আবদুল হালিম দুলাল, মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) থেকে : মঠবাড়িয়া উপজেলার ২নং ধানী সাফা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড বুড়িরচর গ্রামটি এখন শোক ও আতঙ্কের জনপথে পরিণত হয়েছে। গত ২২ মার্চ অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে ধানী সাফার সাফা ডিগ্রী কলেজ ভোট কেন্দ্রে সন্ধার পরে নৌকা মার্কায় সীল মারা বাতিলকৃত ব্যালট পেপার বৈধ করার দাবিকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিজিবি-পুলিশের গুলিতে নিহতদের স্বজনদের আহাজারি যেন থামছে না।
নিহতদের মধ্যে সোলায়মান, বেলাল ও সোহেল এই ৩ জনের বাড়ি একই ইউনিয়নের উদয়তার বুড়িরচর গ্রামে। বাকী ২ জন অটো ড্রাইভার কামাল মৃধা ও শ্রমিক শাহাদাৎ হোসেনের বাড়ি পার্শ্ববর্তী (ভান্ডারিয়া উপজেলা) হরিণপালা গ্রামে। বুড়িরচর গ্রামে মাত্র ২শ’ গজের মধ্যে সোলায়মান, বেলাল ও সোহেলের কবর হওয়ায় শোক যেন সকলকে তাড়িয়ে ফিরছে। নিহত সোলায়মান ওই গ্রামের আনু তালুকদার এবং রহিমা বেগমের জেষ্ঠ সন্তান। খুলনা হাজী মহসিন কলেজ থেকে সদ্য অনার্স করা সোলায়মানের বেসিক ব্যাংকে চাকরি হয়েছিল। ব্যাংকের চাকরিতে তার আগামী এপ্রিল মাসের ২০ তারিখে যোগদান করার কথা ছিল। তার আর ব্যাংকের চাকরিতে যোগদান করা হলোনা। দিন মজুর বেলালের বাকরুদ্ধ স্ত্রী সীমা আকতারের (২০) মুখে আবার কবে কথা ফুটবে কেউ বলতে পারেনা। ২২ তারিখ একমাত্র উপার্জনক্ষম স্বামীর নিথর দেহ দেখে অসুস্থ হয়ে মুখের কথা যেন শেষ হয়ে গেছে সীমার। অবুজ ২টি শিশু শিফাত ও জুনায়েদ চির বঞ্চিত হলো বাবার আদর থেকে। সোহেল মাতুব্বরের বাড়িতেও এভাবেই চলছে শোকের মাতম। আমাদের দেশের কুটিল রাজনীতিবীদদের স্বার্থের রাজনীতির বলি হয়ে না ফেরার দেশে চলে গেছে সোলায়মান, বেলাল ও সোহেলরা। বুড়িরচর গ্রামের সাধারণ মানুষের দাবী যারা চলে গেছে তাদের তারা আর ফিরে পাবেননা, তারা চান ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিচার।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন