স্টাফ রিপোর্টার : আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বর্তমান চিত্র মাথায় রেখে বিশেষ নিরাপত্তা বলয় তৈরি করার প্রস্তুতি নিয়েছে বিএনপি। শুধু বিদেশী নয় দেশীয় অতিথিসহ কাউন্সিলে উপস্থিতদের নিরাপত্তায় এ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এর জন্য বিএনপিপন্থি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তথা সেনা ও পুলিশের সাবেক কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে প্রশিক্ষক ও বিশেষ বাহিনী গঠন করা হয়েছে। এই উপকমিটির আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হান্নান শাহ। তিনি জানান, বিএনপি গঠিত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বর্তমান আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চেয়ে আরো সতর্কতার সাথে দায়িত্ব পালন করবে।
এদিকে আগামীকাল বুধবার থেকে কাউন্সিলর কার্ড বিতরণ শুরু করবে বিএনপি। ২ হাজার ৭৫৩ কাউন্সিলরের সঙ্গে চেয়ারপার্সনের ১০ শতাংশ কোটাসহ প্রায় ৩ হাজার কাউন্সিলের তালিকা এরই মধ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে। এছাড়া কাউন্সিল ভেন্যুতে স্থান সংকুলনের বিষয়টি মাথায় রেখে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনিস্টিটিউশনের পাশাপাশি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের একটি অংশ ব্যবহারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছে দলটি।
জানা গেছে, বিএনপির স্থায়ী কমিটি, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পরিষদ ও কেন্দ্র্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, ৭৫টি সাংগঠনিক জেলা-মহানগর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, উপজেলা, থানা ও পৌরসভা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং ১১টি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের ‘কাউন্সিলর’ করা হয়েছে। কাউন্সিল সামনে রেখে এ বিষয়ে ইতোমধ্যে কাউন্সিলরদের কাছে নোটিশও পাঠানো হয়েছে।
যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী জানান, ষষ্ঠ জাতীয় সম্মেলন সামনে রেখে ১৬ মার্চ বুধবার থেকে কাউন্সিলরদের কার্ড দেওয়া শুরু হবে।
এদিকে স্থান সংকুলান নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে বিএনপি। কারণ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে কাউন্সিল করার অনুমতি পেলেও তা চাহিদার তুলনায় একেবারে অপর্যাপ্ত। কাউন্সিলের প্রথম অধিবেশনে কাউন্সিলরের পাশাপাশি আমন্ত্রিত অতিথিসহ সংখ্যা হবে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার। ভেতরে বাইরে মিলে সেই আসনের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। তবে দ্বিতীয় অধিবেশনের কাউন্সিলদরে নিয়ে যে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হবে সেখানে সমস্যায় পড়তে হবে। রুদ্ধদ্বার বৈঠক করার জন্য ইঞ্জিনিয়ার্স ইনিস্টিটিউশনের আসন সংখ্যা হচ্ছে ৮৩০। আর বিএনপির কাউন্সিলরের সংখ্যা প্রায় ৩ হাজার। এজন্য বইরেও কাউন্সিলর রেখে অধিবেশন পরিচালনা করতে হবে। তবে সমস্যা সমাধানে বিশেষভাবে ডেকোরেশন করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট এক নেতা জানিয়েছেন।
এবিষয়ে রুহুল কবির রিজভী জানান, কাউন্সিলর ও ডেলিগেটদের স্বাচ্ছন্দ্যে বসার জন্য বরাদ্দকৃত ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের পার্শ্ববর্তী সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের একটি অংশের জন্য আবারো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে।
অন্যদিকে কাউন্সিল সব প্রস্তুতিই সন্তোষজনক গতিতে এগুচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট নেতারা জানিয়েছেন। এরই মধ্যে কাউন্সিলের জন্য গঠিত শৃঙ্খলা ও সেবা উপ-কমিটি তাদের অধীনে অনেকগুলো সাব-কমিটি গঠন করে তাদেরকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়েছেন। আজ এই তাদের কাজের চূড়ান্ত রূপরেখা দিবেন। প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের ১৮ মার্চ সংশ্লিষ্টরা দায়িত্ব অর্পণ করবেন। এছাড়া আপ্যায়ন উপ-কমিটির অন্তর্ভুক্ত সকল সদস্যকে ২০টি উপ-ভাগে ভাগ করে তাদেরকে দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে। তারা কাউন্সিলের দিন খাদ্য, পানীয়, ভ্রাম্যমাণ টয়লেট ও আনুষঙ্গিক অন্যান্য দ্রব্যাদি সরবরাহ করবেন। চিকিৎসা ও সেবা উপ-কমিটি ইতোমধ্যে দু’টি সভা করেছেন। সেখানে ৬ টি সাব-কমিটি করে তাদেরকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। কাউন্সিলের দিন ৬টি অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত থাকবে। এছাড়া সেখানে ডাক্তার, প্যারামেডিক্স, নার্স ও স্বেচ্ছাসেবকসহ ২৬৬ জন সেবা প্রদান করবেন। এদিকে ঘোষণাপত্র ও গঠনতন্ত্র সংশোধন উপকমিটি গতকাল বৈঠক করার কথা থাকলেও সাবজেক্ট কার্যক্রম শেষ না হওয়ায় সভা স্থগিত করা হয়েছে।
এবিষয়ে সহ দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু জানান, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর নেতৃত্বে গড়া সাবজেক্ট কমিটি তাদের কার্যক্রম সম্পন্ন করতে না পারায় সভা হয়নি। সাবজেক্ট কমিটি সুপারিশপত্র চূড়ান্ত করার পরেই এই সভা হবে।
তবে সাবজেক্ট কমিটি এক নেতা জানান, সাংগঠনিক কাঠামোতে পরিবর্তন আনার সুপারিশ করা হয়েছে। যেমন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, ভাইস চেয়ারম্যান, যুগ্ম মহাসচিব ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদসহ কয়েকটি পদের সদস্য সংখ্যা বড় হতে পারে। তাছাড়া ১৭ টি সাব কমিটি গঠনের নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে, যার সদস্য সংখ্যা হবে ১০ জন। কমিটির আহ্বায়ক হবেন নির্বাহী কমিটির সম্পাদক পদমর্যাদার। সদস্য পাবেন নির্বাহী কমিটির সদস্য মর্যাদার। এসব সুপারিশ গুলো খালেদা জিয়ার কাছে পেশ করবে কমিটি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন