মহসিন রাজু, বগুড়া ব্যুরো ঃ ৮ ফেব্রæয়ারি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কারাদÐের রায় ঘোষণা ও তাকে কারাগারে পাঠানোকে ঘিরে বগুড়ায় যে ধরনের প্রতিক্রিয়ার আশঙ্কায় ছিল বাস্তবে সেরকম কিছু ঘটেনি , তবে রাজনৈতিক দল হিসেবে বগুড়া বিএনপিতে এক ধরনের চাঙ্গাভাবের সৃষ্টি হয়েছে বলেই ঘটনা প্রবাহে লক্ষ্যণীয় । বেগম খালেদা জিয়ার রায়কে ঘিরে বগুড়ায় প্রশাসন বেশ সতর্ক ছিল । কেননা কারাবন্দী জামায়াত নেতা মাওঃ দেলওয়ার হোসাইন সাঈদীকে রাতের আকাশের চাঁদে দেখা যাচ্ছে মর্মে গুজব ছড়িয়ে বগুড়ায় যে মাত্রায় তাÐব চালানো হয় সেটা হিসেবে রেখেছিল প্রশাসন । তাই মোটামুটি ফেব্রæয়ারীর শুরু থেকেই পুলিশ শুরু করে গ্রেফতার অভিযান। বগুড়ার সোনাতলা উপজেলা চেয়ারম্যান জাকির , ধুনট উপজেলা চেয়ারম্যান মামুন , নন্দীগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যান মাওঃ নুরুল ইসলামের বাসায় দফায় দফায় চালানো হয় অভিযান । বিএনপি সংশ্লিষ্ট সূত্র ইনকিলাবকে জানায় , বিএনপি ও জামায়াত সমর্থিত প্রত্যেক উপজেলা চেয়ারম্যানতো বটেই এমনকি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও সদস্যদের বাড়িতে বাড়িতেও চালানো হয়েছে পুলিশী অভিযান ।
বগুড়া জেলা বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক এ্যাডভোকেট, আব্দুল বাছেদ তথ্য দিয়ে জানিয়েছেন, এবারের পুলিশী অভিযানে ২ জন ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৭১ জন নেতা কর্মীকে পুলিশ গ্রেফতার করে তাদের বিরুদ্ধে নতুন করে ৩-৪টি করে মামলা দিয়ে পাঠিয়েছেন জেল হাজতে। বিএনপির এই ৭১ জন নেতা কর্মী ছাড়াও জামায়াতেরও বেশ কয়েকজন নেতা কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ । পুলিশের হয়রানীর শিকার ভুক্তভোগী একাধিক ব্যক্তির অভিযোগ গ্রেফতারের পর রাস্তাতেই অনেককে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ, এবং এই ছাড়ার কাজটি করা হয়েছে টাকার বিনিময়ে ।
বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি ভিপি সাইফুল ইসলাম বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়াকে কারাদÐাদেশ দেয়ার অনেক আগে থেকেই বগুড়ায় পুলিশ এমনভাবে রণসাজে সজ্জিত হয় এবং নেতা কর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে যথেচ্ছা অভিযান চালিয়ে তাদের মনোবল ভেঙ্গে দেওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে । কিন্তু তারপরও বগুড়ায় প্রত্যেকটি কেন্দ্রীয় প্রোগ্রাম সফলভাবে পালিত হয়েছে । বিএনপি কার্যালয়ে প্রবেশের প্রত্যেকটি পয়েন্টে এবং অলিগলিতেও শক্ত ব্যারিকেড দিয়ে লোক আটকাতে পারেনি তারা । তবে তারা প্রত্যেকটি কর্মসুচি পালন করেছেন শান্তিপুর্ণ ভাবে ।
বগুড়া জেলা বিএনপির উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ শোকরানা বলেন , অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে জনগনের মধ্যে বিএনপির জনপ্রিয়তা আগের চেয়ে বেড়েছে বগুড়ায় । কেননা দেখো যাচ্ছে বিএনপির কর্মসূচিগুলোতে এখন সাধারণ মানুষও যোগ দিচ্ছে ।
বগুড়া ফল ব্যবসায়ী সমিতি ও সংযুক্ত শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মাহমুদ শরীফ মিঠু বগুড়ার সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি দৃষ্টে বলেছেন, বগুড়া এমনিতেই বিএনপির ঘাঁটি ছিল, সেই ঘাঁটিতে এখন বেগম খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তা আরো বৃদ্ধি পাওয়ায় বগুড়ায় প্রতিদ্বন্দি রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীদের কাজ করা কঠিন হয়ে পড়বে ।
বেগম খালেদা জিয়ার কারাদÐাদেশের প্রতিবাদে ১৪ ফেব্রæয়ারী বগুড়া জেলা বিএনপির অফিসের সামনে কঠোর পুলিশী ব্যারিকেডের মধ্য্ইে ভীতি উপেক্ষা করে দলের নেতা কর্মীরা ছাড়াও যে ভাবে বিভিন্ন পেশাজীবী ও সাধারণ মানুষের ঢল নামে বগুড়ায় বেশ তাৎপর্যপুর্ণ বলে মনে করেন স্থানীয় পর্যবেক্ষকরা ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন