ছাত্রশিক্ষকদের কাছ থেকে বিএনপি প্রায় দেড় থেকে দুই কোটি ভোট পেয়ে থাকে। মতান্তরে এই ভোটের সংখ্যা আরো বেশি। এই ভোট ব্যাংক রক্ষায় রাজনৈতিক ভাবে কি কোনো পদক্ষেপ বিএনপি এই ৭ বছরে নিয়েছে? বিপদগ্রস্ত মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকদের পাশে দাঁড়িয়েছে? হেফাজতের ঘটনার পর থেকে আওয়ামী লীগ ওই সংগঠনের শীর্ষ নেতা ও তার চারপাশের নেতাদের ম্যানেজ করতে শুধু রাষ্ট্রযন্ত্রই নয়; অন্যান্য ভাবে নানান উদ্যোগ নিয়েছে। অথচ মতিঝিলের শাপলা চত্বরে ঐতিহাসিক সমাবেশের সমর্থন দেয়ার পর সংগঠনটির সঙ্গে আর যোগাযোগ রাখার প্রয়োজন মনে করেনি। নজরদারী না থাকলে হাই নিরাপত্তায় থাকার পরও বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ পাচার হয়ে যায় অন্যত্র। আর ইসলামী দল ও আলেম ওলামাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রক্ষা, তাদের সঙ্গে সর্বক্ষণ যোগাযোগ এবং সুখ-দুঃখে তাদের পাশে না দাঁড়ালে তাদের কি সমর্থন পাওয়া যাবে? নাকি ‘আলেম ও মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকরা বিএনপিকে ভোট না দিয়ে যাবে কোথায়’Ñ এই মানসিকতায় ভুগছেন বিএনপির দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ? ১/১১ পর বিএনপিকে টুকরো টুকরো করার চক্রান্ত হয়েছে। শুধু তাই নয়, ৭ বছর ধরে সে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। কখনো ব্যারিষ্টার নাজমুল হুদা, কখনো শহিদুল হক জামালকে দিয়ে সে চেষ্টা হয়েছে। আবার আসল বিএনপি বানানো হয়েছে। ১/১১ পর সুবিধাবাদী মান্নান ভূঁইয়ার তথাকথিত সংস্কার কর্মসূচিতে যোগ দেয়ায় সিটিং ১০৫ জন এমপিকে নমিনেশন দেয়া হয়নি। তাদের নিয়ে বিএনপিকে খ- বিখ- করার চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু বিএনপির নিবেদিতপ্রাণ নেতাকর্মীদের বেগম জিয়া থেকে আলাদা করা যায়নি। তোষামোদী নয়; এসব ভেবে চিন্তে বিএনপিকে অগ্রসর হতে হবে। প্রশ্ন হলো মানুষের সৃষ্ট সুনামীতে আক্রান্ত বিএনপি কাউন্সিলের মাধ্যমে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে তো?

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
তুষার ১৪ মার্চ, ২০১৬, ১০:৫৮ এএম says : 0
সেরকম কোন লক্ষণ দেখছি না।
Total Reply(0)
Muhammad Eman Uddin ১৪ মার্চ, ২০১৬, ১:৩১ পিএম says : 0
কেন নয় ?আ.লীগ যদি একুশ বছর পরে ঘুরে দাড়াতে পারে তবে, বিএনপি বারো বছর পরে পারবে না কেন ?
Total Reply(0)
Qudry Sumon ১৪ মার্চ, ২০১৬, ১:৩১ পিএম says : 0
Partei hobe , etar sathe desher ostitto nirvorkorche .
Total Reply(0)
Kamal Pasha ১৪ মার্চ, ২০১৬, ১:৩৪ পিএম says : 0
In sha allah parbe.
Total Reply(0)
Jewel Azad ১৪ মার্চ, ২০১৬, ১:৩৪ পিএম says : 1
অবশ্য পারবে
Total Reply(0)
Afrin ১৪ মার্চ, ২০১৬, ১:৩৬ পিএম says : 0
100% parbe
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন