শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ইসলামী জীবন

আপনার জিজ্ঞাসার জবাব

| প্রকাশের সময় : ৫ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

প্রশ্ন : আল্লাহ কি সবরকারীদের সাহায্য করেন ?

উত্তর : সবর বা ধৈর্য্য একটি মহাশক্তি। ধৈর্য্য হলো শব্দহীন নিরব প্রতিবাদ। যে কোনো বিপদ কিংবা সংকটের সময়ে ধৈর্য্য ধারন করাই হলো মুমিনদের বৈশিষ্ট্য। সমাজ পরিবার ও রাষ্ট্রীয় জীবনে সবরের গুরুত্ব অপরিসীম। সবরকারী ব্যক্তিই যে কোনো পরিস্থিতি সাহসীকতার সাথে সুন্দরভাবে মোকাবিলা করতে পারেন। সবরকারীদের আল্লাহ সাহায্য করেন। সবরকারীদের আল্লাহ পছন্দ করেন। যে কোনো কঠিন পরিস্থিতিতে ধৈর্য্য ও নামাযের মাধ্যমে আল্লাহর নিকট সাহায্য প্রার্থণা করলেই শুধুমাত্র কামিয়াবী অর্জন করা সম্ভব। কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ, ধৈর্য্য ও সালাতের মাধ্যমে সাহায্য চাও। নিশ্চয়ই আল্লাহ সবরকারীদের সাথে আছেন।’ (সূরা বাকারা: ১৫৩)।
প্রাকৃতিক ও সামাজিক দুর্যোগের মতো বিপদ আপদের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা মুমিনের নির্ভরতা তথা তাওয়াক্কুলের পরীক্ষা নেন। পরীক্ষাই হলো কর্মফল পরিমাপের মাপকাঠি। তাই বন্যা, সাইক্লোন, ঘূর্নিঝড়, অভাব অনটন দিয়ে আল্লাহ বান্দার পরীক্ষা নিয়ে থাকেন। এসব বিপদের সময় সবর করলে ঈমান মজবুত হয়। আল্লাহর পক্ষ হতে গায়েবী সাহায্য আসে। কোরআনে ইরশাদ হয়েছে,‘ আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুধা এবং জান-মাল ও ফল-ফলাদির স্বল্পতার মাধ্যমে। আর তুমি ধৈর্য্যশীলদের সুসংবাদ দাও। যারা, তাদেরকে যখন বিপদ আক্রান্ত করে তখন বলে, নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহর জন্য এবং আমরা তাঁর দিকে প্রত্যাবর্তনকারী।’ (সূরা বাকারা:১৫৫-১৫৬)।
সুখ দু:খ মিলে জগত সংসার। শুধু সুখ কিংবা শুধু দু:খ পরস্পর একাকী হলো অর্থহীন নিরর্থক। ইহাতে কোনো আনন্দ লাভের সুযোগ নেই। সুখ দু:খ একে অপরের পরিপূরক। সুখ দু:খ উভয়ের মধ্যে একটি পৃথক পৃথক স্বাদ রয়েছে। অন্ধকার ছাড়া আলোর কোনো মূল্য নেই। তাই অন্ধকার আছে বলেই আলোর এতো দাম। কোরআনে ইরশাদ হয়েছে,‘ সুতরাং কষ্টের সাথেই রয়েছে সুখ। নিশ্চয়ই কষ্টের সাথেই রয়েছে সুখ। অতত্রব যখনই তুমি অবসর পাবে, তখনই কঠোর ইবাদতে রত হও। আর তোমরা প্রভ‚র প্রতি আকৃষ্ট হও।’ (সূরা ইনশিরাহ:৫-৮)।
হযরত আবু হোরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, হযরত রাসূল (সা) ইরশাদ করেছেন, মুসলমানদের উপর যে সকল যাতনা, রোগ-ব্যাধি, উদ্বেগ-উৎকন্ঠা, দু:শ্চিন্তা, কষ্ট ও পেরেশানী আপতিত হয়, এমনকি যে কাঁটা তার দেহে বিদ্ধ হয়, এসবের দ্বারা আল্লাহ তার গোনাহসমূহ ক্ষমা করে দেন। (সহীহ বুখারী হাদিস নং-৫২৩৯)। হযরত আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত, হযরত রাসূল (সা) ইরশাদ করেছেন, মুসলমানের উপর কোনো মুসীবত আপতিত হলে তার বিনিময়ে তার গোনাহের কাফফারা হয়ে যায়; এমনকি ক্ষুদ্র কোনো কাঁটা বিধলেও। (সহীহ মুসলিম হাদিস নং ৬৩৩১)।
সুতরাং আমাদের পরিবার সমাজ রাষ্ট্রীয় জীবনে সময় সময়ে নানা ধরনের বিপদ আপদ আসে। ইচ্ছায় কিংবা অনিচ্ছায় হউক বিপদ আপদকে মেনে নিতে হয়। বিপদের সময় ভেঙ্গে পড়তে নেই। এছাড়া আল্লাহর রহমত হতে কখনও নিরাশ হতে নেই। অন্তুরে মনোবল নিয়ে দৃঢ়তার সাথে বিপদের সময় কিংবা সংকটকালীন সময়ে আল্লাহর নিকট আরো বেশি বেশি পরিমান সাহায্য চাইতে হয়। তাই আমরা যদি বিপদের সময় হা-হুতাশ না করে সবর করি তাহলে অবশ্যই সুফল মিলবে। মুমিনের জন্য সবর করা নিঃসন্দেহে একটি বিরত্বপূর্ণ কাজ।
উত্তর দিচ্ছেন : ফিরোজ আহমাদ

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন