অর্থনৈতিক রিপোর্টার : নতুন বছর ২০১৮’র আগমনে কালের গর্ভে বিলীন হতে যাচ্ছে ২০১৭। এই ২০১৭ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বাংলাদেশকে উত্তরণের পথে নেবে বলে আশা করা হচ্ছে। সার্বিক স্থিতিশীলতার পটভূমিতে ২০১৪ সাল থেকে সূচিত অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা ২০১৭ সালেও অব্যাহত রয়েছে। এই সময়ে প্রায় সব অর্থনৈতিক সূচকের ইতিবাচক ধারার সুবাদে বাংলাদেশ বৈশ্বিক প্রশংসা অর্জনে সক্ষম হয়েছে। নিউইয়র্ক ভিত্তিক অর্থনীতি ও বাণিজ্য সংবাদভিত্তিক ওয়েবসাইট ‘বিজনেস ইনসাইডার’ ২০১৭ সালের ৬ এপ্রিলের এক প্রতিবেদনে বাংলাদেশকে নতুন এশিয়ান টাইগার হিসেবে অভিহিত করেছে।
জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি (সিডিপি), বিশ্বব্যাংক, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) এবং ইন্টারন্যাশনাল মনেটারি ফান্ড (আইএমএফ) বিগত কয়েক বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতির স্থিতিশীল অগ্রযাত্রার প্রশংসা করেছে। ২০১৭ সালে বড় ধরনের কোন রাজনৈতিক সমস্যা দেখা দেয়নি। এই সময়ে রেকর্ড পরিমাণ রিজার্ভ, লক্ষ্যমাত্রার অধিক জিডিপি প্রবৃদ্ধি ও মুদ্রাস্ফীতির নি¤œ হারের সুবাদে অর্থনীতির গতি ছিল তেজি। অতি লক্ষণীয় সাফল্য হচ্ছে যে প্রবৃদ্ধির নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ৭ দশমিক ২ শতাংশ ছাড়িয়ে ৭ দশমিক ২৮ শতাংশ অর্জন। মাথাপিছু আয় ২০১৬-এর ১৪৬৫ ডলার থেকে বেড়ে ১৬১০ ডলারে উন্নীত হয়েছে।
বিজনেস ইনসাইডারের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে ১৯৬০ থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত সময়ে হংকং, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া ও তাইওয়ান এই চারটি দেশ ছিলো এশিয়ান টাইগারের তালিকায়। কিন্তু এখন এই তালিকায় বাংলাদেশ নামে আর একটি দেশ স্থান করে নিয়েছে। ‘দেয়ার ইজ এ নিউ এশিয়ান টাইগার’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি লেখেন জোনাথান গারবার।
সিডিপি’র এক রিপোর্টে বলা হয়, বাংলাদেশ ২০১৮ সালের মার্চে সিডিপি’র পরবর্তী পর্যালোচনায় স্বল্পোন্নতের তালিকা থেকে উত্তরণের ৩টি মানদন্ড পূরণ করবে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মুডিজ ইনভেস্টর সার্ভিস ২০১৭ সালের এপ্রিলে বাংলাদেশ সরকারের বিএ৩ বন্ড রেটিং ও রেটিংয়ে স্থিতিশীলতা অব্যাহতের কথা বলেছে।
লন্ডনভিত্তিক প্রাইস ওয়াটার হাউস কুপারসের ২০১৭’র ফেব্রæয়ারির রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, বাংলাদেশ ২০৫০ সালের মধ্যে নেদারল্যান্ড, স্পেন, অস্ট্রেলিয়া, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়াকে টপকে বিশ্বের ২৩তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশে পরিণত হবে। ‘দ্য লং ভিউ : হাউ উইল দ্য গেøাবাল ইকোনমিক অর্ডার চেঞ্জ বাই ২০৫০?’ এই নিবন্ধে পিডাবিøউসি একথাও বলেছে যে ২০৩০’র মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের ২৮তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশে পরিণত হবে।
এডিবি’র এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক-২০১৭ বলেছে, ২০১৭ সালে কৃষিখাতে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ধারণার চেয়েও বেশি ছিলো। বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশের ইকোনোমিক ডেভেলপমেন্ট আপডেটে (সেপ্টেম্বর) বলা হয়েছে, অনেক প্রতিকূলতা সত্তে¡ও বাংলাদেশের অর্থনীতি সাবলীলভাবে এগিয়ে চলছে। আইএমএফ ক্ষুদ্র অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের অব্যাহত অগ্রগতির প্রশংসা করেছে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডাবিøউইএফ) ২৭ সেপ্টেম্বরের ২০১৭-১৮’র গেøাবাল কম্পিটিটিভনেস ইনডেক্সে (জিসিআই) বাংলাদেশের অবস্থান ১৩৭ দেশের মধ্যে ৯৯তম উল্লেখ করা হয়। মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সর্বশেষ ত্রৈমাসিক পর্যালোচনায় বলা হয়, অধিকাংশ ক্ষুদ্র অর্থনৈতিক সূচক এবং সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগ ইতিবাচক ধারায় এগিয়ে যাচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন