রাজধানীর দারুসসালাম থানার বিস্ফোরক আইনে দায়ের করা মামলায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পাইলট সাব্বিরসহ চার আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল বুধবার তাদের ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতে হাজির করে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য দশ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম আহসান হাবীব পাইলট সাব্বিরকে ৭ দিন, তার মা মোসা. সুলতানা পারভীনকে ৫ দিন, অন্য দুই আসামি আসিফুর রহমান আসিফ ও মো. আলমের ৬ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। অন্যদিকে নাশকতার পরিকল্পনা’র অভিযোগে গ্রেফতারকৃত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফার্স্ট অফিসার সাব্বির এমামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। গতকাল বুধবার তাঁর ব্যাপারে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিমানের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) শাকিল মেরাজ। গত সোমবার রাতে রাজধানীর মিরপুরের দারুসসালাম এলাকা থেকে র্যাব তাদের গ্রেফতার করে। তাদের আটকের পর মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান বলেন, সাব্বির বিমানের ফার্স্ট অফিসার হলেও তিনি সেপ্টেম্বর মাসে দারুস সালাম এলাকায় র্যাবের অভিযানের সময় নিহত জঙ্গি আবদল্লাহর সহযোগী। র্যাবের দাবি, বিমান চালিয়ে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের ব্যক্তিদের বাসভবনে আঘাত করার পরিকল্পনা ছিল তাঁর। গ্রেফতারকৃত অন্য তিনজন হলেন আবদুল্লাহ যে বাসায় ভাড়া থাকতেন, সেই বাড়ির মালিক সাব্বিরের বাবা হাবিবুল্লাহ বাহার আজাদের স্ত্রী ও সাব্বিরের মা সুলতানা পারভিন, পারভিনের আত্মীয় আসিফুর রহমান ও আলম। র্যাবের পরিচালক (গণমাধ্যম) কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান গত ৩১ অক্টোর সংবাদ সম্মেলনে জানান, সাব্বির ২০০৯ সালে বাংলাদেশ ফ্লাইং একাডেমী থেকে উড়োজাহাজ চালানোর প্রশিক্ষণ নেন। ২০১০ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত রিজেন্ট এয়ারওয়েজে চাকরি করেন। ওই বছরই তিনি বিমানের পাইলটের চাকরি নেন। বিমানের ফার্স্ট অফিসার হিসেবে সাব্বির বোয়িং ৭৩৭ উড়োজাহাজ চালাতেন। গত ৩০ অক্টোবর তিনি ঢাকা-কলকাতা-ঢাকা রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করেন। তবে জঙ্গি আবদল্লাহর সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা ছিল। নিহত জঙ্গি সারোয়ার জাহানের কাছ থেকে সাব্বির বায়াত গ্রহণ করেন। গুলশানে হোলি আর্টিজানে হামলার আগে ও পরে নাশকতার পরিকল্পনা ছিল তাঁর। এরই অংশ হিসেবে সাব্বির বিমান চালিয়ে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের ব্যক্তিদের বাসভবনে আঘাতের পরিকল্পনা করেন বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন। এ ছাড়া বিমানের যাত্রীদের জিম্মি করে মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনাও তাঁর ছিল। জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পেয়ে ৪ সেপ্টেম্বর রাতে মিরপুর মাজার রোডের বর্ধনবাড়ি এলাকায় কমল প্রভা নামের একটি বাড়িতে অভিযান চালায় র্যাব। অভিযান চলার সময় ওই বাড়ির পঞ্চম তলায় জঙ্গি আস্তানায় ভয়াবহ রাসায়নিক বিস্ফোরণ হয়। অভিযানে জঙ্গি আবদুল্লাহ ও তার পরিবার আত্মসমর্পণের জন্য সময় নেয়। কিন্তু পরে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আবদুল্লাহ, তাঁর দুই স্ত্রী, দুই সন্তান ও দুই সহযোগী আত্মাহুতি দেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন