স্টাফ রিপোর্টার : মাদক ব্যবসাকে কেন্দ্র করে দু’গ্রুপের সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্প। গত বুধবার রাতে শুরু হওয়া দফায় দফায় এ সংষর্ষে শিশু, নারী ও পুলিশসহ অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছেন। পুলিশ লাঠিচার্জ ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশের হস্তক্ষেপে সংঘর্ষ থামলেও সেখানে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, বর্তমানে দু’টি গ্রুপ জেনেভা ক্যাম্পের মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছে। একটি গ্রুপের নেতৃত্বে রয়েছে পঁচিশ অপর গ্রুপের আলমগীর। গত বুধবার রাতে আলমগীরের নিজ এলাকা জি ব্লকের নিয়ন্ত্রণ নিতে যায় পঁচিশ গ্রুপ। আলমগীর গ্রুপ বাধা দিতে গেলে সংষর্ষ শুরু হয়। এক পক্ষ অপর পক্ষের দিকে ইটপাটকেল ছুঁড়তে থাকে। এছাড়া যার যার গ্রুপের লোকজন চাপাতি দিয়ে প্রতিপক্ষের বাসা বাড়িতে হামলা চালায়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়। দু’পক্ষের সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে পুলিশের ৩ সদস্যও আহত হয়। আতঙ্কে সেখানের অনেক নারী ও শিশু বাইরে রাত কাটায়। বৃষ্টির মতো ইটপাটকেলে ক্যাম্প থেকে বের হতে না পেরে ক্যাম্পের ঘুপড়ি ঘরেই আটকা পড়েন অনেকে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত এ সংষর্ষ চলে। দু’পক্ষের সংঘর্ষকালে অসহায় পড়েন সেখানের সাধারণ বাসিন্দারা। বেলা ২টার দিকে তেজগাঁও জোনের এডিসি ওয়াহিদুর জামানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম অভিযান চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। অভিযানকালে বেশ কিছু ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা উদ্ধার করা হয়েছে। এরপর গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত নতুন করে সংঘর্ষ না হলেও থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছিলো। দু’পক্ষের সংঘর্ষে ইটের টুকরোর স্তূপ জমে যায় আশপাশের রাস্তায়ও। বুধবার রাত থেকে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ক্যাম্পের সকল দোকানপাট বন্ধ ছিলো।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সেখানের সাধারণ বাসিন্দারা মাদক সন্ত্রাসীদের কাছে জিম্মি। পঁচিশ-চুয়া সেলিম, মোল্লা আরশাদ, মটকি সীমা ও আরিফের নেতৃত্বে চলছে পঁচিশ গ্রুপ। অপরদিকে আলমগীর, বেদি নাদিম, রহমত ও মোল্লা আনোয়ারের গ্রুপের নেতৃত্বে রয়েছে আলমগীর গ্রুপ। মাদক বিক্রির স্পটের দখল নিয়ে এরা প্রায়ই সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। কিছু দিন আগে পঁচিশ গ্রুপ রানা নামে এক যুবককে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে বলে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়। মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জানে আলম মুন্সী বলেন, হাতাহাতি থেকে সংঘর্ষ ব্যাপক রূপ নেয়। জেনেভা ক্যাম্প এলাকায় বিহারিরা ইট-পাটকেল ছুঁড়ে পরস্পরের ওপর হামলা চালায়। এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন