বিএনপি আন্দোলনের সক্ষমতা ও সাহস হারিয়ে ফেলেছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির আন্দোলনের ডাক আষাঢ়ের তর্জন গর্জনেই সার সেটা গত সাড়ে ৮ বছরে প্রমাণিত হয়ে গেছে। তারা এখন বলছে পেট্রোল বোমার বদলে লোহার হাতুড়ি দিয়ে আন্দোলন করবে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের বন্দরর উপজেলায় জাতীয় পার্টির এমপি সেলিম ওসমানের অর্থায়নে নির্মিত ৩টি স্কুল উদ্বোধন শেষে গণমাধ্যমের সঙ্গে প্রতিক্রিয়ায় তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কয়েকদিন ধরেই বলে আসছেন, জিম্বাবুয়ের মতই এ সরকারের পরিণতি হবে আন্দোলনের মাধ্যমে। ওই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে প্রতিক্রিয়ায় ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি এখন অন্ধকারে ঢিল ছুঁড়ছে। বিএনপি এখন অস্ত্রের ভাষায় কথা বলছে। অস্ত্রের ভাষায় যারা কথা বলে তাদের পরিণতিই হবে অত্যন্ত করুণ ও ভয়াবহ। যারা অস্ত্রের ভাষায় কথা বলে তারা ক্ষমতায় এলে কী হবে তা বাংলাদেশের মানুষ ভালো জানে। বিএনপি কী পেট্রোল বোমা মেরে শত শত মানুষ পুড়িয়ে মেরে ফেলার কথা ভুলে গেছে। জ্বালাও পোড়াও আন্দোলনে জনগণ থেকে বিএনপি বিচ্ছিন্ন হয়েছে। আমার তো মনে হয় আবারও তারা সেই বিভীষিকাময় কর্মকান্ডে প্রত্যাবর্তন করে আরো জনবিচ্ছিন্ন হবে। এ ঝুঁকি নিবে কী না এটা বিএনপি সিদ্ধান্ত নিবে।
বন্দরের ত্রিবোনী মিনারবাড়ি এলাকায় শামসুজ্জোহা মুছাপুর বন্দর (এম.বি) ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তিন স্কুলের উদ্বোধনী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবও বক্তব্য রাখেন। পরে তিনি সামসুজ্জোহা এমবি ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়, শেখ জামাল উচ্চ বিদ্যালয় ও নাগিনা জোহা উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শন করে উদ্বোধন করেন।
আলোচনা সভায় বক্তারা শীতলক্ষ্যা নদীর উপরে নবীগঞ্জ-হাজীগঞ্জ পয়েন্ট দিয়ে সেতু ও সেতু না হওয়া পর্যন্ত ফেরি সার্ভিস চালুর দাবী জানানো হয়। এছাড়া মন্ত্রীর আগমন উপলক্ষ্যে সড়কের দুই পাশে শত শত মানুষও উপস্থিত হয়ে ওইসব দাবী সম্বলিত ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে জড়ো হন। মানুষের উপস্থিতির কারণে এক পর্যায়ে থমকে যায় মন্ত্রীর গাড়ি বহর।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমি খেয়ার স্থানে ফেরি চালু করে দিচ্ছি। মন্ত্রী হিসেবে বলে দিলাম আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ফেরি চালু হবে। আগামী ৮ মাসের মধ্যে সেতুর কাজের দৃশ্যমান হবে না, তবে কাজ শুরু হবে।
শিক্ষা ব্যবস্থা প্রসঙ্গে বলেন, পরীক্ষায় পাশ করার শিক্ষা নয়, আমরা সত্যিকারের শিক্ষার্থী চাই। প্রশ্নপত্র ফাঁস করে যারা আজকে শিক্ষার ১২ টা বাজায় তারাদেশের শত্রু জাতির শত্রু, তারা দল মত নির্বিশেষে সকলের শত্রু। তাদের মেরুদন্ড ভেঙ্গে দিতে হবে। যারা আমাদের মেধাবীদের ভবিষ্যৎ নষ্ট করে দিচ্ছেন তাদের ধংস করে দিতে হবে। সত্যকে চাপা দিয়ে লাভ নেই। শেখ হাসিনার আমলে শিক্ষা ক্ষেত্রের যে উন্নতি তা যেন এই প্রশ্নফাঁস ম্লান করে দিতে না পারে সেজন্য এই প্রশ্ন ফাঁসে যারা জড়ির তাদেরকে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এতে যদি রাজনৈতিক পরিচয়ের কেউ জড়িত থাকে তবে তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে কারণ এরা আমাদের ভবিষ্যৎকে নষ্ট করছে। দেশের বিরুদ্ধে আজকে যদি কোন ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকান্ড চলে মাদকের মত জঙ্গীবাদও আমাদের অভিন্ন শত্রু। আমি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানাচ্ছি।
বন্দর থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি এম এ রশিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ ৫ আসনের সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য হোসনে আরা বাবলী, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, জেলা প্রশাসক (ডিসি) রাব্বী মিয়া, জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মঈনুল হক, জেলা আওয়ামীলীগের চেয়ারম্যান আব্দুল হাই, জাতীয় পার্টির জেলার সভাপতি আবু জাহের, নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজল, বিকেএমইএর পরিচালক শাহাদাত হোসেন সাজনু প্রমুখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন