ক্স রেলস্টেশনের উভয় পাশে শত শত অবৈধ দোকানপাট, বিমান যাত্রীসহ পথচারীরা ভোগান্তি শিকার
ক্স যাত্রীদের কারপার্কিং ট্যাক্সি ক্যাব রেন্টেকারে চালকদের দখলে, মাসোহারা আদায় করেন স্টেশন মাস্টার, আরএনবি সিআই, ইনচার্জ এবং জিআরপি ইনচার্জ
স্টাফ রিপোর্টার
আকাশ পথে দেশে প্রবেশের প্রধান বিমানবন্দর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। এ বিমানবন্দর দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার দেশী বিদেশী যাতায়াত করেন। তাদের অনেকেই দেশের বিভিন্ন এলাকায় রেলপথে যাতায়াতের জন্য বিমানবন্দর রেলস্টেশন ব্যবহার করেন। কিন্তু রেলস্টেশন ও আশপাশ এলাকার পরিবেশ দেখে বাংলাদেশ সম্পর্কে শুধু বিদেশীদের মধ্যেই বিরূপ প্রভাব পড়েনি। দেশী বিদেশী বিমানযাত্রীসহ সাধারণ মানুষের মধ্যেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। সংশ্লিষ্টদের অবহেলা এবং উদাসীনতার কারণে বিমানবন্দরের মতো গুরুত্বপূর্ণ এলাকার রেলস্টেশনটি এখন একটি বস্তিতে পরিণত হয়েছে। রেলস্টেশনের বাথরুম,টয়লেট, বিশ্রামাগার যেমন নোংরা ও ময়লায় ভর্তি, তেমনি বাইরের পরিবেশও খারাপ। রেলস্টেশনের পাশেই রয়েছে ময়লা আবর্জনার স্তূপ। বাথরুমগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী, ময়লা র দুর্গন্ধে দমবন্ধ হওয়ার উপক্রম। শুধু তাই নয়, রেলস্টেশনের পাশে যাত্রীদের ব্যবহারের জন্য রাখা পার্কিং এর জায়গাও বেদখল হয়ে গেছে।
স্থানীয়রা জানান, যাত্রীদের কারপার্কিং এর স্থলে রেন্টেকার, ট্যাক্সি ক্যাব এবং ভাসমান দোকান বসানো হয়েছে। প্রতিটি দোকান থেকে দৈনিক ১৬ শক টাকা আদায় করা হয়। একইভাবে পার্কিংএর জায়গা অলিখিতভাবে লিজ দেয়া হয়েছে রেন্টেকার ও ট্যাক্সি চালকদের কাছে। স্টেশন মাস্টার, বাংলাদেশ রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সিআই, জিআরপি পুলিশের ইনচার্জ টাকার বিনিময়ে রেলস্টেশনের উভয় পাশে ৩ শতাধিক ভাসমান দোকানদারদের কাছে অলিখিতভাবে এ ইজারা দিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, লাইনম্যান আকতার, করিম,মল্লিক, ইব্রাহিম, সেলিম, মনির ভাসমান দোকান থেকে প্রতিদিনই চাঁদা নেয়। রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সিআই মুজিবুর রহমানের নামে প্রতি দোকান থেকে ৩ শত টাকা,স্টেশন মাসটার মরন বাবুর নামে ৩ শত টাকা, জিআরপি এর বিমানবন্দর রেলস্টেশনের ইনচার্জ এস আই আকবরের নামে তিন শত টাকা করে ৯শত টাকা দৈনিক লাইনম্যানদের মাধ্যমে আদায় করে। এছাড়া প্রত্যেক লাইনম্যানকে ১৫০ টাকা করে দিতে হয় দোকানদারদের। এভাবে ট্যাক্সি ক্যাব, ও রেন্ট-এ-কারের চালকদের কাছ থেকেও দৈনিক ৩ শত টাকা করে আদায় করে। ট্যাক্সি ক্যাব, রেন্টেকার আর ভাসমান দোকানের কারণে সাধারণ যাত্রীরা তাদের গাড়ি পার্কিং করতে পারেন না। এসব দোকান পাটের কারণে পথচারী ও যাত্রীদের চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ওই এলাকার ফুটপাতেও বসানো হয়েছে ৫ শতাধিক দোকান। এসব দোকান থেকে বিমানবন্দর গোলচত্ত্বর ফাঁড়ি পুলিশ দৈনিক ৪ শক টাকা করে আদায় করেন। ভাসমান দোকানের কারণে ফুটপাত দিয়ে পথচারীদের চলাচলের উপায় নেই।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন দোকানী জানান, সিআই মুজিবর রহমানের টাকা আদায় করেন, আকতার আর করিম।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সিআই মুজিবর রহমান গতকাল ইনকিলাবকে বলেন, আমার নামে কেউ চাঁদা তোলে না। আকতার এবং করিম এখন টাকা তোলে না। অন্য কারোে নামে তোলতে পারে।
অবৈধ দোকান পাট উচ্ছেদ করা হচ্ছে না কেন জানতে চাইলে, সিআই মুজিবুর রহমান বলেন, উচ্ছেদ করার পরেও এরা আবার দোকান বসিয়েছে । তিনি বলেন, আমরা আবার তাদের উচ্ছেদ করব। তিনি স্বীকার করেন, ওই এলাকার নিরাপত্তা প্রদান এবং দোকানপাট বসতে না দেয়ার দায়িত্ব তাদের।
সরেজমিনে দেখা গেছে , প্রায় ১০ থেকে ১২ টি হোটেল রেস্তরা রয়েছে। দুপুরের পর থেকে দোকান পাট ও ভাসমান খাবারের দোকানে পুরো এলাকা সয়লাব হয়ে যায়।
বিমানবন্দর রেলস্টেশনের পূর্বপাশে এবং পশ্চিম পাশের রেলওয়ের পুরো খালি জায়গা বেদখল হয়ে গেছে। এছাড়া হাজী ক্যাম্পের দিকে যাতায়াতে রাস্তার ওপরে , রেল লাইনের দুইপাশে ফলের দোকানসহ বিভিন্ন ধরনের শতাধিক দোকান বসানো হয়েছে।
দোকানদারেরা জানান, স্টেশন মাস্টার মরন চন্দ্র বাবুকে দৈনিক ৪ শত টাকা, রেলওয়ে নিরাপত্তা কর্মকর্তা এবং জিআরপি কর্মকর্তাকে দৈনিক ৫ শত টাকা করে দেয়া হয়। আর এ টাকার বিনিময়েই রেললাইনের উভয় পাশে দোকান বসানোর সুযোগ দেয়া হয়।
তবে এস আই আকবর এবং মরণ চন্দ্র বাবু এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন