শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

অবশেষে বিলুপ্ত হচ্ছে ৫৭ ধারা

সচিবালয়ে তথ্যমন্ত্রী-আইনমন্ত্রীর বৈঠক

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩০ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

অবশেষে সাংবাদিক নিবর্তনমূলক আইন হিসেবে পরিচিত তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা বাতিল হচ্ছে। গতকাল সচিবালয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৭ এর খসড়া চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু জানান, এই ধারা বাতিল সংক্রান্ত প্রস্তাব মন্ত্রিপরিষদের অনুমোদন পেলে তথ্য প্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের ৫৭ ধারাসহ কয়েকটি ধারা বিলুপ্ত হবে। তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনের (আইসিটি) বহুল আলোচিত ৫৪, ৫৫ ও ৫৭ ধারাসহ বিতর্কিত কয়েকটি ধারা বিলুপ্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের খসড়াটি চ‚ড়ান্ত করেছি। মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পর আশা করছি আগামী শীতকালীন অধিবেশনে জাতীয় সংসদে এটি উত্থাপন করতে পারব। আইসিটি আইনের ৫৭ ধারাকে স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থী দাবি করে সেটি বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছেন সম্পাদক পরিষদসহ গণমাধ্যমকর্মীরা। ৫৭ ধারায় বলা হয়েছে- ওয়েবসাইটে প্রকাশিত কোনো ব্যক্তির তথ্য যদি নীতিভ্রষ্ট বা অসৎ উদ্দেশ্যে উদ্বুদ্ধ করে, এতে যদি কারো মানহানি ঘটে, রাষ্ট্র বা ব্যক্তির ভাবমর্যাদা ক্ষুণœ হয়, তা হবে অপরাধ। এর শাস্তি অনধিক ১৪ বছর কারাদন্ড এবং অনধিক এক কোটি টাকা জরিমানা। ২০০৬ সালে হওয়া এ আইনটি ২০০৯ ও ২০১৩ সালে দুই দফা সংশোধন করা হয়। সর্বশেষ সংশোধনে সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর থেকে ১৪ বছর কারাদন্ড করা হয়। আর ৫৭ ধারার অপরাধকে করা হয় জামিন অযোগ্য।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি আইন থেকে ৫৭ ধারা বাদ দিয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে এ বিষয়ে বিভ্রান্তি দূর করা হবে। তিনি বলেন, আপনাদের যে উদ্বেগের ব্যাপার, সেটা হল সেকশন ৫৭ আইসিটি অ্যাক্ট। আমার বিশ্বাস, এই ৫৭ ধারা সেভাবে থাকবে না এবং ফ্রিডম অব স্পিচ রক্ষা করার জন্য যেসব চেক অ্যান্ড ব্যালেন্সের দরকার, আমার মনে হয়, দুটো আইনেই ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট ও স¤প্রচার আইনে প্রোটেকশন থাকবে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল জগতকে নিরাপত্তা দেয়ার পাশাপাশি এর প্রসার ও বিকাশে সাহায্য করাই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের লক্ষ্য। সংবিধানে নাগরিকদের যে মৌলিক অধিকারের কথা বলা আছে, সংবিধানের যেসব গুরুত্বপূর্ণ মূলনীতি আছে, তার সঙ্গে সম্পর্ক রেখেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খসড়া করা হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন খসড়া মন্ত্রিপরিষদে পাঠাব। মন্ত্রিপরিষদ যদি আনুমোদন করে, তাহলে একইসঙ্গে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারাসহ কয়েকটি ধারা বিলুপ্ত হয়ে যাবে। তখন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন আপনারা পাবেন একই সঙ্গে ৫৪, ৫৫, ৫৬, ৫৭ ও ৬৬ ধারা বিলুপ্ত হওয়ার প্রস্তাবও থাকবে। সে ক্ষেত্রে বিতর্কিত ওই ৫৭ ধারার বিষয়বস্তু কোনোভাবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অন্তর্ভুক্ত করে নেয়া হবে। ইনু বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন মূলত ডিজিটাল অপরাধ মোকাবেলার জন্য করা হচ্ছে। সুতরাং ডিজিটাল আপরাধ মোকাবেলার বিষয়টি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ১৬ কোটি নাগরিকের জন্য করা হচ্ছে। সুতরাং এখানে সাংবাদিক বলে আলাদা কোনো বিষয়বস্ত নেই। স¤প্রচার আইন যখন পরবর্তীতে আসবে, সেখানে সাংবাদিক ও গণমাধ্যমের কর্মীদের ব্যবস্থা করা হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
মো. মহিউদ্দিন ৩০ নভেম্বর, ২০১৭, ১:৪২ এএম says : 0
এটা আরো আগেই করা উচিত ছিলো
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন