প্রধানমন্ত্রীর জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা
পানির দরে মাত্র ৬০ কোটি টাকায় প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকার সরকারী সম্পত্তি কক্সবাজার সৈকতের দৃষ্টিনন্দন হোটেল শৈবাল ওরিয়েন গ্রুপের কাছে গোপনে হস্তান্তরের প্রতিবাদে ফুঁসে উঠছে কক্সবাজারের মানুষ। এ নিয়ে বিক্ষুব্ধ কক্সবাজারের রাজনীবিদ, সচেতন মহল, সিভিল সোসাইটি, পরিবেশবাদী সংগঠনসহ সাধারণ জনগণ গতকাল এক প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছে। সমাবেশে হোটেল শৈবাল ওরিয়েন গ্রুপের হাতে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া বাতিল করে হোটেল শৈবাল সংলগ্ন বিশাল ভূমিতে একটি আধুনিক শিশু পার্ক স্থাপন করা এবং প্রয়োজনে এর পরিচালনার দায়িত্ব সেনাবহিনীর হাতে দেয়ার দাবি জানানো হয়। এব্যাপরে জরুরীভাবে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়। হাটেল শৈবাল রক্ষায় এ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ গতকাল বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল ১১ টায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হয়। গোপন চুক্তির মাধ্যমে পানির দামে প্রচীন পর্যটনবান্ধব হোটেলটি একটি অসাধু চক্রের হাতে তুলে দেয়ার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে কক্সবাজারের বিভিন্ন সামাজিক, পেশাজীবী ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, আজকের দিনে হোটেল শৈবালসহ সংলগ্ন জমির মূল্য পাঁচ হাজার কোটি টাক হলেও ভবিষ্যতে এর মূল্য কিন্তু টাকার অঙ্কে হিসাব করা যাবে না। হোটেল শৈবালের একটি দৃষ্টিনন্দন অবস্থান ছাড়াও এটি পর্যটন খাতে পথ প্রদর্শক হোটেল হিসেবে বিবেচিত। হোটেল শৈবালের দেখাদেখি আজ কক্সবাজারে গড়ে উঠেছে একাধিক পাঁচ তারাকা ও বিলাসবহুল হোটেল। পর্যায় ক্রমে কক্সবাজার হতে চলেছে বাংলাদেশের পর্যটন রাজধানী। দিন দিন এর মূল্য ও গুরুত্ব বাড়ছে।
একই সাথে ১৩০ একর জমি ছাড়াও হোটেল শৈবালের অত্যাধুনিক তিন তলা ভবন, সাগরিকা রেস্তোরা ভবন, সুইমিংপুল ভবন, লাইভ ফিস রেস্তোরার দোতলা ভবন, শৈবালের গলফ বার ভবনসহ মোট ১৪০ কোটি টাকার ভবনও হস্তান্তর করা হবে। পর্যটন এরিয়ার প্রাইম লোকেশনে হোটেল শৈবালের প্রতি শতক জমির মূল্য নূন্যতম ৩৫ লক্ষ টাকা ধরা হলে ১৩০ একর জমির মূল্য প্রায় ৪ হাজার ৫৫০ কোটি। এছাড়া হোটেল শৈবালের ভবনসহ আশপাশের অন্যান্য ভবনের মূল্য ১৪০ কোটি টাকা। কিন্তু পিপিপি প্রকল্পের আওতায় বির্তকিত ওরিয়ন গ্রæপকে মাত্র ৬০ কোটি টাকায় শৈবালের সমস্ত সম্পত্তি হস্তান্তরের বিষয়টি কার স্বার্থে কেউ জানেনা।
প্রধানমন্ত্রীর অগোচরে একটি ভূমিদস্যু চক্র সরকারের মহা মূল্যবান এই সম্পত্তি হাত করার জন্য কোটি কোটি টাকার অবৈধ লেন দেন করেছে বলেও অভিযোগ করেন বক্তারা। বক্তারা অবিলম্বে ওরিয়েন গ্রুপের সাথে গোপনে সম্পাদিত অবৈধ চুক্তি বাতিল করার দাবী জানান। প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধনে সুর্নিদিষ্টভাবে প্রস্তাব করা হয় হোটেল শৈবাল ওরিয়েন গ্রুপের হাতে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া বাতিল করা, হোটেল শৈবাল সংলগ্ন বিশাল ভূমিতে একটি আধুনিক শিশু পার্ক স্থাপন করা, প্রয়োজনে এর পরিচালনার দায়িত্ব সেনাবহিনীর হাতে দেয়া। সমাবেশে এব্যাপরে জরুরীভাবে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়।
ইঞ্জিনিয়ার কানন পালের সভাপতিত্বে, পরিকল্পিত কক্সবাজারের সমন্বয়ক আবদুল আলীম নোবেলের সমন্বয়ে ও তেল-গ্যাস-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির জেলা সাধারণ সম্পাদক কলিম উল্লাহ কলিমের সঞ্চালনায় আয়োজিত উক্ত মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সুজনের জেলা সভাপতি কক্সবাজার সরকারী কলেজের সাবেক প্রিন্সিপ্রাল প্রফেসর আবদুল বারী, সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজারের সভাপতি প্রবীণ সাংবাদিক মুহম্মদ নূরুল ইসলাম, সাংবাদিক মুহাম্মদ আলী জিন্নাত, সাংবাদিক শামসুল হক শারেক, জাতীয় পার্টির নেতা মুফিজুর রহমান, সেক্টরস কমান্ডার ফোরাম-৭১ এর নেতা সোলতান মাহমুদ, কক্সবাজার পৌরসভার কাউন্সিলর ও প্যারেল মেয়র রফিকুল ইসলাম, কক্সবাজার সোসাইটির সভাপতি কমরেড গিয়াস উদ্দীন, সাংবাদিক এম.আর মাহবুব, দীপক শর্মা দীপু, আমানুল হক বাবুল, এইচএম নজরুল ইসলাম, শিক্ষক নেতা তাহমিদুলু মুনতাসির, যুবনেতা নাজিম উদ্দীন, কমিউনিস্টপাটি নেতা অনিল দত্ত, এড. আহছান উল্লাহ, আজিজ রাসেল প্রমুখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন