শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

বিএনপির কাঠামো নির্ধারণে আজ সর্বোচ্চ ফোরামের শেষ বৈঠক

প্রকাশের সময় : ১৭ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:৩৪ পিএম, ১৬ মার্চ, ২০১৬

আফজাল বারী : দলীয় কাউন্সিলের মাধ্যমে নবরূপ পাচ্ছে বিএনপি। তার আগে সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরামে এ বিষয়ে আলোচনা করবেন শীর্ষ নেতা বেগম খালেদা জিয়া। এ জন্য তিনি আজ বৈঠক ডেকেছেন।
দলীয় সূত্র জানিয়েছে, এটা বিএনপির বর্তমান কমিটির সর্বশেষ বৈঠক। এই বৈঠকেই দলের ঘোষণাপত্র (গঠনতন্ত্র) সংশোধনের প্রস্তাবে প্রাথমিক অনুমোদন, দলীয় প্রধানের বক্তব্য, মহাসচিবের বক্তব্য নির্ধারণ করা হবে।
একই সাথে পঞ্চম কাউন্সিলের পর গঠিত কমিটির সাফল্য, নেতৃত্বের ত্রুটি-বিচ্যুতির চুলচেরা বিশ্লেষণ করা হবে। আলোচনার মাধ্যমেই ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব গঠন এবং চেয়ারপার্সনের বক্তব্যের মাধ্যমে দেশবাসীর প্রতি কী বার্তা দেয়া হবে তা নির্ধারণ বলে জানিয়েছেন দলের নীতিনির্ধারকদের একজন।
অভ্যর্থনা উপকমিটি সূত্র জানায়, বিএনপির কাউন্সিলে উপস্থিত থাকার জন্য আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামসহ দেশের সকল রাজনৈতিক দল এবং শ্রেণী-পেশাজীবী নেতৃবৃন্দকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে বিএনপি
এদিকে দলের দুঃসময়ে প্রবাসীদের অবদান এবং সংগঠনের কথা বিবেচনায় নিতে নীতিনির্ধারকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে প্রবাসীরা। শুধু দলের কমিটিতে নয় সরকারে এবং সংবিধানেও প্রবাসীদের বেলায় নমনীয় হবার দাবি-দাওয়া তুলে ধরেছেন চেয়ারপার্সনের কাছে। তারা কাউন্সিলের মাধ্যমে সমস্যার স্থায়ী সমাধান চায়। এ তথ্য জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি গিয়াস উদ্দিন আহমেদ।
বিএনপি সূত্রমতে, ষষ্ঠ কাউন্সিল প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। সফল ও সুষ্ঠু কাউন্সিলের জন্য তিনি ১১টি উপ-কমিটি করে দিয়েছেন। এসব কমিটির মধ্যে রয়েছে- অভ্যর্থনা, ঘোষণাপত্র, শৃঙ্খলা, ড্রাফটিং, ব্যবস্থাপনা ও প্রচার, আন্তর্জাতিক, প্রকাশনা, চিকিৎসা, তথ্য ও যোগাযোগ, সাংস্কৃতিক ও অর্থ। ১১জনকে আহ্বায়কের দায়িত্বও দেয়া হয়। কাউন্সিলের ১১ উপ-কমিটির সব কমিটির কাজ চূড়ান্ত।
গতকালও কমিটিগুলো পৃথক আলোচনা করেছেন। নিজ নিজ অবস্থান থেকে শেষ সময়ের প্রস্তুতি চূড়ান্ত করেছে উপ-কমিটিগুলো। এর আগে দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া উপ-কমিটির আহ্বায়কদের সাথে পৃথকভাবে আলোচনা করেছেন। তাদের কাজের অগ্রগতি বিষয়ে জেনে নিয়েছেন। আজ ডেকেছেন স্থায়ী কমিটির বৈঠক।
এ বৈঠক প্রসঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, কাউন্সিলকে সামনে রেখে দলীয় প্রধান এই বৈঠক ডেকেছেন। তাতে দেশ, দল এবং দলীয় কাউন্সিল সংক্রান্ত সকল বিষয় নিয়েই কথা হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড্রাফটিং কমিটির আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম খান ইনকিলাবকে জানান, এই বৈঠকে বিএনপি চেয়ারপার্সনের বক্তব্য, মহাসচিবের বক্তব্য, গঠনতন্ত্র সংশোধনসহ গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো নেয়া হবে। কারণ এটি দলের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম।
স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান জানান, এই বৈঠকেই দলের মহাসচিবের ভারমুক্তির বিষয়টি ফায়সালা হবে। এছাড়া কাউন্সিল এবং বিএনপি জনগণের জন্য আগামীর দিনগুলোতে কী করতে চায় তা থাকবে চেয়ারপার্সনের বক্তব্যে। নেতৃত্বে কাদের বেশি গুরুত্ব দেয়া হবে সে ধরনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তও হতে পারে বলে আভাস দেন এই নেতা।
কোটা চায় প্রবাসীরা :
দলের দুঃসময়ে প্রবাসীদের অবদান এবং সংগঠনের কথা বিবেচনায় নিতে নীতিনির্ধারকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে প্রবাসীরা। শুধু দলের কমিটিতে নয় সরকারে এবং সংবিধানেও প্রবাসীদের বেলায় নমনীয় হবার দাবি-দাওয়া তুলে ধরেছেন চেয়ারপার্সনের কাছে। তারা কাউন্সিলের মাধ্যমে সমস্যার স্থায়ী সমাধান চায়। এ তথ্য জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি গিয়াস উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, প্রবাসীদের নির্বাহী কমিটিতে রাখলে স্থানীয় রাজনীতিতে অন্তর্কলহ বা নেতৃত্বের প্রতিযোগিতায় অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটবে না।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রসহ প্রবাসের বিভিন্ন দেশে বিএনপির কমিটি হয়না দীর্ঘদিন ধরে। সবাই সভাপতি/সম্পাদকের মতো বড় বড় পদ দাবি করে। তাতে দলীয় দ্বন্দ্ব বাড়েই। এ সমস্যা সমাধানের জন্য তিনি বিএনপির বিভিন্ন কমিটিতে প্রবাসীদের স্থান দেয়ার দাবিও জানান। এতে করে নেতৃত্ব এবং দেশপ্রেম দুটো মিলবে প্রবাসীদের কাছ থেকে।
এই প্রবাসী ক্ষোভের সাথে বলেন, সংবিধানে প্রবাসী নাগরিকদের বেলায় বিধিনিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। উচ্চ শিক্ষা নিয়ে দেশে গেলেও তারা সংসদ নির্বাচন করতে পারবে না। এটা শুধু বাংলাদেশের জন্যই প্রযোজ্য হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নাগরিকরা বহির্বিশ্বের উচ্চশিক্ষা নিয়ে দেশে ফিরে যায় কিন্তু বাংলাদেশের নাগরিকরা দেশবিমুখ হয়। কারণ দেশে তাদের দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক হিসেবে মাথা নীচু করে থাকতে হয়। তার দাবি বিএনপি এবারের কাউন্সিলের মাধ্যমে প্রবাসীদের দেশমুখি করার ঘোষণা দেবে। অন্যান্য পেশার কোটা থাকলে প্রবাসীদের কোথা কেন থাকবে না সে প্রশ্ন তুলেছেন গিয়াস আহম্মেদ।
রাজনৈতিক দলসহ শ্রেণী-পেশাজীবী নেতৃবৃন্দকে আমন্ত্রণ : বিএনপির জাতীয় কাউন্সিলে আমন্ত্রণ জানিয়েছে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং দলটির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে পত্র পাঠানো হয়েছে। বিএনপির সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আবুল খায়ের ভূইয়ার নেতৃত্বে এ প্রতিনিধি দল আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে গিয়ে আমন্ত্রণপত্র পৌঁছে দেন।
এছাড়াও জাতীয় পার্টি, সিপিবি, বিজিএমইএ, বিকেএমইএসহ দেশে নিযুক্ত বিদেশী রাষ্ট্রদূতদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এদিকে গত কয়েকদিন আগে থেকেই দলীয় কাউন্সিলরদের মধ্যে কাউন্সিলর কার্ড বিতরণ করা হচ্ছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
আবু নোমান ১৭ মার্চ, ২০১৬, ১২:৫৪ পিএম says : 0
এই বৈঠকেই দলের মহাসচিবের ভারমুক্তির বিষয়টি ফায়সালা করা উচিত।
Total Reply(0)
সুজন ১৭ মার্চ, ২০১৬, ১২:৫৭ পিএম says : 0
প্রবাসীদের নির্বাহী কমিটিতে রাখলে খারাপ হবে না।
Total Reply(0)
আরমান ১৭ মার্চ, ২০১৬, ১২:৫৯ পিএম says : 0
সুবিধাবাদি ও সুযোগ সন্ধানীদের কমিটিতে ভালো পদ দেয়া ঠিক হবে না।
Total Reply(0)
Sabbir ১৭ মার্চ, ২০১৬, ১:০১ পিএম says : 0
Many things depend on the meeting
Total Reply(0)
লোকমান ১৭ মার্চ, ২০১৬, ১:০২ পিএম says : 0
আশা করি এবারের কাউন্সিলটা খুব ভালো হবে।
Total Reply(0)
সুমন ১৭ মার্চ, ২০১৬, ১:০৩ পিএম says : 0
দেখা যাক এই মিটিংয়ে কি সিদ্ধান্ত হয়................
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন