শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

টাঙ্গাইলে ভোট কেন্দ্র দখল ও কারচুপির অভিযোগে বিএনপি প্রার্থীর ভোট বর্জন

প্রকাশের সময় : ৩১ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

টাঙ্গাইল জেলা সংবাদদাতা : টাঙ্গাইলের গোপালপুরে কেন্দ্র দখল, ভোট কারচুপির অভিযোগ এনে নির্বাচন বর্জন করেছেন বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থী। বৃহস্পতিবার নির্বাচন শুরু হওয়ার আড়াই ঘণ্টা পর মির্জাপুর ইউনিয়নের বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান জসিম ভোট বর্জন করেন।
তিনি নির্বাচনী কেন্দ্র থেকে তার এজেন্টদের বের করে দিয়ে আ.লীগ প্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ব্যালট পেপারে সিল মারার অভিযোগ করেন। এ সময় তিনি অভিযোগ করেন, মির্জাপুর ইউনিয়নের ৭টি কেন্দ্রে আওয়ামীলীগের প্রার্থীর সমর্থকরা তার এজেন্টদের বের করে দিয়ে জোর পূর্বক ভোট দিচ্ছে সরকার দলীয় প্রার্থীর লোকজন। প্রশাসনের সামনে এমন ঘটনা ঘটলেও পুলিশ নির্বাক রয়েছেন। জোর পূর্বক ভোট ভোটারদের কেন্দ্রে থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগও করেন তিনি। এমন অনিয়মেন জন্যই তিনি ভোট বর্জন করেন বলেও তিনি জানান।
ওই কেন্দ্রের ধানের শীষ প্রতীকের এজেন্ট মালা আক্তার জানান, ভোট শুরু হওয়ার সাথে সাথেই প্রিজাইডিং অফিসার আব্দুল লতিফ আগেই ফলাফল সীটে স্বাক্ষর নিয়ে নেন। পরে আওয়ামী লীগের কর্মীরা ধানের শীষ প্রতীকের এজেন্টদের বের করে দিয়ে ইচ্ছেমত সীল মারতে থাকে। একই চিত্র দেখা গেছে দীঘলাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাছপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মোহনপুর পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়, বড়শিলা সরকারি প্রাথমিক, খানপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ মান্দিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ মান্দিয়া দাখিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে। ওই কেন্দ্রগুলোতেও এজেন্টদের বের করে দিয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হালিমুজ্জামানের নৌকা প্রতীকে সীল মারার মহোৎসব চলতে থাকে। এছাড়াও মোহনপুর পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে মনিসহ দুই জনকে ব্যাপক মারধর করে এবং বিএনপি সমর্থকদের কেন্দ্রে ঢুকতে বাঁধা দেয়া হয়।
এ ব্যাপারে, মির্জাপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিজাইটিং অফিসার আব্দুল লতিফ এমন অনিয়মের কথা স্বীকার করে বলেন, ভোটের ফলাফল ঘোষণার আগেই সকল পুলিং এজেন্টদের সহি নেওয়া হয়েছে। তাদেরও সহি নেওয়া হয়েছে। পরে তাদেরকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি বলেও তিনি জানান।
এদিকে ধোপাকান্দী ইউনিয়নের জোতগোপাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আব্দুর রহিমের নৌকা প্রতীকের পক্ষে জাল ভোট দেয়ার অভিযোগ এনেছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল হাই ও একই উপজেলার হাদিরা ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী নিক্সন।
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ২য় দফায় আজ বৃহস্পতিবার টাঙ্গাইলের ভূয়াপুর ও গোপালপুরের ১৩টি ইউনিয়ন পরিষদে ভোট গ্রহণ চলছে। সকাল ৮টা হতে শুরু হওয়া ভোটগ্রহন একটানা বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে। জেলার গোপালপুর ও ভুঞাপুর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে মোট ভোটার রয়েছে ২লাখ ৮১হাজার ৯শ’৮জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ১লাখ ৪১হাজার ৫শ’২৭জন এবং মহিলা ভোটার ১লাখ ৪০হাজার ৩শ’৮১জন। মোট ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ১শ’২২টি এবং ভোট কক্ষের সংখ্যা ৭শ’৫৩টি। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৫৩জন, সাধারণ সদস্য পদে ৪শ’৭জন এবং সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ১শ’২৩জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারমধ্যে গোপালপুর উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ২৭জন, সাধারণ সদস্য পদে ২শ’২৭জন এবং সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ৬৪জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বী¦তা করছেন। মোট ভোটার রয়েছেন, ১লাখ ৫৮হাজার ৮শ’৫৪জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৭৯হাজার ২শ’৮৫জন এবং মহিলা ভোটার ৭৯ হাজার ৫শ’৬৯জন। ৬৫টি ভোট কেন্দ্রের ৪শ’১০টি কক্ষে ৬৫জন প্রিজাইডিং অফিসার, ৪শ’১০জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার এবং ৮শ’২০জন পোলিং অফিসার দায়িত্ব পালন করছে।
অপরদিকে, ভুয়াপুর উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ২৬ জন, সাধারণ সদস্য পদে ১শ’৮০ জন এবং সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ৫৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মোট ভোটার রয়েছেন, ১ লাখ ২৩ হাজার ৫৪ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৬২ হাজার ২শ’৪২ জন এবং মহিলা ভোটার ৬০ হাজার ৮শ’১২ জন। ৫৭টি ভোট কেন্দ্রের ৩শ’৪৩টি কক্ষে ৫৭ জন প্রিজাইডিং অফিসার, ৩শ’৪৩ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার এবং ৬শ’৮৬জন পোলিং অফিসার দায়িত্ব পালন করছে।
২ উপজেলার প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে বিজিবি, পুলিশ, র‌্যাব, আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছে। এছাড়াও ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ষ্টাইকিং ফোর্স ও ভ্রাম্যমান আদালত টহলে রয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন