শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

রোহিঙ্গা ইস্যুতে সরকার জাতিকে দ্বিধা-বিভক্ত করছে : বিএনপি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

রোহিঙ্গা সঙ্কট মোকাবেলায় সরকার জাতীয় ঐক্য গড়ার পরিবর্তে দ্বিধা-বিভক্ত করছে বলে অভিযোগ করেছে ২০ দলীয় জোট। জোটের প্রধান শরিক দল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এত বড় একট সঙ্কটে যে কোন সভ্য সরকার হলে অবশ্যই সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে একটি জরুরি সভা ডাকত এবং সেখানে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করতো। কিন্তু তা না করে বিনাভোটের সরকার জাতিকে বিভক্ত করার কাজ করছে। গতকাল (শনিবার) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে জোটের এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন তিনি। মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা (সরকার) জাতিকে বিভক্ত করে ফেলেছেন। আপনাদের কাছে সবচেয়ে বড় শত্রু হচ্ছে বিএনপি আর ২০ দল। নাম শুনলে গন্ধ শুনলে যেন আপনাদের ভয়াবহ একটা রি-অ্যাকশন তৈরি হয়। এভাবে তো হবে না। রোহিঙ্গা সঙ্কট মোকাবেলায় সরকার ব্যর্থ হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, আপনারাই এটা নিয়ে রাজনীতি করছেন। আমরা ত্রাণ দিতে যাব, সেটাও দিতে দেবেন না। তাহলে মানুষ যাবে কোথায়? ২০ দলীয় জোটকে ভয় দেখাতে কল্যাণ পার্টির মহাসচিব এম এম আমিনুর রহমানকে অপহরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব ফখরুল। তিনি বলেন, আমিনুর রহমানকে তুলে নেওয়া হল, তিনি কি খুব বেশি থ্রেট ফর দ্য গভর্নমেন্ট। নো। এটা একটা সিমবলিক ব্যাপার। ২০ দলের এই পর্যায়ের নেতা এই প্রথম গুম হল। কারণ হচ্ছে ভয় দেখানো। কারণ হচ্ছে, আমাদের সবাইকে স্তিমিত করে দেওয়া, কাজ করার থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করা। এত কিছুর মধ্যেও ২০ দলীয় জোট ‘অটুট ও ঐক্যবদ্ধ’ আছে বলে দাবি করেন ফখরুল। কল্যাণ পার্টির মহাসচিবকে উদ্ধার করে তার পরিবারের কছে ফেরত দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
সা¤প্রতিক ‘গুমের’ ঘটনাগুলো তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশ কি ‘সিকিউরিটি স্টেট’ হয়ে গেছে? যখন বড় একটা রাজনৈতিক জোটের শরিক দলের একজন মহাসচিব নিখোঁজ হয়ে যায়, যখন একজন সাবেক সংসদ সদস্য নিখোঁজ হয়ে যায়, যখন একজন কমিশনার নিখোঁজ হয়ে যায়, যখন আইনজীবী নিখোঁজ হয়ে যায়, যখন ফরহাদ মজহারের মতো ব্যক্তি নিখোঁজ হওয়ার পর ফেরত দেওয়া হয়, তখন এদেশে কে নিরাপদ? আমিনুর রহমানের পর স¤প্রতি ব্যবসায়ী অনিরুদ্ধ সরকার, ব্যবসায়ী সৈয়দ সাদাত হোসেন, কানাডা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইশরাকও নিখোঁজ বলে জানান বিএনপি মহাসচিব। তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, অনেক খবর আপনারাও পান না, নিয়ে চলে যায়। কয়েকদিন আগে রংপুর একজন স্কুল মাস্টারকে তুলে নিয়ে গেছে, কোনো খবর নেই। এই যদি রাষ্ট্রের অবস্থা হয়, রাষ্ট্র যদি এভাবে জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে, প্রতারণা করে এবং জনগণকে সঠিক তথ্য না দেয়, তাহলে তো সেই রাষ্ট্রকে নিঃসন্দেহে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র বলতে হবে। তুলে নেওয়া দুই যুবককে পরে নব্য জেএমবির সদস্য হিসেবে গ্রেপ্তার দেখানোর ঘটনা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা বরারবই বলে আসছি, এই বিষয়গুলোতে কেন আপনারা সত্য গোপন করছেন, কেন এই ধরনের নাটক তৈরি করছেন?
সরকার চালের ঊর্ধ্বগতি রোধে সরকার ব্যর্থ হয়েছে দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার কোথাও সফল নয়। আজকে চালের দাম আকাশচুম্বি হয়ে গেছে। মানুষ খেতে পারছে না। কালকে দেখলাম টেলিভিশনে একজন শ্রমিক (চালের আড়তে কাজ করেন) বলছেন, আমি তো এই চাল খেতে পারছি না, আমি বহন করি। কারণ এই চাল কেনার সামর্থ্য আমার নেই।
সংবাদ সম্মেলনে কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, ইসলামী ঐক্যজোটের এম এ রকীব, খেলাফত মজলিশের মজিবুর রহমান পেশোয়ারি, এলডিপির রেদোয়ান আহমেদ, জাগপার রেহানা প্রধান, খন্দকার লুৎফর রহমান, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, এনডিপির খন্দকার গোলাম মূর্তজা, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের আবদুর রব ইউসুফী, মহিউদ্দিন ইকরাম, সাম্যবাদী দলের সাঈদ আহমেদ, ন্যাপের গোলাম মোস্তফা ভুঁইয়া, ইসলামিক পার্টির আবুল কাশেম চৌধুরী, পিপলস লীগের সৈয়দ মাহবুব হোসেন, মুসলিম লীগের শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, বিজেপির আবদুল মতিন সউদ, ডিএল-এর সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি উপস্থিত ছিলেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন