বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

আমেরিকা এখন রাজনৈতিক সুনামির মুখে মার্কো রুবিও

প্রকাশের সময় : ১৭ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : মার্কো রুবিও সরে দাঁড়ানোর পর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থিতার জন্য এখন রিপাবলিকান দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীর সংখ্যা দাঁড়ালো তিন। এরা হলেন- ডোনাল্ড ট্রাম্প, জন কিসাক এবং টেড ক্রুজ।
নিজ সিদ্ধান্ত জানিয়ে রুবিও তার সমর্থকদের উদ্দেশে বক্তৃতায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রচারণা কৌশলের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, বিভেদ-বিভাজনের রাজনীতি যুক্তরাষ্ট্রকে একটি ভঙ্গুর দেশের দিকে ঠেলে দেবে। তিনি বলেন, ট্রাম্পের কৌশলের অবগুন্ঠন ক্রমেই অপসারিত হচ্ছে যা আমেরিকার ভবিষ্যতের জন্য বিপজ্জনক। মার্কো রুবিও বলেন, আমেরিকা এখন এক সত্যিকারের রাজনৈতিক ঝড়ের সম্মুখীন, এক ভয়াবহ সুনামির মুখে দাঁড়িয়ে আছে এবং আমরা দেখতে পাচ্ছি যে ভয়াবহ রাজনৈতিক ঝড় ধেয়ে আসছে। তিনি বলেন, এই অবস্থায় যখন আমাদের সঠিক পথে থাকার কথা সেখানে এবার আমরা বিজয়ী পক্ষে দাঁড়াতে পারবো না।
রুবিও তার প্রচারণায় শেষ কয়েক সপ্তাহ ব্যস্ততার মধ্যে অতিবাহিত করেন। প্রায়ই ট্রাম্পের সঙ্গে তাকে তিক্ত লড়াইতে অবতীর্ণ হতে হয়েছে। এখন সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করার পর ট্রাম্প তাকে অভিনন্দন জানিয়ে বলছেন, ফ্লোরিডার সিনেটর এক জোরালো প্রচারাভিযান চালিয়েছেন। ট্রাম্প আরো বলেন, তিনি খুবই টাফ এবং স্মার্ট। বড় ধরনের ভবিষ্যৎ তার জন্য অপেক্ষা করছে।
টেড ক্রুজও রুবিও’র প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন, রুবিও আমেরিকার সম্ভাবনার একটি সুন্দর ছবি আঁকতে পারতেন অনেকের পক্ষ্যে যা সম্ভব নয়। ক্রুজ রুবিও’র একনিষ্ঠ সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, আমরা আনন্দের সঙ্গে আপনাদের দিকে আমাদের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছি।
রুবিও মিয়ামিতে তার সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, আমরা এক প্রজাতন্ত্রে বাস করি এবং ভোটাররা আমাকে এই সিদ্ধান্ত নিতে উদ্বুদ্ধ করেছে।
প্রথমবারের মতো সিনেটর ৪৪ বছর বয়সী রুবিও নিজেকে এমন ব্যক্তি হিসেবে দাঁড় করিয়েছিলেন যে কেবল তিনিই ট্রাম্পকে থামাতে পারেন। প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কগুলোতে তিনি ট্রাম্পকে তীব্রভাবে আক্রমণ করেছেন। তার নির্বাচনের শ্লোগান ছিল ‘এক নতুন আমেরিকান শতাব্দী’। তিনি এই বার্তা দিতে চেষ্টা করেছিলেন যে, আমেরিকার এক নতুন প্রজন্মের নেতৃত্বের দরকার যে নেতৃত্ব সামনের দিনগুলোর চ্যালেঞ্জ ভালোভাবে মোকাবেলা করতে পারবে। তিনি নিজেও তারুণ্যের প্রতীক এবং মার্কিন সিনেটে কিছু সময়ের অভিজ্ঞতাকে একটি সুযোগ হিসেবে দেখছেন।
নির্বাচনী প্রচারণায় তার জীবন কাহিনী মানুষকে ব্যাপকভাবে আকৃষ্ট করে। কিউবান অভিবাসীর সন্তান রুবিও যখন শিশু ছিলেন তখন তার পিতামাতা তাদের সন্তানদের লালন-পালনের জন্য বারটেনডিং ও হোটেল ক্লিনারের মতো বিভিন্ন ছোটখাটো কাজ করতেও বাধ্য হয়েছেন।
তিনি ঘরে ঘরে এই বার্তা পৌঁছে দিতে চেয়েছেন যে, আমেরিকানদের উচিত শিশুদের জন্য সকল সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের এই স্বপ্ন ক্রমে ধূসর হয়ে যাচ্ছে। কোন প্রাইমারিতে জয়লাভ না করলেও রুবিও’র উপদেষ্টা ও চাঁদাপ্রদানকারীরা দলের হাইকমান্ডের সমর্থন আদায়ের উপর জোর দিয়েছিলেন। বিশেষ করে জেব বুশ প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর পর এবং নিজ রাজ্য ফ্লোরিডার মতো বড় রাজ্যে জয়লাভ করলে দলের হাইকমান্ড তার প্রতি মনযোগ দেবে সবার এমনই প্রত্যাশা ছিল।
রুবিও ডোনাল্ড ট্রাম্পকে প্রথমসারির প্রার্থী হিসেবে গণনাই করেননি। তিনি ক্রুজ ও বুশের মতো প্রার্থীদের তার প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবতেন। তবে ট্রাম্পের অব্যাহত জয়ের প্রেক্ষিতে তিনি হঠাৎ করেই ফেব্রুয়ারির শেষদিকে হিউসটনে প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কে তার কৌশল পরিবর্তন করে ট্রাম্পের বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠেন এবং ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে একের পর এক তীর নিক্ষেপ করতে থাকেন। ট্রাম্পও জঘন্য ভাষায় তাকে পাল্টা আঘাত করা শুরু করেন এবং এমনকি তার পুরুষাঙ্গের দৈর্ঘ্য নিয়ে চরম অশ্লীল কথাবার্তা বলেন।
জেব বুশ সরে দাঁড়ানোর পর রিপাবলিকান দলের পদস্থ কর্মকর্তারা রুবিওকে নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেছিলেন। কানসাস, আরকানসাস, টেনেসি ও নিউ মেক্সিকোর মতো রাজ্যের গভর্নরা রুবিওকে সমর্থন দেন। তবে রুবিও সবকটি রাজ্যের প্রাইমারিতেই পরাজিত হন এবং নিউ মেক্সিকোর নির্বাচন এখনো বাকি। সূত্র : সিএনএন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন