স্বাধীনতার মাস মার্চ মাসে ছাত্রলীগের জাতীয় সম্মেলন সম্মেলন সম্পন্ন করতে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেয়ার জন্য বর্তমান কমিটির প্রতি আহŸান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, একটা খবর দেব, সুখবর। আমি নেত্রীর (শেখ হাসিনা) সঙ্গে কথা বলেছি। অনতিবিলম্বে ছাত্রলীগের নির্বাহী কমিটির সভা ডেকে সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করুন। আগামী মার্চ মাসে, স্বাধীনতার মাসে সম্মেলন হোক-এটা নেত্রীর ইচ্ছা। সম্মেলনের প্রস্তুতি নিন, মার্চে সম্মেলন।
গতকাল শনিবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের সামনে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশের ছাত্রলীগের ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে র্যালীপূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, আপনারা অবিলম্বে কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী কমিটির সভা ডেকে সম্মেলনের প্রস্তুতি নিন। আগামী মার্চ মাসে ছাত্রলীগের সম্মেলন হবে। তিনি বলেন, ছাত্রলীগের বর্তমান নেতৃত্বকে মার্চ মাসে সংগঠনের তারিখ নির্ধারণ করার অনুরোধ করছি। কারণ ছাত্রলীগই কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভার মাধ্যমে জাতীয় সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করে থাকে। আশা করি, এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না।
ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ওবায়দুল কাদের বলেন, ছাত্রলীগের নেতারা সম্মেলন দিয়ে পদ না ছাড়লে আওয়ামী লীগে তোমরা জুনিয়র হয়ে যাবে। আমরা চাই আওয়ামী লীগে তরুণ নেতৃত্ব আসুক। ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বের প্রশংসাও করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, কিছু কিছু নেগেটিভ দিক থাকতে পারে, তবে তাদের অর্জন অনেক।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের রাজনীতির রোল মডেল। ডিজিটাল বাংলাদেশের সার্বিক রূপকার, বিপন্ন মানবতার বাতিঘর, মাদার অব হিউমিনিটি বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা উন্নয়ন ও অর্জনের রোল মডেল। ডিজিটিাল বাংলাদেশের তরুন সমাজের আইডল, বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র, আইসিটি ইন্টারন্যাশনাল এ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত সজীব ওয়াজেদ জয় ছাত্রলীগের আইডল।
কাদের বলেন, ছাত্রলীগের সংখ্যাগত পরিমান বৃদ্ধি পেয়েছে। সংখ্যাগত বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ছাত্রলীগের গুণগত মানও বাড়াতে হবে। কারণ লাখ লাখ কর্মী থাকার পরও যদি শৃঙ্খলা না থাকে সে সংখ্যাগত বৃদ্ধির কোন সুফল পাওয়া যাবে না। আবার সংখ্যা কম থাকার পরও যদি সাংগঠনিক শৃঙ্খলা থাকে সেই সংগঠন বড় সংগঠনের চেয়েও শক্তিশালী হবে।
তিনি বলেন, নিজেরা নিজেদের শত্রæ হওয়ার প্র্যাকটিস বন্ধ করতে হবে। আর সরকারের বিশাল অর্জনকে কারো অপকর্মের জন্য ¤øান হতে দেয়া হবে না। অন্যায় যেই করুক না কেন তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কাদের বলেন, যে সংগঠনের অতীত গৌরবান্বিত সে সংগঠন বর্তমান নেতাদের অপকর্মের জন্য কলঙ্কিত হতে পারে না। যারা সংগঠনকে কলঙ্কিত করবে তাদের ছাত্রলীগে থাকার অধিকার নেই।
এ সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, চলতি বছর হবে বিএনপির নেতৃত্বাধীন সা¤প্রদায়িক অপশক্তির পরাজয়ের বছর। তিনি বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্বে সা¤প্রদায়িক অপশক্তিকে পরাজিত করে বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিজয় অভিযানের নবতর অভিযাত্রা আজ থেকে শুরু হলো।
কাদের আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সততা ও সাহসের যে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন সেখান থেকে ছাত্রলীগের প্রতিটি নেতাকর্মীকে শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে।
জাতীয় সঙ্গীত ও দলীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে র্যালীর কার্যক্রম শুরু করা হয়। তারপর শান্তির প্রতীক পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। শোভাযাত্রা সফল করতে ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ওয়ার্ড থেকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে, বিশাল জাতীয় পতাকা ও ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে যোগদান করে। শোভাযাত্রাটি অপরাজেয় বাংলার পাদদেশ থেকে শুরু হয়ে টিএসসি মোড়, শাহবাগ, কাকরাইল, বিজয়নগর মোড় ও পুরানা পল্টন হয়ে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে গিয়ে শেষ হয়।
ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগের সভাপতিত্বে সমাবেশে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশ পরিচালনা করেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন।
প্রসঙ্গত: ২০১৫ সালের ২৬ জুলাই সম্মেলনে ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ এবং সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসাইন নেতৃত্বে আসেন। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী গত বছরের ২৬ জুলাই এই কমিটির মেয়াদ শেষ হলেও সম্মেলন কিংবা কাউন্সিলের আয়োজন এখনও হয়নি।
সম্মেলনের দিনক্ষণের ঘোষণা না আসায় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কয়েকজন ক্ষুব্ধ নেতা গত ৩ জানুয়ারি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছিলেন, পরে অবশ্য আওয়ামী লীগের নেতাদের আশ্বাসে তা স্থগিত করা হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন