স্টাফ রিপোর্টার : শ্লীলতাহানির অভিযোগে যাত্রাবাড়ী থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অবনি শংকরসহ পুলিশের পাঁচ সদস্যের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাটি পুনঃতদন্তের জন্য বিচার বিভাগকে ফের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক শফিউল আজম গতকাল (মঙ্গলবার) বাদির নারাজির আবেদন গ্রহণ করে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন। অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সমমর্যাদায় একজন তা তদন্ত করবেন বলে আদেশে বিচারক উল্লেখ করেন। বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ৩১ মার্চ দিন ধার্য করেন আদালত।
এর আগে ৬ মার্চ ঘটনার সত্যতা পায়নি বলে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন ঢাকা মহানগর হাকিম এস এম মাসুদ জামান। প্রতিবেদনে বলা হয়, মামলার তদন্তে বাদি শিরিন আক্তার শিলাসহ ৬ জনের সাক্ষ্য নেয়া হয়। সাক্ষ্য প্রমাণে কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, মুগদা থানার এসআই আবদুল কাদের তার মেয়ের সামনে বাদির শ্লীলতাহানির কথা মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে যা আদৌ বিশ্বাসযোগ্য নয়।
এদিকে প্রতিবেদন দাখিলের পর বাদি নারাজি দাখিল করেন। নারাজিতে উল্লেখ করা হয়, মামলাটি সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করা হয়নি। তাই মামলাটি পুনরায় তদন্ত করা হোক। আদালত নারাজি বিষয় শুনানি ও প্রতিবেদন গ্রহণের জন্য ১৫ মার্চ দিন ধার্য করেন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, মুগদা থানার এসআই আবদুল কাদেরের মেয়ের সঙ্গে মামলার বাদির ছোট ভাই ইমরানের ২০১৫ সালের ৪ অক্টোবর বিয়ে হয়। কিন্তু মেয়ের বাবা আবদুল কাদের এ বিয়ে মেনে নিতে পারেননি। তিনি ইমরানের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতনের অভিযোগে মামলা করেন। পরে ইমরান আত্মসমর্পণ করে আদালত থেকে জামিন নেন। মামলায় আরো উল্লেখ করা হয়, জামিন নেয়ার পর ইমরানকে যাত্রাবাড়ী থানার ওসি দেখা করতে বলেন। তিনি যাত্রাবাড়ী থানায় গিয়ে এসআই জসিমের সঙ্গে দেখা করেন। এ সময় এসআই জসিম তার কাছে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। ইমরান চাঁদা দিতে অস্বীকার করে চলে আসেন। ২০১৫ সালের ৩ ডিসেম্বর ইমরানকে ১ নম্বর আসামির বাসায় ডেকে এনে ব্যাপক নির্যাতন করা হয়। এরপর মামলার বাদিকে ফোন করে ওই বাসায় আসতে বলা হয়। বাদি বোনকে নিয়ে বাসায় এলে ১ থেকে ৩ নম্বর আসামিরা তার হাত ধরে টানাটানি করে এবং শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। বিষয়টি জানাজানি হলে তাদের গাড়িতে করে যাত্রাবাড়ী থানায় নিয়ে আসা হয়। ওসিও এ সময় বাদির হাত ধরে টানাটানি এবং অশোভন আচরণ করেন। এ ঘটনায় ২০১৬ সালের ২০ জানুয়ারি শিরিন আক্তার শিলা বাদি হয়ে মুগদা থানার এসআই আবদুল কাদের (১ নম্বর আসামি), যাত্রাবাড়ী থানার এসআই জসিম, জামাল ও কনস্টেবল দেবাশীষের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। ২০১৬ সালের ২১ জানুয়ারি আদালত মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন