মোঃ ওমর ফারুক, ফেনী থেকে : সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, খালেদা জিয়া ছাড়াও বিএনপি আগামী নির্বাচনে অংশ নেবে এটাই আমার সুদৃঢ় বিশ্বাস। বিএনপি নেত্রী আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে কি পারবেনা সেটা সম্পূর্ণ আদালতের এখতিয়ার। সে ব্যাপারে সরকার বা আমার দলের কোন হস্তক্ষেপ নেই। খালেদা জিয়া যে মামলায় দÐিত হয়েছেন সে মামলা বিগত ১০ বছর পূর্বে ফখরুউদ্দিন সরকারের আমলে দায়ের করা হয়েছিল। দুদক বাদি হয়ে এ মামলা দায়ের করেছিল। আর এ সরকার ক্ষমতায় রয়েছে ৯ বছর। এ সরকার যদি তার মামলায় হস্তক্ষেপ করত তাহলে মামলাটি এত বছর চলল কিভাবে ? ১০ বছর পর যে মামলার রায় হয়েছে তাতে এ সরকারের কি দোষ ? তিনি ১৫০ বার মামলায় সময় নিয়েছেন। বিএনপি প্রচার করে এটা আ’লীগ সরকারের আমলের মামলা, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আগের কারাগারটি ঢাকার কেরাণীগঞ্জে স্থানান্তর করায় সেটি পরিত্যাক্ত রয়েছে। জেল সুপারের কার্যালয়ে তাকে রাখা হয়েছে। জেলখানা সুখের জায়গা নয়, কারাগারতো নির্জন হবে। তারপরও তিনি ডিভিশনাল বন্দি হিসেবে জেল কোড অনুযায়ী সব সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন। তার মর্যদার কথা চিন্তা করে তার সাথে একজন গৃহকর্মীও দেয়া হয়েছে। যার নজির পৃথীবীর কোন দেশে নেই। তিনি আরো বলেন, ৬৩২ পৃষ্ঠার রায়ের সার্টিফাইড কপি পেতে যুক্তিসংগত সময় লাগবে। যুক্তিসংগত সময়ের মধ্যে তারা সার্টিফাইড কপি পেয়ে যাবেন। এ ব্যাপারে সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ নেই। বিএনপির আন্দোলনের ব্যাপারে তিনি বলেন, বিএনপি শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে সম্পূর্ণ অক্ষম। বিএনপি ভেবেছিল খালেদা জিয়াকে আটকের পর দেশে উত্তাল তরঙ্গের মত আন্দোলন হবে। তাদের ডাকে কেউ সাড়া দেয়নি। তারা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করতে জানেনা। তাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূিচর ইতিহাস নেই। তারা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করতে অক্ষম। খালেদা জিয়ার মামলার রায়ের পূর্বে হাইকোটের সামনে পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে তারা আসামি ছিনিয়ে নিয়েছে। তারা লন্ডনে বাংলাদেশী দূতাবাসে হামলা-ভাঙচুর করেছে। শুধু তাই নয়, তার জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাঙচুর করে চরম অবমাননা করেছে। সে বিষয়টি এখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্রমন্ত্রণায় তদন্ত করছে। বিএনপি রাতের আঁধারে গঠনতন্ত্র সংশোধন করে ৭ ধারা বাদ দিয়ে দÐিত ব্যাক্তি তারেক রহমানকে দলের চেয়ারম্যান বানিয়েছেন।
বেগম খালেদা জিয়ার মামলার ব্যাপারে সরকার বিদেশী কোন চাপ অনুভব করছেননা বলে তিনি দাবি করেন।
উন্নয়নের ব্যাপারে তিনি বলেন এ সরকারের আমলে যে উন্নয়ন হয়েছে তা নজিরবিহীন। এ দেশের ইতিহাসে বিস্ময়কর উন্নয়ন হয়েছে। আগে মানুষ রাস্তা-ঘাটের উন্নয়নের দাবি নিয়ে আসতো, কিন্তু এখন আর সেটি হয়না। এখন শুধু মসজিদ-মাদ্রাসার উন্নয়নের দাবি নিয়ে আসে। নির্বাচনের আগে আর কোন উন্নয়ন কাজ বাকী থাকবেনা। এ সরকারের আমলে ১৬ হাজার মেঘাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন, পদ্মা সেতু নির্মাণ, ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কে ফোর লেন নির্মাণ, প্রত্যেক ইউনিয়নে ডিজিটাল সেবা কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। বাংলাদেশ বিশ্বের ৫টি উন্নত দেশের সাথে প্রতিযোগিতা করে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের সাথে যুদ্ধ করে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। পাকিস্তান শুধু পরমাণ অস্ত্র ছাড়া আমাদের সাথে আর কোন কিছুতেই এগিয়ে নেই। আর্থসামাজিক উন্নয়নে আমরা রোল মডেল। নির্মাণ কাজের মেয়াদের ৬ মাস পূর্বেই উন্নয়ন কাজ সমাপ্ত হয়েছে এক মাত্র বাংলাদেশেই এ নজির রয়েছে। একমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী নেতৃত্বে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু আজ দৃশ্যমান। আমাদের সরকারের আমলে বিচারহীনতার সংস্কৃতি গড়ে তুলতে দেয়নি। বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারায় আমাদের একাধিক এমপি, মন্ত্রী বা মেয়র আদালত কর্তৃক দÐিত হয়েছেন বা কারাগারে রয়েছেন। এসব সুশাসনের অংশ। এব্যাপারে ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মোটেও বিচলিত নয়। গতকাল শনিবার সকালে ফেনী সার্কিট হাউজে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এসময় ফেনী জেলা প্রশাসক মনোজকুমার রায়, পুলিশ সুপার এসএম জাহাঙ্গীর আলম সরকার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী মনিরুজ্জামান, জেলা আ’লীগের সভাপতি আবদুর রহমান বিকম, ছাগলনাইয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মেজবাউল হায়দার সোহেল, ফেনী পৌরসভার প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী সহ বিপুল সংক্ষক সংবাদ কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন