শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

তীব্র শীতে বাড়ছে না তাপমাত্রা

| প্রকাশের সময় : ১৪ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : ঘন কুয়াশার কারণে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগসহ দেশের বেশির ভাগ এলাকায় দিনের তাপমাত্রা বাড়তে পারছে না। শীতের অনুভূতি কোথায় কোথায় অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছে যাচ্ছে। শেষ পৌষে প্রায় সারাদিন থাকছে কুয়াশাচ্ছন্ন। দুপুরের দিকে উত্তাপহীন সূর্যের দেখা মিললেও দুপুর ১টা থেকে দেড়টার মধ্যে তা ঢেকে যায় কুয়াশার চাদরে। সেই সঙ্গে রয়েছে হিমেল হাওয়া। যা কাঁটার মতো বিঁধছে শরীরে। সন্ধ্যার পরেই বৃদ্ধি পায় এর প্রকোপ। ফাঁকা হয়ে যায় শহরের রাস্তাঘাট। দ্রুত বন্ধ হয়ে যায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। কাজে যেতে পারছে না শ্রমজীবী মানুষ। বিদ্যালয়ে কমে গেছে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি। কনকনে ঠান্ডায় ইরি-বোরে মৌসুমের শুরুতে জমি তৈরির কাজে যেতে পারছে না কৃষক। শীত বস্ত্রের অভাবে খড়কুটো জ্বালিয়ে উত্তাপ নিচ্ছে ছিন্নমূল মানুষ। ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বয়স্ক মানুষ ও শিশু। ঘন কুয়াশায় যানবাহন, নৌ-ফেরি ও বিমান চলাচলও ব্যাহত হচ্ছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্তব্যরত পূর্বাভাস কর্মকর্তা বলেন, কুয়াশার কারণে দিনের তাপমাত্রা বাড়তে পারছে না। স্বাভাবিকভাবেই এর প্রভাব পড়ছে রাতের তাপমাত্রার ওপর। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলেপ্রায় সারাদিনই কুয়াশা থাকছে। সে কারণে সূর্যের তাপ ভূভাগে পৌঁছতে পারছে না। তাপমাত্রাও বাড়ছে না। আবহাওয়া অধিদপ্তরের অন্য এক কর্মকর্তা বলেছেন, আগামী কয়েকদিনে তাপমাত্রা বাড়বে। ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কিছু ওপরে যেতে পারে।
গতকাল আবহাওয়া বিভাগের দাপ্তরিক পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও ময়মনসিংহ বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। রাঙ্গামাটি, সীতাকুন্ড, চাঁদপুর, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, কিশোরগঞ্জ, মাদারীপুর, হাতিয়া অঞ্চলও এর আওতায় রয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী চলমান শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে।
রংপুর জেলা সংবাদদাতা জানান, গতকাল রংপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ২ ডিগ্রী সেলসিয়াস। স্মরণকালের রেকর্ডকৃত ভয়াবহ ঠান্ডার কারনে মানুষ গত কয়েকদিন ধরেই ক্ষেতে-খামারে কাজ করতে পারছে না। জরুরী প্রয়োজন ছাড়া হাট-বাজারেও যাচ্ছে না। দিন এবং রাতের অধিকাংশ সময়ই খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুনের তাপ নিয়ে শীত নিবারনের প্রাণপন চেষ্টা করছে এ অঞ্চলের মানুষ। গরীব ছিন্নমুল মানুষগুলো চরম দুর্বিপাকে পড়েছেন। বিশেষ করে চরাঞ্চলের মানুষগুলোর দুর্দশা চরমে পৌঁছেছে। তারা শীতবস্ত্রের জন্য বিত্তবানদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে।
অব্যাহত ঘন কুয়াশার কারনে এ অঞ্চলে শীতকালীন শাক-সব্জিসহ বিভিন্ন রবিশস্যের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হচ্ছে। নষ্ট হয়ে যাচ্ছে আলু ক্ষেত ও বোরো ধানের বীজতলা। ঘন কুয়াশার কারনে বোরো ধানের বীজতলা হলুদ বর্ণ ধারণ করে মরে যাচ্ছে। আলু ক্ষেতে দেখা দিচ্ছে লেট ব্রাইটসহ বিভিন্ন ধরনের রোগ।
কুড়িগ্রাম জেলা সংবাদদাতা জানান, কুড়িগ্রামের কৃষি আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক জাকির হোসেন জানান, শনিবার জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮.২ ডিগ্রী সেলসিয়াস। আর শুক্রবার জেলার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৭.১ ডিগ্রী সেলসিয়াস।
অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার তাপমাত্রা বেশি নিম্নগামী ও শৈত্য প্রবাহ দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে হত-দরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষের। কনকনে ঠান্ডা আর হিমেল হাওয়ায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে শিশু ও বৃদ্ধরা। বাড়ছে শীত জনিত রোগের প্রকোপ। বিশেষ করে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, হার্ডের রোগীর সংখ্যা বাড়ছে হাসপাতালগুলোতে।
ফরিদপুর জেলা সংবাদদাতা জানান, ফরিদপুরের মধুখালীতে ভোর থেকেই ঘন কুয়াশা, শৈত প্রবাহ আর শীতের তীব্রতা বেড়ে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গত কয়েকদিনে শীতে সাধারণ মানুষ কষ্টে আছে তার পর আবার শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে। গতকাল শনিবার মধুখালীতে বেলা এগাটায় তাপমাত্রা দেখাগেছে ১০/১২ ডিগ্রী সেলসিয়াস। সাধারণের বক্তব্য তাপমাত্রার চেয়ে শীতের তীব্রতা বেশী। উপজেলা সিনিয়র কৃষি কর্মকর্তা খালেদা পারভীন জানান তাপমাত্র ঘন কুয়াশা ও শৈত প্রবাহের কারণে গমসহ রবিশস্য ক্ষতি হওয়ার আশংঙ্খা এবং চাষীদের রোপা ইরি ক্ষেতে রোপন করতে বারন করা হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন