শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

স্বাস্থ্য

ডায়াবেটিসজনিত অন্ধত্ব প্রতিরোধ করা যায়

| প্রকাশের সময় : ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ডায়াবেটিস চোখে মারাত্মক প্রভাব ফেলে। আক্রান্তরা ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি, ছানি পড়া, গøুকোমায় আক্রান্ত হয়ে অন্ধ হতে পারেন। অন্ধত্বের প্রধান কারণগুলোর একটি ডায়াবেটিস। অথচ শুধু ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে অন্ধত্ব সহজেই প্রতিরোধ করা যায়। ছানিজনিত অন্ধত্ব ছোটখাটো অপারেশনের মাধ্যমে ভালো করা গেলেও ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথির কারণে চিরতরে অন্ধ হতে হয়। চিকিৎসা করালেও খুব এটা লাভ হয় না। তবে শুরুতেই রোগ নির্ণয় করে চিকিৎসা করলে অন্ধত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি মেলে।
চোখের গুরুতপূর্ণ অংশ হলো রেটিনা। এটা একটা সংবেদনশীল পর্দা, যা চক্ষুগোলকের ভেতরের দিকে থাকে। এর ওপর যা দেখি, তার ছবি প্রতিফলিত হয়। এরপর তা বিভিন্ন নিউরোকেমিক্যাল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মুহূর্তে মস্তিষ্কে পৌঁছে এবং আমরা ছবি দেখি। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের কারণে রেটিনায় সূ² রক্তনালিগুলো বন্ধ হয়ে আসে। এতে রক্তশূন্যতা বা অক্সিজেন স্বল্পতা দেখা দেয়। ফলে কেন্দ্রীয় রেটিনায় পানি ও তেল জাতীয় পদার্থ জমে ফুলে যায় অথবা রেটিনায় অক্সিজেন সরবরাহ বাড়াতে নতুন রক্তনালির সৃষ্টি হয়। এসব রক্তনালি স্বাভাবিক রক্তনালির মতো পরিপক্ব হয় না। এসব নতুন অপরিপক্ব রক্তনালি খুব সহজেই ভঙ্গুর হয়। এতে করে চোখের ভেতর রক্তরণ হয়। ফলে দৃষ্টিশক্তি একেবারেই চলে যায়। তখন কিছুই করার থাকে না। তবে শুরুতেই চিকিৎসা গ্রহণ করলে দৃষ্টিশক্তি ধরে রাখা সম্ভব। আবার অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের কারণে চোখের লেন্স অস্বচ্ছ হয়ে যায়, যার নাম ছানি পড়া। এ কারণেও দৃষ্টিশক্তি কমে যায়।
দীর্ঘদিনের ছানির কারণে পুরোপুরি অন্ধ হয়ে যান অনেকে। অথচ মাত্র ২০ থেকে ৩০ মিনিটের ছোট একটি অপারেশন পারে এ অন্ধত্ব দূর করতে। ডায়াবেটিসের কারণে চোখের চাপ বেড়ে যাওয়ায় দেখা দেয় গøুকোমা। এটিও রেটিনায় সমস্যা করে চিরতরে অন্ধ করে দিতে পারে। ডায়াবেটিসের কারণে অন্ধত্ব বরণ করতে হয়Ñ এ সত্যটি এখনো দেশের বেশিরভাগ মানুষ জানেন না। অথচ এ অন্ধত্ব প্রতিরোধ করা যায়। শুধু ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে অন্ধত্ব প্রতিরোধ করা সম্ভব। চিকিৎসকের পরামর্শমতো ওষুধ সেবন, নিয়মিত ব্যায়াম ও নিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে ডায়াবেটিসকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। বছরে দুবার চোখ পরীক্ষা করান। আপনি সচেতন হলে দেশ মুক্তি পাবে অন্ধত্বের অভিশাপ থেকে।

প্রফেসর সৈয়দ ডা. এ.কে আজাদ
চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ ও ফ্যাকো সার্জন, সাবেক বিভাগীয় প্রধান, চক্ষুরোগ বিভাগ, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ
আর্ল-রাজী হাসপাতাল, ফার্মগেট, ঢাকা, ০১৫৫২৪০৯০২৬, ০১৭১০৭৩৬০০৮

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন