হত্যা, গণধর্ষণ, ও ডাকাতিসহ ১০ মাসে প্রায় তিন হাজার মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে লক্ষীপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে। মামলার রায়ে ২১ আসামীর মৃত্যুদন্ড,৩৪ জনের যাবজ্জীবন ও বেশ কিছু আসামীকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছেন আদালত। এসব বিচারাধীন মামলার রায় দ্রুত বাস্তবায়ন হওয়ায় বিচার বিভাগের প্রতি সাধারন মানুষের আস্থা বেড়েছে। এতে করে খুশি মামলার বাদী ও আইনজীবিরা।
জেলা ও দায়রা জজ আদালত সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে লক্ষীপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারধীন মামলার জট ছিল। এসব বিচারাধীন মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি না হওয়ায় বিচার প্রার্থীরা সঠিক সময়ে বিচার না পাওয়ায় নানান বিড়ম্বনার মধ্যে পড়তে হয়েছে সাধারন মানুষকে। ২০১৬ সালের জুলাই মাসে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক হিসেবে যোগদান করেন ড. আবুল কাশেম। এরপর থেকে আদালতের বিচারকদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় মামলার জট খুলতে শুরু হয়। গত ১০ মাসে প্রায় তিন হাজার মামলার নিষ্পত্তি হয় এ আদালতে। এর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হলো চলতি বছরের ১১ এপ্রিল ও ২৯ মার্চ সদর উপজেলায় দুই গৃহবধুকে গনধর্ষনের মামলায় ৮জনের মৃত্যুদন্ডের রায় প্রদান করেন আদালত। গত ৩০ আগস্ট একই উপজেলার তিতারকান্দি এলাকায় আলোচিত যুবদল নেতা বাবর হোসেন হত্যা মামলায় ১১ জনের মৃত্যুদন্ড। ২৮ সেপ্টেম্বর রামগতিতে কৃষক হত্যা মামলায় ১৬জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ডের রায় দেন আদালত। এছাড়া একই আদালত ওই বছরের ১৬ নভেম্বর শিশু হত্যা মামলায় নারীসহ ৩জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ডের রায় প্রদান করেন। বর্তমানে এ আদালতে আরো প্রায় ৫ হাজার মামলা বিচারাধীন রয়েছে। বিচার প্রার্থী ওমর ফারুক রিপন জানান, যেসব বিচারাধীন মামলা রয়েছে সেগুলোর রায় দ্রুত বাস্তবায়ন করেন বিচারকরা তাতে মামলার বাদী ও বিবাদী উভয় পক্ষের মঙ্গল হবে।
অ্যাডভোকেট হাসিবুর রহমান জানান, বিচারবিভাগ হলো মানুষের সর্বশেষ ঠিকানা। সকল প্রকার দমন-পীড়ন ও নির্যাতন শেষে মানুষ আদালতে আশ্রয় নেয়। নানান ধরনের ভয়ভীতি ও প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে সাধারন মানুষ প্রত্যাশা করে বিচার বিভাগ বর্তমানে যে গতিতে এগিয়ে যাচ্ছেন ভবিষ্যতে আরো সাহসী প্রদক্ষেপ নিবেন এবং সাধারন মানুষের ন্যায় বিচার নিশ্চিত করবেন ।
লক্ষীপুর জেলা আইনজীবি সমিতির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নুরুল হুদা পাটওয়ারী জানান, বিচারাধীন মামলার রায় দ্রুত বাস্তবায়ন হওয়ায় বিচার বিভাগের প্রতি সাধারন মানুষের আস্থা বেড়েছে। এতে করে খুশি মামলার বাদী ও আইনজীবিরা।
লক্ষীপুর জজকোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর মো. জসিম উদ্দিন জানান, গত ১০ মাসে প্রায় তিন হাজার মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে। এসব মামলায় ২১জনের ফাঁসি, ৩৪ জনের যাবজ্জীবন ও বেশ কিছু আসামীকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছেন আদালত। আরো ৫ হাজার মামলা বিচারাধীন রয়েছে বলেও দাবি করে দ্রুত এসব মামলা নিষ্পত্তি হবে বলে জানান তিনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন