শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

বিজিবি-পুলিশের গুলিতে হত্যা ভয়ে এলাকা ছাড়া সাধারণ মানুষ নিহতদের বাড়িতে শোকের মাতম থামছে না

প্রকাশের সময় : ২৬ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মঠবাড়িয়া উপজেলা সংবাদদাতা : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় সাফা ডিগ্রী কলেজ কেন্দ্রে হামলা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর নির্বিচারে গুলিতে ৫ জন নিহতের ঘটনা তদন্তে ৩টি দল কাজ শুরু করেছে। স্থানীয় ১৩শ’ জন অজ্ঞতনামা এলাকাবাসীকে আসামী করায় ধানীসাফা ইউনিয়নের ধানীসাফা, বুড়িরচড়, ফুলঝুড়ি, তেতুলবাড়িয়া ও আমুরবুনিয়া এলাকা গ্রেফতার আতঙ্কে পুরুষ শূন্য হয়ে পড়েছে।
মামলায় নাম উল্লেখ করে কাউকে আসামী করা হলো না কেন? এ প্রশ্নের জবাবে মঠবাড়িয়া থানার অফিসার ইনচার্জ খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, বাদী অন্য জেলার পুলিশ কর্মকর্তা হওয়ায় আসামীদের চেনেন না বলে নাম উল্লেখ করতে পারেননি। তবে তদন্ত করলেই আসামীদের নাম পাওয়া যাবে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মঠবাড়িয়া থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মোঃ নাসির উদ্দিন জানান, উদ্ভুত পরিস্থিতির জন্য জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্তের পরেই আইনের আওতায় আনা হবে। ভোট কেন্দ্রে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে প্রভাবশালী কেউ জড়িত থাকলে তারাদেরকেও বিচারের আওতায় আনা হবে। তাছড়া তদন্ত কর্মকর্তা আরও জানান, নির্বাচনী দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এ ঘটনায় পিরোজপুর জেলা প্রশাসকের গঠিত তদন্ত কমিটির আহবায়ক অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মানিক হার রহমান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সুভ্রত কান্তি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম ফরিদ উদ্দিন ও থানা অফিসার ইনচার্জ খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমানকে সাথে নিয়ে আজ শুক্রবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তদন্ত কাজ শুরু করেন। এসময় সাংবাদিকদের বলেন, কেন্দ্র সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনগণের সাক্ষ্যগ্রহণে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। তদন্তের স্বার্থে তা বলা যাচ্ছে না। তবে ৭ দিনের মধ্যেই তদন্ত প্রতিবেদন তৈরী করা হবে বলে তিনি জানান।
শুক্রবার দুপুরে জুম্মার নামাজ বাদ বুড়িরচড় এলাকায় গিয়ে দেখা যায় ৫ জন নিহতের ৩ জনের বাড়ি ওই গ্রামে ১৫০ গজের মধ্যে। পাশাপাশি তিনজনের নিহতের ঘটনায় এদিকে স্বজনদের মাঝে চলছে শোকের মাতম অন্যদিকে মামলা দায়েরের পর চলছে গ্রেফতার আতঙ্ক। এঘটনায় স্বামীর মৃত্যু খবর সুনে বেল্লালের স্ত্রী সীমা আক্তার (২০) অসুস্থ হয়ে মঠবাড়িয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন পারিবারিক সূত্রে জানা যায়। ধানীসাফা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের তৃতীয়বারের মত নির্বাচিত ইউপি সদস্য ইদ্রিস তালুকদার জানান, বিজিবি ও পুলিশের আতঙ্কে এলাকার যুবকরা বাড়ি ছাড়া। তিনি আরও জানান যে, গ্রেফতার আতঙ্কে ওই ৫ গ্রামের ২০/২৫ জন যুবক তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে তুষখালী লঞ্চ ঢাকাগামী রেডসান লঞ্চযোগে এলাকা ত্যাগ করছে। এদিকে বিজিবি ও পুলিশের গুলিতে নিহতদের রুহের মাগফেরত কামনায় এলাকাবাসীর উদ্যোগে শুক্রবার দুপুরে কুলখানী ও মিলাদ অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও নিহতদের স্মরণে জুম্মার নামাজ বাদ পাশ্ববর্তী সদ্য নির্বাচিত তুষখালী ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ শাহজাহান হাওলাদার এলাকার ৬৩টি জামে মসজিদে জুমাবাদ দোয়া ও মিলাদের আয়োজন করেন। চেয়ারম্যান শাহজাহান হাওলাদার জানান, ওই ঘটনার পর থেকে ধানীসাফা ও তার তুষখালী বাজার সন্ধ্যা হতে না হতেই জনশূন্য হয়ে পড়ে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন