স্টাফ রিপোর্টার : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি একদিকে জাতীয় ঐক্যের কথা বলে, অন্যদিকে সরকারের সমালোচনা করে। সরকারের সমালোচনা করাই কি জাতীয় ঐক্য? জাতীয় ঐক্যটা কি তাদের মুখে নাকি মনে সেটা আগে জানতে চাই।
গতকাল শুক্রবার সকালে রাজধানীর মানিকমিয়া এভিনিউয়ে বিশ্ব কার মুক্ত দিবসের উদ্ভোধন শেষে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি ঘোষণা করেন, মাসের প্রথম শুক্রবারে রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউয়ের রাস্তায় কোন ব্যক্তিগত গাড়ি চলবে না।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি মনে দিক থেকেও দরিদ্র। তাদের মন মানসিকতা এত দরিদ্র যে, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে সরকারের আন্তার্জাতিক উদ্যোগের বিরুদ্ধেও তারা নেতিবাচক কথা বলছে। আমি মনে করি বিএনপি এসব বক্তৃতা বাদ দিয়ে কার্যকরী কোনও পদক্ষেপ নেবে। আশা করি বিএনপি যে নেতিবাচক পথ বেছে নিয়েছে তা থেকে তারা ফিরে আসবে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার জন্য সারা দুনিয়া শেখ হাসিনাকে প্রশংসিত করছে। সেখানে বিএনপি ঢাকায় বসে টেলিভিশনের ক্যামেরার সামনে লিফ সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছে। বাস্তবে কোনও কাজকর্মে নেই।’
সরকার রোহিঙ্গা ইস্যুতে কূটনৈতিকভাবে ব্যর্থ হয়েছে বিএনপির এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমি ওখানেই (কক্সবাজার) থাকি। তারাতো (বিএনপি) ঢাকায় বসে কথা বলে। আমি কক্সবাজার থেকে পাঁচদিন পর এসেছি। তাদের কি এ ধৈর্য আছে? এ মানসিকতা এবং চেতনা কি তাদের আছে? তারা যেটা বলছে সেটা হলো দায়সারা এবং লোক দেখানো প্রতারণা। বিএনপির মুখের কথা ও মনের কথা এক নয়। এটা প্রমাণ হয়ে গেছে।
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্যে সেতুমন্ত্রী বলেন, আপনারা উখিয়া ও টেকনাফে গিয়ে বাস্তব পরিস্থিতি দেখুন। সেখানে কিভাবে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়া হচ্ছে। আজ (শুক্রবার) থেকে সেখানে সেনাবাহিনী ত্রাণ তৎপরতা শুরু করেছে। কাজেই বিএনপির অভিযোগ হলো লিপ সার্ভিস।
তিনি বলেন, বিএনপি প্রথম প্রথম বলেছিল, তাদের ত্রাণ দিতে দিচ্ছে না। আমি সেইদিন যাওয়ার সময় একই প্লেনে আব্দুল্লাহ আল নোমান সাহেব এবং আলাল সাহেবসহ তাদের নেতারা ছিলেন। আমি তাদের বলেছি, এখানে আমি আছি। আপনাদের কে বাধা দেয়, সেটা আমাদের জানাবেন। আমার ফোন নম্বর, আমার সঙ্গে নানক (জাহাঙ্গীর কবির নানক) ছিল। তার ফোন নম্বরও নিয়ে গেছে। পরের দিন কয়েকবার তাদের আমরা জিজ্ঞাসা করেছি। কোন অসুবিধা রয়েছে কিনা? নোমান সাহেব সেখানে একটা মেডিক্যাল টিম নিয়ে ক্যাম্প করেছেন, তা আমি নিজেই দেখেছি। কেউ তাদের বাধা দেইনি।
বিশ্ব কার মুক্ত দিবস উপলক্ষে সড়কমন্ত্রী বলেন, ব্যক্তিগত কার মুক্ত দিবস আমরা কাগজে লিখলাম, সুন্দর সুন্দর বক্তব্য দিলাম, বাস্তবতা যদি না থাকে তাহলে এসব কথা বলে লাভ নেই। শুধু মুখে নয়, আমরা কার মুক্ত দিবসের যথার্থতা যেন উপলব্ধি করি এবং বাস্তবতা যেন প্রয়োগ করি।
এ সময় উপস্থিত সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রাণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শফিকুল ইসলাম ও নিরাপদ সড়ক চাই‘র চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চনকে সামনে রেখে মন্ত্রী বলেন, আমি আশা করবো অন্তত একটা দিবস, কোন একটা রাস্তা ব্যক্তিগত গাড়ি বন্ধ থাকবে; তা সচিব সাহেব বলবেন।
এ সময় সচিবকে উদ্দেশ্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বলেন তো কোন রাস্তা বন্ধ থাকবে?
সচিব রাস্তার নাম বললে মন্ত্রী বলেন, কবে দিবেন, কোন রাস্তা দিবেন? তাহলে আমরা একটা ঘোষনা এখানে দিলাম সেটা হলো-সেটা কবে দিলে ভালো হয় সচিব সাহেব?
মন্ত্রীর এমন প্রশ্নে সচিবের উত্তরে মন্ত্রী বলেন মাসের প্রথম শুক্রবার? আমরা একটা কিছু করি, তাহলে প্র্যাকটিক্যাল কিছু একটা আমরা করি। শুধু ভাষণ দিয়ে চলে গেলাম, বেলুন উড়ালাম হলো না কিছু।
তিনি বলেন, কার্যত কিছু, আমি সচিব সাহেবের সঙ্গে আলাপ করেছি, আমাদের ইলিয়াস কাঞ্চন সাহেব এখানে আছেন, সবার সঙ্গে আলোচনা করে আমরা একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে প্রতি মাসে প্রথম শুক্রবার এই রাস্তাটি ব্যক্তিগত গাড়ি মুক্ত থাকবে। অন্তত একটা কিছু আমরা করি। শুধু শুধু ভাষণ দিলাম, এই দিবসে কোন বাস্তবতা খুঁজে পাওয়া গেল না।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রাণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ঢাকা পরিবহন সমন্নয় পরিষদ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন