গাজীপুর জেলা সংবাদদাতা : গাজীপুরে সড়ক পরিদর্শনে এসে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, আজকে বেগম জিয়ার অনুপস্থিতিতে কাকে দায়িত্ব দেয়া হলো? যিনি দুর্নীতি করে অপরাধী হিসেবে দন্ডিত। মানি লন্ডারিংয়ের জন্য দন্ডিত।
সাজার পর চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারাগারে নেওয়ায় দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এখন সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যানই ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। রায় ঘোষণার পর বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম খান বলেন, দলের গঠনতন্ত্রে আছে, চেয়ারপারসন কোনো কারণে সাময়িকভাবে অনুপস্থিত থাকলে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করিবেন। এটাই গঠনতন্ত্রের বিধান।
জিয়া এতিমখানা দুর্নীতির মামলায় বৃহস্পতিবার সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পাঁচ বছর কারাদন্ড হয়। তার বড় ছেলে তারেক রহমানসহ পাঁচ আসামি ১০ বছর কারাদন্ড হয়। এছাড়া প্রত্যেকের আর্থিক দন্ডও হয়। এর আগে মানি লন্ডারিংয়ের মামলায় তারেক রহমানের সাত বছর কারাদন্ড দেয় হাই কোর্ট।
ওবায়দুল কদের বলেন, বিএনপির গঠণতন্ত্রে আছে- দন্ডিত ব্যক্তি বিএনপির নেতা হতে পারবে না, এমপি হতে পারবে না। কুখ্যাত ব্যক্তি বিএনপির নেতা হতে পারবে না, এমপি হতে পারবে না। এ রায়ের আগে বিএনপি তড়িঘড়ি করে রাতের আঁধারে কলমের এক খোঁচায় তাদের সংবিধানের ৭ ধারা বিসর্জন দিল, নির্বাসনে পাঠাল।
তিনি বলেন, এর দ্বারা এটাই প্রমাণ করে যে, বিএনপির দুর্নীতিপরায়ন হতে আর কোনো অসুবিধে নেই। যেকোনো দুর্নীতিবাজ বিএনপির নেতা হতে পারে। তারা ৭ ধারা তুলে দিয়ে সেই স্বীকৃতি দিয়েছে। তার বড় প্রমাণ সর্বশেষ তারেক রহমানকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন করা। খালেদা জিয়ার রায়ের মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে বিএনপির নেতাদের এমন দাবি নাকচ করেছেন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বেগম জিয়ার মামলা ও রায়ের মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক সঙ্কট ঘনীভূত হলো না, বরং বিএনপির অভ্যন্তরীণ সংকট ঘনীভূত হলো। সেটার লক্ষণ আমরা টের পাচ্ছি।
রায়ের পর সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, এই রায় দেশের যে বর্তমান রাজনৈতিক সঙ্কট, তা আরও ঘনীভুত করবে এবং দেশের মানুষের এই বিচার ব্যবস্থার উপর আস্থা চলে যাবে।
খালেদা জিয়ার এই মামলা ও রায়ের ব্যাপারে এ সরকারের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই উল্লেখ করে কাদের বলেন, এ সরকারের আমলে মামলটি হয়নি। মামলাটি হয়েছে তত্ত¡াবধায়ক সরকারের আমলে। যখন মাইনাস টু ফর্মুলা কার্যকর করার নীল নকশা হয়েছিল। তড়িঘড়ি করে মামলার রায় দেওয়া হয়েছে বলে বিএনপি নেতাদের মন্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ১০ বছর ধরে একটা মামলা চলে এসেছে। বেগম জিয়া বারবার কোর্টে হাজিরা থাকার পরও হাজিরা দেননি। এর জন্য বেগম জিয়া এবং তার আইনজীবীরাই দায়ী। বেগম জিয়া এক সময় হাজিরা দেননি। তিনি মাসের পর মাস মামলার কার্যক্রমকে ব্যাহত করেছেন। খালেদা জিয়া ঠিকমতো হাজিরা দিলে অনেক আগে এ মামলার রায় হয়ে যেত বলে মনে করেন সেতুমন্ত্রী। সকালে গাজীপুরের ভোগড়া বাইপাস মোড়ে বিআরটি ও গাজীপুর-এলেঙ্গা সড়কে চারলেন কাজের পরিদর্শন করতে যান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে গাজীপুরের এসপি মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, সওজ-এর অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আব্দুস সবুর, সওজ-এর ঢাকা সার্কেলর তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী মো. সবুজ উদ্দিন খান, বিআরটির প্রকল্প পরিচালক মো. সানাউল হক, গাজীপুর মহানগর আওযামী লীগ সভাপতি আজমত উল্লাহ খান, সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন