সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সম্পাদকীয়

সউদী-ভারত সম্পর্ক ও ভ‚রাজনীতির পরিবর্তন

| প্রকাশের সময় : ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

হোসেন মাহমুদ : হালের ভ‚রাজনীতিতে নাটকীয় সব পরির্তন লক্ষ করা যাচ্ছে। এ সবের কোনো কোনোটি ব্যাপক কৌত‚হল সৃষ্টি করেছে, কোনো কোনোটি অনেকের চিন্তার গোড়ায় ধোঁয়া দেয়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। এক্ষেত্রে সর্বশেষ খবর হচ্ছে, ভারত-সউদী আরব ক্রমবর্ধমান ঘনিষ্ঠতা যা পাকিস্তানের হৃদস্পন্দনকে দ্রæততর করে তুলছে, ভ্রƒ কুঁচকে উঠছে চীনের।
বেশি আগে নয়, দ্বিতীয় বিশ^যুদ্ধোত্তর সময় থেকে যদি আমরা বিশ^ পরিস্থিতি লক্ষ করি, দেখতে পাব, বিশ^রাজনীতিতে বিস্ময়কর রকম পরিবর্তন সংঘটিত হয়েছে। যেমন প্রধান বিশ^শক্তির আসন থেকে স্থানচ্যুতি ঘটেছে ব্রিটেনের, সে স্থান দখল করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বিশে^র চালকের আসনে যুক্তরাষ্ট্রের পাশে প্রায় সমান্তরাল পরাক্রমে উঠে এসেছে সোভিয়েত ইউনিয়ন। বিশে^র বড় অংশই দু’টি বলয়ে বিভক্ত হয়ে পড়েছে, প্রবল হয়েছে ¯œায়ু যুদ্ধ। এরপর মধ্য ষাটের দশকে পারমাণবিক শক্তির কাতারে নীরব অভ্যুদয় ঘটেছে অনেকটাই অপরিচিত দেশ চীনের। সেদিন চীনকে দেখা হয়েছে সম্ভাব্য গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হিসেবে। এর পরবর্তী বিস্ময়কর ঘটনা হচ্ছে সোভিয়েত ইউনিয়নের ভাঙ্গন ও বিশ^ থেকে সমাজতন্ত্রের কার্যত বিলুপ্তি। এদিকে বিশে^ সন্ত্রাসবাদের উত্থান ও তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর সর্বাত্মক লড়াই বিশ^কে এক নতুন পরিস্থিতির সম্মুখীন করেছে। যখন সন্ত্রাসবাদের উল্লম্ফন দৃশ্যমান তখন বিশে^ প্রাধান্য বিস্তারের ক্ষেত্রে সূচনা হয়েছে এক নতুন লড়াইয়ের। এ ভ‚রাজনীতির লড়াই ভীষণ চমকপ্রদ, যা বিশে^ এনেছে সম্পূর্ণ নতুন মাত্রা। এখন বিশে^র বিপুল অংশ জুড়ে পরিলক্ষিত হতে যাচ্ছে তার পরিবর্তনের প্রভাব।
ভ‚রাজনীতির ক্ষেত্রে এ লড়াইয়ের সূচনা হয়েছে মূলত চীনকে ঘিরে। বিশ শতকের মধ্যকালোত্তর সময়ে পারমাণবিক ক্ষমতা অর্জন চীনকে হঠাৎ করেই বিশে^ উল্লেখযোগ্য এক শক্তির কাতারে নিয়ে আসে। শতাব্দীর পর শতাব্দী আফিমসেবী চীনের কেটে গেছে ঘুমিয়ে। ব্রিটিশরা তো বটেই, এমনকি জাপানের মত জনসংখ্যা-সম্পদে তুলনামূলকভাবে ন্যূন দেশও বিশাল চীনকে আংশিকভাবে লাঞ্ছনা ও নির্যাতনের অগৌরবে মুড়ে দিয়েছে। যদিও উনিশ শতকেই পাশ্চাত্যের কাছে স্পষ্ট হয়ে যায় যে, চীন এক ঘুমন্ত মহাশক্তি, কিন্তু মাও সে তুং চীনকে আধুনিক বিশে^র দ্বারে উপস্থাপনের আগে তাকে উপযুক্ত মর্যাদা দিতে সর্বত্রই অনাগ্রহ দেখা গেছে। যাহোক, সম্ভাব্য বিশ^শক্তি হিসেবে চীনকে মূল্যায়িত করার পর যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘের স্থায়ী সদস্য হিসেবে তার প্রাপ্য আসনটি লাভে সহায়তা করে। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি হুঁশিয়ারি সংকেত ধ্বনিত করে একুশ শতকের প্রথম দশকে বিশে^র দ্বিতীয় বৃহৎ অর্থনীতি হিসেবে চীনের উল্লম্ফন ঘটে। তাই রাশিয়া নয়, চীনকে স্থাপন করা হয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান প্রতিদ্ব›দ্বীর স্থানে। তখন পর্যন্ত একটি আপাত শান্ত বিশ^ পরিস্থিতি বিদ্যমান ছিল। কিন্তু ২০১৫-১৬ সালে দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের ক্রমবর্ধমান উপস্থিতির প্রয়াস যুক্তরাষ্ট্রের টনক নড়ায়। এ পর্যায়ে বিশে^ প্রাধান্য বিস্তার ও সামরিক শ্রেষ্ঠত্ব সপ্রমাণের বিষয়টি তার কাছে সর্বাধিক গুরুত্বের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। এদিক দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের প্রাধান্য বিস্তারের প্রয়াস জাপান, ভিয়েতনাম ও ফিলিপাইনকে উদ্বিগ্ন করে তোলে। বিশেষ করে জাপান তার সাবেক শত্রæ চীনের এ প্রয়াসকে ভবিষ্যত পেশি প্রদর্শনের আগাম ইঙ্গিত হিসেবে গণ্য করে। এ অবস্থায় শুরু হয় ভূরাজনীতিতে নতুন চাঞ্চল্য। চীনকে নিজের শ্রেষ্ঠত্বের কথা জানাতে ও বন্ধু জাপানকে নতুন করে পাশে টানতে ও তাকে আশ^স্ত করতে এগিয়ে আসে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিনীরা বিশে^র বাণিজ্যিক নৌপথের স্বাধীনতা বহাল রাখার সর্বজনীন সত্য সমুন্নত রাখার পতাকা উড়িয়ে দক্ষিণ চীন সাগর এলাকায় কয়েক দফা যুদ্ধজাহাজ পাঠায়। এদিকে এ ঘোলাটে পরিস্থিতির সুযোগ পুরোমাত্রায় নেয় ভারত। আগামী দিনে চীনের মোকাবেলায় শক্তি প্রদর্শনের পরিকল্পনা থেকে নতুন মিত্র সন্ধান করছিল মার্কিনীরা। ভারতের দিকে তাদের দৃষ্টি পড়েছিল আগেই। এ অবস্থায় প্রবল হয়ে উঠতে থাকা প্রতিবেশী চীনকে ঠেকাতে ও বিশে^র শক্তি বলয়ে ভারতকে প্রতিষ্ঠিত করার মোদি সরকারের একান্ত আগ্রহ ভারত-যুক্তরাষ্ট্র মৈত্রী সম্পর্ককে নতুন মাত্রায় উন্নীত করে। এখন ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র ঘনিষ্ঠতম বন্ধু। চীনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের পাশে দাঁড়াতে ইউরোপীয় মিত্ররা অনুৎসাহী হলেও এ ক্ষেত্রে ভারতের উৎসাহের অভাব নেই। আর একদিকে পাকিস্তান আরেকদিকে চীনকে ঠেকানোর মার্কিন প্রয়াসে যোগ দিয়ে ভারত ইতোমধ্যে নিজেকে বিশে^র জঙ্গি শক্তির তালিকায় স্থাপিত করেছে।
বিশ^ শক্তিবলয়ে চীন আজ যুক্তরাষ্ট্র-ভারতের প্রধান শত্রæ। ভারত যুক্তরাষ্ট্রের পাশে অবস্থান নিয়ে, জাপানের সাথে সম্পর্ক জোরদার করে, ভিয়েতনামে অস্ত্র বিক্রি করে চীনের বিরুদ্ধে নিজ প্রভাব বলয় বৃদ্ধি করেছে, করছে। এ অঞ্চলে ভারতের বিপরীতে চীন শ্রীলংকায় নিজের প্রভাব বাড়িয়েছে, নেপালের সাথে তার সম্পর্ক জোরদার করে চলেছে, মিয়ানমারের সাথে ঘনিষ্ঠতা আরো গভীর করছে। অন্যদিকে ভারত-যুক্তরাষ্ট্র শক্তির ক্রমবর্ধমান প্রীতি ও নৈকট্য উদ্বিগ্ন পাকিস্তানকে আরো বেশি করে ঠেলে দিচ্ছে চীনের কোলে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ তুলে পাকিস্তানকে পরিত্যাগ করার চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। ওয়াকিবহালরা জানেন, ১৯৪৭ পরবর্র্তী কালে ভারতের শ্রেষ্ঠতম কূটনৈতিক ও সামরিক সাফল্য হচ্ছে পাকিস্তানকে টুকরো করতে পারা। আর দ্বিতীয় সাফল্য হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা। তার তৃতীয় সাফল্যও এখন দৃশ্যমানÑ তা হচ্ছে আফগানিস্তান-পাকিস্তানের মধ্যে বৈরিতার স্থায়ী দেয়াল তোলা। আফগানিস্তান এখন ভারতের হাতের মুঠোয়। ভারতের সমর্থনে আফগানিস্তান এখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রচন্ডভাবে সোচ্চার। অনেকেই নিশ্চিত যে ভারতের পরের তীর হচ্ছে বেলুচিস্তান।
এখানেই শেষ নয়। ভারত সম্প্রতি হাত বাড়িয়েছে পাকিস্তানের অন্যতম প্রধান আর্থিক উৎসের দিকে। সউদী আরবের সাথে পাকিস্তানের বন্ধন দীর্ঘদিনের এবং দু’দেশের মধ্যে রয়েছে ঘনিষ্ঠ সামরিক মৈত্রী। পাকিস্তানি সৈন্যদের কয়েকটি কন্টিনজেন্ট সেখানে মোতায়েন রয়েছে বহু বছর ধরেই। বলা হয়, পাকিস্তানের পরমাণু সক্ষমতা লাভে আর্থিক যোগানের সিংহভাগই যুগিয়েছে সউদী আরব একটি ‘ইসলামী বোমা’র আশায়। পাকিস্তানের সাথে ধর্মীয় সম্পর্ক থাকার কারণে সউদী আরবসহ গোটা মধ্যপ্রাচ্যে ভারত বহুকাল প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি। কিন্তু মোদির কূটনীতি ২০১৬ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছ থেকে ভারতকে সাড়ে ৭শ’ কোটি ডলার ঋণ এনে দিয়েছে। তার চেয়ে বড় কথা, কাশ্মীরী মুসলমান নিগ্রহ ও গুজরাটে মুসলিম হত্যাকান্ডের কথা বেমালুম ভুলে গিয়ে বিশ^ মুসলমানের পুণ্যভূমি ও প্রাণকেন্দ্র সউদী আরবের বাদশাহ সালমান মুসলমানদের রক্তে হাত রাঙানো মোদিকে কয়েক মাস আগে লালগালিচা সংবর্ধনা প্রদান করেছেন। সর্বশেষ জানা গেছে, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ এ ফেব্রæয়ারিতে সউদী আরব সফরে যাচ্ছেন, আর সউদী বাদশাহ এ বছরের শেষদিকে ভারত সফরে আসবেন। নয়া দিল্লীতে নতুন সউদী দূতাবাস ভবন নির্মাণ সম্পন্ন হওয়ার পর তা উদ্বোধন করবেন তিনি। বলা দরকার, ভারত ইতোমধ্যে ইসরাইলের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। তা এতটাই ঘনিষ্ঠ যে ইসরাইল ভারতের তৃতীয় বৃহৎ অস্ত্র সরবরাহকারী দেশে পরিণত হয়েছে। অন্যদিকে ভারতীয় বিশেষ বাহিনীকে সামরিক প্রশিক্ষণও দিচ্ছে তারা।
পাকিস্তান ভারত-সউদী সম্পর্কের নতুন মাত্রা বিন্যাসের প্রতি তীক্ষè নজর রাখছে। কয়েক দশক ধরে পাকিস্তানের সাথে ঘনিষ্ঠতা ফিকে হয়ে আসার অর্থ সউদী আরবের পাকিস্তান নীতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন ঘটতে চলেছে। এ পরিবর্তন অচিরেই ভারত-সউদী সামরিক সম্পর্কে রূপ নিতে পারে। বিশ্লেষকদের ধারণা, রিয়াদ-নয়াদিল্লী সম্পর্ক বহুমুখী সম্পর্কে রূপ নিতে চলেছেÑ আসলে যা হতে চলেছে কৌশলগত সম্পর্ক। সেক্ষেত্রে পাকিস্তানে সউদী অর্থ প্রবাহ গতি হারাবে। ফলে ব্যর্থ রাষ্ট্রের অসম্মান থেকে দেশটির উত্তরণ প্রয়াস আরো ব্যাহত হবে। এক্ষেত্রে সউদী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ভূমিকা সবিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। তিনি সউদী কর্মকর্তাদের বলেছেন, তিনি ভারতের সাথে কৌশলগত অংশীদারিত্বকে অনেক উচ্চপর্যায়ে নিয়ে যেতে চান। রিয়াদ-নয়াদিল্লী এ সম্পর্কের উল্লম্ফনকে আকস্মিক মনে করার কারণ নেই। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, ২০১৬ সালে কাশ্মীরের উরিতে একটি ভারতীয় সামরিক ঘাঁটিতে সন্ত্রাসী হামলার কঠোর নিন্দা জানিয়েছিল সউদী আরব যা পাকিস্তানের কাছে একেবারে অপ্রত্যাশিত ছিল।
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের কারো কারো অভিমত, ভারত-সউদী ক্রমবর্ধমান সখ্য যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি বার্তা। যুক্তরাষ্ট্র, ইরান, রাশিয়া, ইসরাইল ও মুসলিম বিশে^র সাথে সতর্কতার সাথে ভারসাম্যপূর্ণ নীতি অনুসরণের পথ নিয়েছে ভারত। একই সাথে সে পরস্পর চরম প্রতিদ্ব›দ্বী সউদী আরব ও ইরান এবং ইরানের চরম শত্রæ ইসরাইল এ তিনটি দেশের সাথেই সফলভাবে সম্পর্ক ক্রমশ ঘনিষ্ঠ করে চলেছে। এর অর্থ নয়াদিল্লী স্বাধীন পররাষ্ট্র নীতি অনুসরণে দৃঢ়সংকল্প। সউদী আরব হয়ত মনে করছে, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে শক্তি ও প্রভাব বিস্তারের দিক দিয়ে ভারত যত দ্রæত অগ্রসর হচ্ছে তাতে অচিরেই সে যুক্তরাষ্ট্রের কাছাকাছি পর্যায়ে উপনীত হবে। সেক্ষেত্রে ভারতকে টপকে কোনো কিছু করা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য সহজ হবে না। এ অবস্থায় ভারতের সাথে তার মিত্রতা কাজ দেবে। চীনের জন্য ভারত-সউদী মৈত্রী যারপর নাই উদ্বেগজনক বিষয়। এটি তার ঘনিষ্ঠ মিত্র পাকিস্তানের জন্য অস্থিরতা সৃষ্টি করবেÑ সেটি একটি বিষয়। কিন্তু আসল বিষয় হচ্ছে, ১৯৯৯ সাল থেকে রিয়াদের সাথে স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী সউদী তেলক্ষেত্রে চীন বিপুল পরিমাণে বিনিয়োগ করেছে। এখন ভারত সেখানে তার প্রবল প্রতিদ্ব›দ্বী হতে চলেছে। ভারত কোনো ক্ষেত্রেই চীনকে সুবিধাজনক অবস্থানে দন্ডায়মান দেখতে রাজি নয়। চীনের তা অজানা নয়।
সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন ও বর্তমান রাশিয়ার দীর্ঘকালের মিত্র ভারত আজ যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র। ভারতের এই পরিবর্তিত ভ‚মিকা নেপাল, শ্রীলংকা ও পাকিস্তানকে চীনের সাহায্য গ্রহীতা বন্ধু করতে পেরেছে। ভারত সে তুলনায় বেশি এগোতে না পারলেও আফগানিস্তানকে মিত্র করতে পেরেছে ও তাকে নিয়ে ইরানের সাথে চাবাহার বন্দর নির্মাণে অগ্রসর হয়েছে যা অদূর ভবিষ্যতে স্থলপথে মধ্য এশিয়ার দেশগুলোতে পৌঁছতে তার চাবিকাঠি হিসেবে কাজ করতে পারে। আর তা করতে পারলে ভ‚রাজনীতিতে নতুন পরিবর্তন সূচিত হবে।
দক্ষিণ এশিয়া পরিমন্ডলে ভ‚রাজনীতির এই তরঙ্গভঙ্গে অবস্থানগত কারণে বাংলাদেশের স্থান যে গুরুত্বপূর্ণ তা বলার অপেক্ষা রাখে না। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে বিভিন্ন সময় সামরিক চুক্তির আওতায় আনতে চেয়েছে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে তা বেশিদূর এগোতে পারেনি। সে তুলনায় ভারতের সাথে বাংলাদেশের সামরিক সহযোগিতা যে কোনো সময়ের চেয়ে অনেক ব্যাপক। চীনের সাথেও বাংলাদেশের সামরিক সহযোগিতাও যথেষ্ট গভীর। বাংলাদেশ সবার সাথে একটি ভারসাম্যমূলক সম্পর্ক বজায় রেখে চলছে।
ভারত-সউদী আরব স¤পর্কের ক্রমাগত ঘনিষ্ঠতার পরিপ্রেক্ষিতে উল্টোপিঠের চিত্রটি মুছে যাচ্ছে। বাবরি মসজিদ ধ্বংস, গুজরাট দাঙ্গায় মুসলিম নিধন, মুসলমানদের গরু জবাই বন্ধের মত কালো দিকগুলো উপেক্ষার চাদরে ঢেকে ফেলা হচ্ছে। ক্রমেই স্পষ্ট হচ্ছে যে সউদী শাহীতন্ত্র এখন আর ইসলাম বা মুসলিম স্বার্থ নিয়ে আগ্রহী নয়Ñ যে কোনো মূল্যে তাদের শাহীতন্ত্র টিকিয়ে রাখতে তারা বেপরোয়া। তাই মসজিদ ধ্বংস ও মুসলিম হত্যাকারী আর ফিলিস্তিনের মুসলিম রক্তপিপাসু ইহুদির সাথে হাত মিলাতে তাদের কোনো দ্বিধা নেই। এতদিন ইসলামের পবিত্র স্থানের হেফাজতকারীদের রক্ষক ছিল খ্রিস্টান যুক্তরাষ্ট্র, আগামীতে হয়ত সে ভ‚মিকা নিতে চলেছে হিন্দু ভারতের হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার ও ইহুদি ইসরাইল। হায়রে সউদী আরব, হায়রে মুসলিম বিশ^!
লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (2)
বাবুল ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ২:৫৮ এএম says : 0
সময়ের সাথে সাথে অনেক কিছু বদলে যায়
Total Reply(0)
Mir D Khan ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ৪:৩৫ এএম says : 0
Saudi Monarchy is under the control of Zionist Israel.India-Israel does have defense pact.So Saudi will abide by the Boss Israel's order and India is ally.If USA can discard Pakistan why not Saudi??.Pakistan needs to Iran Turkey and Pakistan pact revive and rescue Mecca and Medina from the grip of Zionism.
Total Reply(0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন