বিশেষ সংবাদদাতা, চট্টগ্রাম ব্যুরো : মিয়ানমারের নেত্রী তথাকথিত ‘মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের’ মিথ্যা বুলি আওড়ানো খলনায়িকা অংসান সুচি’র সর্বশেষ মন্তব্যে হতভম্ব, হতাশ ও লজ্জিত হয়েছেন স্বয়ং তার জীবনীকার জাস্টিন উইন্টেল। ‘রাখাইনে (আরাকান) সবাই নিরাপদ। আমরা নাগরিকদের রক্ষা করছি। অথচ বিশ্বের মিডিয়া ভুয়া খবর ও ছবি ছড়িয়ে দিচ্ছে’- মর্মে অংসান সুচির মন্তব্যের প্রসঙ্গে গতকাল (বৃহস্পতিবার) বিস্ময় প্রকাশ করলেন জাস্টিন উইন্টেল। ১৯৪৯ সালে লন্ডনে জন্মগ্রহণকারী প্রখ্যাত ব্রিটিশ লেখক, সম্পাদক ও সাংবাদিক সুচির জীবনকাহিনী নিয়ে ‘পারফেক্ট হোস্টেজ’ বইটি লিখেন।
মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুচির এসব মন্তব্যে জাস্টিন সোজাসুজি বলেছেন, ‘আমি তার এই মন্তব্যে হতবাক। তার এহেন মন্তব্য তো তাকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাতারে ফেলে দিচ্ছে। তিনি কার্যত দেশটির ‘নেতা’ হলেও আসলে তিনি এখন সেনাবাহিনীর পকেটে’।
আন্তর্জাতিক মিডিয়া সূত্রে আরও জানা যায়, জাস্টিন বলেছেন- ‘মিয়ানমার সেনাবাহিনী সম্পর্কে তিনি সবসময়ই কিছুটা অস্পষ্ট থাকেন। কারণ দেশটির সেনাবাহিনী গড়ে তুলেছিলেন তার পিতা (অং সান)। সুচি হাড্ডিমজ্জায় বার্মিজ। আমার বলতে খারাপ লাগছে, কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে মিয়ানমারের পশ্চিমে রাখাইনে যা ঘটছে তা চরম জাতিবিদ্বেষী। সেখানে মুসলিম রোহিঙ্গাদেও প্রতি সমন্বিত বিদ্বেষ রয়েছে’।
প্রসঙ্গত গত মঙ্গলবার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান সরাসরি অংসান সুচিকে টেলিঢেফান করেন এবং রাখাইনে মুসলমান রোহিঙ্গা বর্মী নাগরিকদের উপর সেনাবাহিনীর অব্যাহত গণহত্যা, জুলুম-নিপীড়নের কঠোর নিন্দা এবং অনতিবিলম্বে তা বন্ধের তাগিদ দিয়েছেন।
এর পরদিনই (বুধবার) সুচির বরাত দিয়ে তার অফিস থেকে বিবৃতিতে দম্ভোক্তি ও সাফাই করে বলেন, ‘আমরা রাখাইনে সবাইকে রক্ষা ও নিরাপত্তার জন্য কাজ করছি। আর মিডিয়া ভুয়া খবর ও ছবি ছড়িয়ে দিয়ে সন্ত্রাসীদের স্বার্থরক্ষায় উসকে দিচ্ছে। এমনকি সুচি দাবি করেন, তিনি নাকি মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের সুরক্ষা না থাকার বিষয়টি তিনি অন্য অনেকের চেয়ে ভালই বোঝেন!
তার এসব উদ্ভট ও বানোয়াট সাফাই বিশ্বের বিবেকবান মানুষকে আহত ও ক্ষুব্ধ করেছে। দাবি উঠেছে তার নোবেল পুরস্কার কেড়ে নেয়ারও।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন