শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সম্পাদকীয়

চি ঠি প ত্র

| প্রকাশের সময় : ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

রূপালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সমীপে

নারায়নগঞ্জের ফতুল্লা থানাধীন বক্তাবলী পরগনাটি ধলেশ্বরী ও বুড়িগঙ্গা নদী দ্বারা বেষ্টিত হওয়ায় ঢাকা ও নারায়নগঞ্জ শহর থেকে তা একটি বিচ্ছিন্ন জনপদ। নারায়নগঞ্জের বক্তাবলী, আলীরটেক, গোগনগর ইউনিয়ন এবং ও মুন্সীগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান ইউনিয়নের অংশ বিশেষ নিয়ে এই পরগনা গঠিত। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে এই পরগনার গৌরবময় ইতিহাস রয়েছে। মূলত কৃষিপ্রধান এই এলাকার হাজার হাজার যুবক গত চারদশকে বৈদেশিক কর্মসংস্থানে যুক্ত হয়ে এলাকার জীবনমান উন্নয়নে বিশেষ ভ’মিকা রেখেছে। বর্তমানে কৃষি ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানের পাশাপাশি ইটভাটা, নৌযান নির্মানশিল্পসহ নানাবিধ অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে লিপ্ত রয়েছে বক্তাবলীর মানুষ। বক্তাবলী পরগনার আদর্শ গ্রাম ও মধ্যবর্তী স্থান হিসেবে কানাইনগর ছোবহানীয়া স্কুল এন্ড কলেজ ভবনে ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত রূপালী ব্যাংকের শাখাটি এ এলাকার হাজার হাজার পরিবারের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের মূল কেন্দ্র হয়ে দাড়িয়েছে। স্কুল-কলেজ, সরকারী হাসপাতাল, তহশিল অফিস, ইউনিয়ন কাউন্সিল, বাজার ও কমিউনিটি সেন্টারসহ নানাবিধ প্রতিষ্ঠান রয়েছে এই গ্রামে। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ব্যাংকের শাখাটি নারায়নগঞ্জের অন্যতম লাভজনক শাখা হিসেবে তার অবস্থান উত্তরোত্তর সমৃদ্ধ হয়ে চলেছে। তিনটি ইউনিয়নের মধ্যবর্তি স্থানে হওয়ায় ব্যাংকের শাখাটি থেকে বেশী সংখ্যক মানুষ ব্যাংকিং সেবা নিতে পারছে। গত তিরিশ বছরের বেশী সময়েও এই শাখায় কোন নিরাপত্তাহীনতা বা অপ্রীতিকর ঘটনার কোন নজির নেই। এলাকার ১০টি ছোটবড় বাজার ও দুই ইউনিয়নের ইটভাটার মালিকরা এই শাখাটিতে লেনদেন করছে। কিন্তু আমরা অত্যন্ত বিষ্ময়ের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, সাম্প্রতিক কয়েক বছর ধরে বক্তাবলী বাজারের কতিপয় ব্যবসায়ী ও ইটভাটার মালিক এই শাখাটিকে বক্তাবলী বাজারে সরিয়ে নেয়ার তৎপরতা চালাচ্ছে। বক্তাবলী বাজারে অন্য ব্যাংকের শাখা স্থাপিত হলে রূপালী ব্যাংকের শাখাটি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এমন বক্তব্য দিয়ে কতিপয় ব্যবসায়ীর দ্বারা প্ররোচিত হয়ে ব্যাংকের কিছু স্থানীয় কর্মকর্তা শাখাটি সরিয়ে নেয়ার পক্ষে অবস্থান নিচ্ছে বলে জানা যায়।
এহেন বাস্তবতায় আমরা এলাকার সাধারণ মানুষ দৃঢ়তার সাথে বলতে চাই, তিরিশ বছরের বেশী সময় ধরে লাভজনক এই ব্যাংকের শাখাটি বক্তাবলী বাজারে স্থানান্তরিত হলে প্রথমত হাজার হাজার গ্রাহকের জন্য ব্যাংকিং সেবা গ্রহণ অসম্ভব হয়ে পড়বে। দ্বিতীয়ত: এলাকার সর্ব উত্তরে এবং নদীর পাড়ে স্থানান্তরিত হওয়ার কারণে ব্যাংক শাখাটির ঝুঁকি বহুগুন বেড়ে যাবে। যেখানে বর্তমান সরকার কৃষক এবং শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ ব্যাংকিং সেবা চালু করেছে, সেখানে হাজার হাজার শিক্ষার্থী, কৃষক ও বিদেশে কর্মরত শ্রমিক পরিবারের ব্যাংকিং লেনদেনের গুরুত্ব অগ্রাহ্য করে কতিপয় ব্যবসায়ীর সুবিধার্থে ব্যাংক শাখাটি স্থানান্তর কোনভাবে যৌক্তিক ও বা গ্রহণযোগ্য হতে পারেনা। দেশের বৃহত্তম রূপালী ব্যাংকের কর্তৃপক্ষ ব্যাংকের মুনাফা ও নিরাপত্তার পাশাপাশি জনকল্যানের বিষয়টিও বিশেষ গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করবে। বক্তাবলীর সাধারণ মানুষের এটাই প্রত্যাশা। রূপালী ব্যাংক কানাইনগর ব্রাঞ্চটি অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার যে কোন প্রস্তাব ও সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে এ সব বিষয় বিবেচনা করার বিনীত অনুরোধ জানাই।
বক্তাবলী পরগনাবাসির পক্ষে-
মোহাম্মদ শরিফুদ্দিন
কানাইনগর, বক্তাবলী, নারায়ণগঞ্জ

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন