মাটি, পানি, বাতাস কোনটাই রেহাই পায় না ইটভাটার দূষণ থেকে। বাংলাদেশে প্রায় ৯৭০০ ইটভাটা রয়েছে। যার প্রায় অর্ধেক অবৈধ। লাইন্সেস নেই। পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র ছাড়াই চলছে বেশিরভাগ ইটভাটা। কম উচ্চতার চিমনিতে ইট পোড়ানো হয়। বেশিরভাগেই অবৈধভাবে ড্রাম চিমনি বসানো। সবচেয়ে ভয়ংকর হলো, মানব বসতির মধ্যে ইটভাটা হচ্ছে। ধানী জমিতে, নদীর ধারে ইটভাটা। ফলে মানুষের যেমন ক্ষতি হয়, তেমনি ইটভাটার আশে পাশের ফসল, গাছপালা মরে যায়। ইটভাটায় বনজ, ফলদ গাছ পোড়ানো হয়। এসব দেখার কেউ নেই। সংবাদপত্রে প্রচুর ইটভাটা সংক্রান্ত সংবাদ ছাপা হয়। তবে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিয়েছে এমন শোনা যায় কমই। স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে অবৈধ ইটভাটাগুলো টিকে আছে। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ইট পোড়ানো যায়। এতে পরিবেশের কম ক্ষতি হয়। বেশি লাভের জন্য আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে ইটভাটার মালিকরা উৎসাহী নয়। তাদের অনেকে আবার উন্নত প্রযুক্তির বিষয়ে জানেই না। ফলে দিনের পর দিন ক্ষতিকর ইটভাটার সংখ্যা বাড়ছে। বাড়ছে পরিবেশ দূষণ। রাজধানী শহর ঢাকার বায়ু দূষণের জন্য আশে পাশের ইটভাটাগুলোকে দায়ী করা হয়। ইটের বিকল্প কাচ আছে। তবে তা দামে সস্তা নয়। গ্রামের লোকজন কাচের ব্যবহার কম জানে। তারা ইটের দেয়াল দেখতে অভ্যস্ত। তাই ইটের বিকল্প নেই এই মুহূর্তে। পরিবেশ সুরক্ষা করে ইট পোড়াতে বাধ্য করতে হবে। ইটভাটার মালিকরা আইনের ঊর্ধ্বে নয়। কিছুদিন সময় দিয়ে বলা দরকার, কতদিনের মধ্যে তারা ইটভাটায় আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করবে, গাছ পোড়ানো সম্পূর্ণ বন্ধ করবে। কেন্দ্রীয়ভাবে কিছু করার দরকার নেই। স্থানীয় প্রসাাশনই এই কাজটুকু করতে পারে। প্রয়োজনে প্রত্যেক থানায় থানা নির্বাহী অফিসার, থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, স্থানীয় সাংবাদিক, সুশীল সমাজের লোকদের নিয়ে পরিবেশ সুরক্ষা কমিটি গঠন করা যেতে পারে। যারা এলাকায় ইটভাটাগুলোর পরিবেশ দূষণ রোধে কাজ করবে। পাশাপাশি অনান্য মাধ্যমের পরিবেশ দূষণ রোধেও তাদের ভূমিকা থাকবে। এটা সবচেয়ে জরুরি।
মুহাম্মদ শফিকুর রহমান,
বানারীপাড়া, বরিশাল।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন