প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দেয়া বিএনপির উকিল নোটিশকে ভুয়া বলে আখ্যায়িত করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘ভুয়া উকিল নোটিশ দেয়ার জন্য বিএনপিকেও উকিল নোটিশ দেয়া হবে।’
শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত ‘শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এই কথা জানান।
ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে ভুয়া উকিল নোটিশ দেওয়ার জন্য বিএনপিকে এবং ‘জোড়া তালি দিয়ে পদ্মা সেতু হচ্ছে’ এমন বক্তব্যের জন্য বিএনপির চেয়ারপারসনকে উকিল নোটিশ দেওয়া হবে। বিএনপিকে অপেক্ষা করতে হবে সেই উকিল নোটিশের জন্য।
তিনি আরও বলেন, ‘ফখরুল সাহেব বলছেন পদ্মা সেতুর ডিজাইনে ভুল আছে। তথ্য উপাত্ত নিয়ে প্রমাণ করতে আসুন ডিজাইনের কোথায় ভুল, কোথায় কারিগরি ভুল আছে। যদি না পারেন আপনাকেও উকিল নোটিশ পাঠানো হবে।’
আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ২৩ ডিসেম্বর উকিল নোটিশ পাঠান বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। সৌদি আরবে খালেদা জিয়ার সম্পদ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর করা সাম্প্রতিক বক্তব্যের জের ধরে এই উকিল নোটিশ পাঠানো হয়।
ওবায়দুল কাদের এ প্রসঙ্গে বলেন, প্রধানমন্ত্রী জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে একটি পরিবারের সদস্যদের টাকা বিদেশে পাচার করার কথা বলেছেন। প্রধানমন্ত্রী এ তথ্য সংসদের মাধ্যমে জাতিকে জানিয়েছেন। তাদের দুর্নীতির কিচ্ছা রূপকথার কাহিনীকেও হার মানিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সৎ সাহস আছে বলেই সত্যকে তুলে ধরে তাদের হাটে হাঁড়ি ভেঙে দিয়েছেন। সে কারণে বিএনপি নেতাদের অন্তর্জ্বালা শুরু হয়ে গেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
রাজধানীর নাখালপাড়ায় জঙ্গি দমন অভিযান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জঙ্গি দমনে সক্ষমতার দিক থেকে আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা রোল মডেল। আজও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী একটি অভিযান চালিয়েছে। সেখানে জঙ্গিদের প্রতিরোধ করেছে ও পরাজিত করেছে।
জামায়াত ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উপনির্বাচনে প্রার্থী দিচ্ছে, নিবন্ধিত দল ছাড়া অন্য কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, ‘দেখুন এই প্রশ্নের জবাব দেবে নির্বাচন কমিশন। তা আমি দিতে পারি না। আমি যতটুকু জানি এখানে নিবন্ধিত কোনও দল ছাড়া অন্য কেউ অংশগ্রহণ করা কথা নয়। কমিশনের অ্যালাও করা ঠিক না।’
এই শীতে বিএনপির কোনও কার্যক্রম না থাকার প্রসঙ্গ টেনে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এবারের শীত ৫০ বছরের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। আমাদের নেত্রী টেলিভিশনের স্ক্রলে যখন পঞ্চগড়-ঠাকুরগাঁওয়ে তীব্র শীতের কথা জানতে পারলেন, সঙ্গে সঙ্গে তিনি আমাকে সেখানে যেতে বললেন শীতবস্ত্র বিতরণের জন্য। সেদিনই আমরা চলে গেছি। রাতে আমরা প্রচণ্ড শীতের মধ্যে সৈয়দপুরে শীতবস্ত্র বিতরণ করেছিলাম। আমরা নগদ ৩২ লাখ টাকা ও ৩৭ হাজার কম্বল বিতরণ করি। আমাদের রাজনীতি নিষ্ঠুর হয়ে গেছে। এটা শুধু প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য। রাজনীতি শুধু প্রতিপক্ষকে বিষোদগার নয়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আওয়ামী লীগ ছাড়া কোনও রাজনৈতিক দলকে শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে দেখিনি। হয়তো আওয়ামী লীগ যাওয়ার জন্য অনেকে যায়। সেটাতো একদিনের জন্য লোক দেখানো সাহায্য।’ শেখ হাসিনার সরকার এ পর্যন্ত শীতার্তদের মাঝে এক কোটি কম্বল বিতরণ করেছে বলে জানান মন্ত্রী।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি আবুল হাসনাতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ। এসময় নগর আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন